Dhaka বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় ব্যবসায়ীকে হত্যায় ২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, পাঁচজনের যাবজ্জীবন

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি :

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় এক ব্যবসায়ীকে কোপানোর পর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১২ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ সাবরিনা নার্গিস এক আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষে কৌঁসুলি (পিপি) মুমিনুল হক ভূঁইয়া।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়ারা হলেন- উপজেলার দেড়কোটা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া এবং একই গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে জুয়েল রানা ওরফে জুয়েল।

যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়ারা হলেন- দেড়কোটা গ্রামের ক্বারী ফজলুল হক, আজাদ রহমান, আবদুল কাদের, কবির আহমেদ এবং ফেলনা গ্রামের সাদ্দাম হোসেন। রায় ঘোষণার সময় কবির আহমেদ ছাড়া বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

পিপি মুমিনুল হক ভূঁইয়া বলেন, পূর্ব বিরোধের জেরে ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও তার সহযোগীরা স্থানীয় ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এতে বাধা দিলে আনোয়ারকে কুপিয়ে জখম করা হয়।

এক পর্যায়ে তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন আনোয়ারকে উদ্ধার করে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভির্তি করায়।

অবস্থার অবনতি হলে আনোয়ারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়; সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানান পিপি মুমিনুল।

ঘটনার পরদিন ২৩ এপ্রিল আনোয়ারের বাবা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২০ থেকে ২৫ জনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা করেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৬ অগাস্ট ডিবির এসআই জিল্লুর রহমান আদালতের নির্দেশে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পুনরায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের মধ্যে দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়; যা অনাদায়ে তাদের আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাবাসে থাকতে হবে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী।

মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে পিপি মুমিনুল হক বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।

মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন বলেন, পলাতক আসামিরা এখনো আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। দ্রুত তাদেরকে গ্রেপ্তার করে রায় বাস্তবায়ন করা হোক।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কুমিল্লায় ব্যবসায়ীকে হত্যায় ২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, পাঁচজনের যাবজ্জীবন

প্রকাশের সময় : ০৬:১৩:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি :

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় এক ব্যবসায়ীকে কোপানোর পর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১২ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ সাবরিনা নার্গিস এক আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষে কৌঁসুলি (পিপি) মুমিনুল হক ভূঁইয়া।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়ারা হলেন- উপজেলার দেড়কোটা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া এবং একই গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে জুয়েল রানা ওরফে জুয়েল।

যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়ারা হলেন- দেড়কোটা গ্রামের ক্বারী ফজলুল হক, আজাদ রহমান, আবদুল কাদের, কবির আহমেদ এবং ফেলনা গ্রামের সাদ্দাম হোসেন। রায় ঘোষণার সময় কবির আহমেদ ছাড়া বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

পিপি মুমিনুল হক ভূঁইয়া বলেন, পূর্ব বিরোধের জেরে ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও তার সহযোগীরা স্থানীয় ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এতে বাধা দিলে আনোয়ারকে কুপিয়ে জখম করা হয়।

এক পর্যায়ে তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন আনোয়ারকে উদ্ধার করে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভির্তি করায়।

অবস্থার অবনতি হলে আনোয়ারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়; সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানান পিপি মুমিনুল।

ঘটনার পরদিন ২৩ এপ্রিল আনোয়ারের বাবা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২০ থেকে ২৫ জনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা করেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৬ অগাস্ট ডিবির এসআই জিল্লুর রহমান আদালতের নির্দেশে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পুনরায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের মধ্যে দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়; যা অনাদায়ে তাদের আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাবাসে থাকতে হবে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী।

মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে পিপি মুমিনুল হক বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।

মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন বলেন, পলাতক আসামিরা এখনো আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। দ্রুত তাদেরকে গ্রেপ্তার করে রায় বাস্তবায়ন করা হোক।