নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ক্ষমতা কিংবা আসনের বিনিময়ে কারও সঙ্গে কোনো সমঝোতায় যাবে না বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে আবু সাইদ কনভেনশন হলে এনসিপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এতে মনোনয়ন বোর্ডে সাক্ষাৎ করতে সারা দেশ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা উপস্থিত হন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের যদি কোনো রাজনৈতিক সমঝোতা হয়, সেটা একটা নীতিগত জায়গা থেকে হতে হবে। ক্ষমতার জন্য, আসনের জন্য আমরা কারও সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা করব না। আমরা যদি একটি আসনও না পাই, জাতীয় নাগরিক পার্টির যে আদর্শ, যে নীতি, যে লক্ষ্য, তা অটুট থাকবে।’
নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেখতে পাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি তার স্বপ্ন ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সাধারণ মানুষের আস্থা ও সহযোগিতা। যে সহযোগিতা আমরা সবসময় পেয়ে আসছি- সাধারণ মানুষের সেই সমর্থনেই এনসিপি এতদূর আসতে পেরেছে। মানুষের আস্থা ও ভরসাতেই এনসিপি সামনে এগিয়ে যাবে।
‘গ্রেডিং পদ্ধতি’তে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করবে এনসিপি
উদ্বেগ জানিয়ে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, নির্বাচনের জন্য যেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকার কথা, সেই ধরনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আমরা দেখতে পাচ্ছি না। আমরা অনেক আগেই এ বিষয়ে বলেছি। বাংলাদেশের নির্বাচনী সংস্কৃতিতে জবরদখল, প্রশাসনের অপব্যবহার, টাকার প্রভাব, কালো টাকার ছড়াছড়ি, মাসল পাওয়ারের ব্যবহার- এসব আমরা বহু বছর ধরে দেখে ও শুনে আসছি। ফ্যাসিবাদী সময়ে তো মানুষ ভোট দিতেও পারেনি। ফলে এবারের নির্বাচন গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমরা আশা করি অনেক তরুণ, স্বপ্নবাজ ও দেশপ্রেমী মানুষ সংসদে আসবেন।
তিনি বলেন, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, সরকার ও প্রশাসনকে যে দৃঢ় অবস্থানে থাকা প্রয়োজন, সেটি আমরা দেখতে পাচ্ছি না। বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে প্রশাসন দখলের কথা বলছে- কীভাবে প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে তা ঘোষণা করছে।
তিনি আরও বলেন, যে প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে দরকষাকষি চলছে, তার ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এখন মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। যারা একসময় বন্ধু ছিল, তারাই এখন চক্রান্ত করছে। তারা এই নির্বাচনকে ভাগাভাগির, সাজানো বা সমঝোতার নির্বাচনে রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এ ধরনের নির্বাচন হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এককভাবে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, এ বিষয়ে কেউ অপপ্রচারে কান দেবেন না। তবে আমাদের আদর্শের সঙ্গে মিল থাকলে ভবিষ্যতে কেউ যোগ দিলে— আমরা তা অবশ্যই খোলামেলাভাবে আগেই জানিয়ে দেবো।
নাহিদ বলেন, একটি সাজানো ও সমঝোতার নির্বাচনের ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচনের জন্য এনসিপি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাচ্ছে না। অর্থ ও পেশিশক্তি ব্যবহারের সংস্কৃতি আগের মতই দেখা গেছে। সে অর্থে পরিস্থিতি শক্তভাবে মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনও পদক্ষেপ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ বলেন, আজ থেকে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী ১ হাজার ৪৮৪ জনের সাক্ষাৎকার শেষে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। এবার আমরা তরুণদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার লোকজনকে মনোনয়ন দিচ্ছি। কারণ আমরা অতীতের গতানুগতিক ধারার পরিবর্তে নতুন পথচলা শুরু করতে চাই। যার মাধ্যমে আগামীতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সংসদ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন আমরা দেখছি।
এনসিপির আহ্বায়ক আরও বলেন, অন্য দলগুলোর প্রার্থী বাছাইয়ে নতুন রাজনীতির কোনও ছাপ নেই। পাঁচ বছর আগে নির্বাচন হলে যাদের মনোনয়ন দিতো, এবারও তাদেরই দিচ্ছে। বিপরীতে আমরা নতুন, সৎ, দক্ষ ও যোগ্য মানুষদের নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই।
তিনি জানান, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শেষ হলে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 




















