Dhaka মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন খালেদা জিয়া, গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন হলেও তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

বিএনপি প্রধান সুস্থ হয়ে উঠবেন এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে কোনো গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেছেন ডা. জাহিদ।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

জাহিদ হোসেন বলেন, চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন খালেদা জিয়া; অথবা বলা যায়, তিনি চিকিৎসা মেনটেইন করতে পারছেন। তবুও বিদেশে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি আছে কি না মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের পরামর্শ নেয়া হচ্ছে। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ ছাড়া বিদেশে নেয়ার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, আজ যুক্তরাজ্য থেকে তাঁকে (খালেদা জিয়া) দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ আসবেন। তাঁরা দেখবেন। দেখার পর তিনি যদি ট্রান্সফারেবল হন, যদি ট্রান্সফারের প্রয়োজন পড়ে, যদি মেডিকেল বোর্ড মনে করে, তখন তাঁকে যথাযথভাবে চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে।

যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কাতার, সৌদি আরব, পাকিস্তান ও ভারত ইতোমধ্যে চিকিৎসা সহায়তার হাত বাড়িয়েছে জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, “খালেদার জন্য দেশের বাইরে নেওয়ার জন্য যে কথাটি আমি পূর্বেও বলেছি, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা উনাকে দেখেছেন। আজকেও ইউকে থেকে উনাকে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ আসবেন এবং উনারা দেখবেন।

“দেখার পরবর্তীতে উনাকে যদি ট্রান্সফারেবল হয়, আমাদের যদি ট্রান্সফার করার প্রয়োজন পড়ে— মেডিকেল বোর্ড মনে করে, তখনই সেই যথাযথ সময়ে উনাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে।”

বিএনপি চেয়ারপারসনকে এ মুহূর্তে দেশের বাইরে নেওয়ার সুযোগ নেই বলেও জানান ডা. জাহিদ।

“আমাদের সকল প্রস্তুতি আছে; কিন্তু সর্বোচ্চটা মনে রাখতে হবে যে— রোগীর বর্তমান অবস্থা এবং সর্বোপরি মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শের বাইরে কোনো কিছু করার সুযোগ এই মুহূর্তে আমাদের নেই।”

অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, “আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণীতে ডাক্তাররা যে চিকিৎসা দিচ্ছেন, সেই চিকিৎসা উনি (বেগম খালেদা জিয়া) সেটি উনি গ্রহণ করতে পারছেন অথবা আমরা যদি বলি উনি মেনটেইন করছেন।

“আমরা এই সংকটময় মুহূর্তে আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে উনার সুস্থতার জন্য দোয়া চাই। এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যাতে দেশবাসীর দোয়া, সারা পৃথিবীর অনেক মানুষের উনার প্রতি ভালোবাসা এবং দোয়ার কারণে হয়তোবা উনি এই যাত্রায় সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আমরা আশা করি।”

গুজবে কান দেবেন না’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, “আমরা আপনাদের মাধ্যমে সবাইকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং সেই সাথে কোনো ধরনের গুজব ছড়ানো এবং গুজবে কান না দেওয়ার জন্য বিনীতভাবে পরিবারের পক্ষ থেকে, দলের পক্ষ থেকে আপনাদেরকে আমরা অনুরোধ করছি।

“আমাদের দল কীভাবে আপনাদেরকে ইনফরমেশন দেবে, সেটিও আমাদের দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত এ চিকিৎসক বলেন, “সম্মানিত সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা আপনারা ধৈর্য ধরুন, দীর্ঘ ছয়বছর যাবৎ আপনারা আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। ইনশাআল্লাহ আমরা এই যাত্রাতেও আপনাদের ভালোবাসা, আপনাদের সহযোগিতা এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ মেহেরবানিতে…আমরা আবারো আমাদের প্রাণপ্রিয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে আজকে দেশের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রতীক, সেটি আজকে প্রমাণিত; সেই লক্ষ্যেই আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই।”

তিনি বলেন, “আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করেছেন যে ধৈর্য ধারণ করার জন্য এবং উনি সার্বক্ষণিকভাবে বিরামহীনভাবে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল টিমের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।

“আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া চিকিৎসাকার্য সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। কোনো ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য আপনাদেরকে অনুরোধ করছি এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য সুস্থতার জন্য আপনাদের মাধ্যমে দেশ তথা সকল ধর্মের মানুষের প্রতি আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”

ডা. জাহিদ বলেন, “বিভিন্ন ধরনের গুজব, বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য বিভিন্ন জায়গায় দেখার পরিপ্রেক্ষিতে দলের পক্ষ থেকে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সার্বক্ষণিকভাবে উনার চিকিৎসার তদারকি করছেন।

“চিকিৎসার সমস্ত বিষয়ে উনি দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সাথে আমাদের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছেন।”

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ

জাহিদ বলেন, “দলের মহাসচিব এবং দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সারা দেশের মানুষের ন্যায় প্রধান উপদেষ্টা উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সার্বক্ষণিকভাবে উনার চিকিৎসার ব্যাপারে যথাযথ সহযোগিতা, এই হাসপাতাল হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স এবং সকল কর্তৃপক্ষ দিয়ে যাচ্ছেন এবং আমরা সবার প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।

“আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ যারা অর্থাৎ আমেরিকা বলেন, ইউকে বলেন, পিপলস রিপাবলিক অফ চায়না বলেন, কাতার বলেন, সৌদি আরাবিয়া বলেন, পাকিস্তান বলেন, ইন্ডিয়া বলেন, আমাদের অনেক সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধান এই চিকিৎসার ব্যাপারে তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।”

অধ্যাপক জাহিদ জানান, অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড বেগম জিয়ার চিকিৎসা সেবায় কাজ করছেন। এ মেডিকেল বোর্ড রয়েছেন—অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী, অধ্যাপক নুরুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক এ কিউ এম মহসিন, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক জিয়াউল হক, অধ্যাপক মাসুম কামাল, অধ্যাপক এ জেড এম সালেহ, অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাইফুল ইসলাম ও ডাক্তার জাফর ইকবাল। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক রফিকউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক জন হ্যামিল্টন, অধ্যাপক হামিদ রব, যুক্তরাজ্য থেকে অধ্যাপক জন প্যাট্রিক, অধ্যাপক জেনিফার ক্রস এবং পুত্রবধূ ডাক্তার জুবাইদা রহমান।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠান শেষে বাসায় ফেরার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। ২৩ নভেম্বর জরুরি ভিত্তিতে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের মতে, তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং সঙ্গে আরও কিছু জটিলতা রয়েছে।

গত কয়েক দিনে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউ–সমমানের হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়। পরে রোববার ভোরে সেখান থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠাতে চাইলে ব্যবস্থা নেবে সরকার : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন খালেদা জিয়া, গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ

প্রকাশের সময় : ০২:০০:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন হলেও তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

বিএনপি প্রধান সুস্থ হয়ে উঠবেন এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে কোনো গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেছেন ডা. জাহিদ।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

জাহিদ হোসেন বলেন, চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন খালেদা জিয়া; অথবা বলা যায়, তিনি চিকিৎসা মেনটেইন করতে পারছেন। তবুও বিদেশে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি আছে কি না মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের পরামর্শ নেয়া হচ্ছে। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ ছাড়া বিদেশে নেয়ার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, আজ যুক্তরাজ্য থেকে তাঁকে (খালেদা জিয়া) দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ আসবেন। তাঁরা দেখবেন। দেখার পর তিনি যদি ট্রান্সফারেবল হন, যদি ট্রান্সফারের প্রয়োজন পড়ে, যদি মেডিকেল বোর্ড মনে করে, তখন তাঁকে যথাযথভাবে চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে।

যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কাতার, সৌদি আরব, পাকিস্তান ও ভারত ইতোমধ্যে চিকিৎসা সহায়তার হাত বাড়িয়েছে জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, “খালেদার জন্য দেশের বাইরে নেওয়ার জন্য যে কথাটি আমি পূর্বেও বলেছি, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা উনাকে দেখেছেন। আজকেও ইউকে থেকে উনাকে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ আসবেন এবং উনারা দেখবেন।

“দেখার পরবর্তীতে উনাকে যদি ট্রান্সফারেবল হয়, আমাদের যদি ট্রান্সফার করার প্রয়োজন পড়ে— মেডিকেল বোর্ড মনে করে, তখনই সেই যথাযথ সময়ে উনাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে।”

বিএনপি চেয়ারপারসনকে এ মুহূর্তে দেশের বাইরে নেওয়ার সুযোগ নেই বলেও জানান ডা. জাহিদ।

“আমাদের সকল প্রস্তুতি আছে; কিন্তু সর্বোচ্চটা মনে রাখতে হবে যে— রোগীর বর্তমান অবস্থা এবং সর্বোপরি মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শের বাইরে কোনো কিছু করার সুযোগ এই মুহূর্তে আমাদের নেই।”

অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, “আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণীতে ডাক্তাররা যে চিকিৎসা দিচ্ছেন, সেই চিকিৎসা উনি (বেগম খালেদা জিয়া) সেটি উনি গ্রহণ করতে পারছেন অথবা আমরা যদি বলি উনি মেনটেইন করছেন।

“আমরা এই সংকটময় মুহূর্তে আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে উনার সুস্থতার জন্য দোয়া চাই। এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যাতে দেশবাসীর দোয়া, সারা পৃথিবীর অনেক মানুষের উনার প্রতি ভালোবাসা এবং দোয়ার কারণে হয়তোবা উনি এই যাত্রায় সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আমরা আশা করি।”

গুজবে কান দেবেন না’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, “আমরা আপনাদের মাধ্যমে সবাইকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং সেই সাথে কোনো ধরনের গুজব ছড়ানো এবং গুজবে কান না দেওয়ার জন্য বিনীতভাবে পরিবারের পক্ষ থেকে, দলের পক্ষ থেকে আপনাদেরকে আমরা অনুরোধ করছি।

“আমাদের দল কীভাবে আপনাদেরকে ইনফরমেশন দেবে, সেটিও আমাদের দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত এ চিকিৎসক বলেন, “সম্মানিত সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা আপনারা ধৈর্য ধরুন, দীর্ঘ ছয়বছর যাবৎ আপনারা আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। ইনশাআল্লাহ আমরা এই যাত্রাতেও আপনাদের ভালোবাসা, আপনাদের সহযোগিতা এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ মেহেরবানিতে…আমরা আবারো আমাদের প্রাণপ্রিয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে আজকে দেশের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রতীক, সেটি আজকে প্রমাণিত; সেই লক্ষ্যেই আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই।”

তিনি বলেন, “আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করেছেন যে ধৈর্য ধারণ করার জন্য এবং উনি সার্বক্ষণিকভাবে বিরামহীনভাবে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল টিমের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।

“আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া চিকিৎসাকার্য সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। কোনো ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য আপনাদেরকে অনুরোধ করছি এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য সুস্থতার জন্য আপনাদের মাধ্যমে দেশ তথা সকল ধর্মের মানুষের প্রতি আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”

ডা. জাহিদ বলেন, “বিভিন্ন ধরনের গুজব, বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য বিভিন্ন জায়গায় দেখার পরিপ্রেক্ষিতে দলের পক্ষ থেকে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সার্বক্ষণিকভাবে উনার চিকিৎসার তদারকি করছেন।

“চিকিৎসার সমস্ত বিষয়ে উনি দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সাথে আমাদের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছেন।”

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ

জাহিদ বলেন, “দলের মহাসচিব এবং দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সারা দেশের মানুষের ন্যায় প্রধান উপদেষ্টা উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সার্বক্ষণিকভাবে উনার চিকিৎসার ব্যাপারে যথাযথ সহযোগিতা, এই হাসপাতাল হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স এবং সকল কর্তৃপক্ষ দিয়ে যাচ্ছেন এবং আমরা সবার প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।

“আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ যারা অর্থাৎ আমেরিকা বলেন, ইউকে বলেন, পিপলস রিপাবলিক অফ চায়না বলেন, কাতার বলেন, সৌদি আরাবিয়া বলেন, পাকিস্তান বলেন, ইন্ডিয়া বলেন, আমাদের অনেক সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধান এই চিকিৎসার ব্যাপারে তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।”

অধ্যাপক জাহিদ জানান, অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড বেগম জিয়ার চিকিৎসা সেবায় কাজ করছেন। এ মেডিকেল বোর্ড রয়েছেন—অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী, অধ্যাপক নুরুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক এ কিউ এম মহসিন, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক জিয়াউল হক, অধ্যাপক মাসুম কামাল, অধ্যাপক এ জেড এম সালেহ, অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাইফুল ইসলাম ও ডাক্তার জাফর ইকবাল। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক রফিকউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক জন হ্যামিল্টন, অধ্যাপক হামিদ রব, যুক্তরাজ্য থেকে অধ্যাপক জন প্যাট্রিক, অধ্যাপক জেনিফার ক্রস এবং পুত্রবধূ ডাক্তার জুবাইদা রহমান।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠান শেষে বাসায় ফেরার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। ২৩ নভেম্বর জরুরি ভিত্তিতে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের মতে, তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং সঙ্গে আরও কিছু জটিলতা রয়েছে।

গত কয়েক দিনে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউ–সমমানের হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়। পরে রোববার ভোরে সেখান থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।