Dhaka শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট করা ইসির জন্য চ্যালেঞ্জ : সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট করা চ্যালেঞ্জিং বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট করার জন্য এমন মুখোমুখি পরিস্থিতিতে পূর্ববর্তী নির্বাচন কমিশন কখনও হয়নি।

শনিবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনসের আয়োজনে নির্বাচন বিষয়ক এক কর্মশালায় এসব কথা জানান তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, একই দিনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি নিতে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে। সামনের সপ্তাহে গণভোটের আইন করা হবে। আইনটা হয়ে গেলে গণভোটের প্রস্তুতি শুরু করবে কমিশন।

সিইসি বলেন, আগের নির্বাচন কমিশনকে এতটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়নি যা বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কারণ আইন মেনেই সব প্রক্রিয়া হচ্ছে। আমাদের ২য় কোনও অপশন নেই।

নির্বাচন ঘিরে জনগণের প্রত্যাশা বিশাল উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ২-৩ দিনে এটা (জনগণের প্রত্যাশা) বুঝতে পেরেছি। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। যে চ্যালেঞ্জই সামনেই আসুক আমাদের মূল লক্ষ্যই জাতিকে স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দেয়া। এই প্রতিশ্রুতি রাজনৈতিক দলগুলোকেও দেয়া রয়েছে।

আমাদের মূল লক্ষ্যই ফ্রি এবং ফেয়ার ইলেকশন। এর বেশিও নয়, কমও নয়। এ ব্যাপারে আমাদের প্রবল আত্মবিশ্বাস রয়েছে, বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

তিনি বলেন, আমাদের রাজনৈতিক বাস্তবতা খুব একটা মসৃণ নয়। তবে স্বচ্ছ নির্বাচনের পর সকল পরিস্থিতি শান্ত হবে বলে আমার বিশ্বাস, আমাদের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা দায়িত্ববান ও বিজ্ঞ।

নাসির উদ্দিন বলেন, এবারের নির্বাচন কমিশন এমন সব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, যেগুলো আগের কমিশনগুলোর সামনে ছিল না। আইন মেনে কাজ করাই আমাদের একমাত্র পথ। অন্য কোনো বিকল্প নেই। জনগণের উচ্চ প্রত্যাশা প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, গত কয়েক দিনের অভিজ্ঞতায় বুঝতে পেরেছি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা কতটা বেশি। এটি আমাদের জন্য বিশাল চাপ। তারপরও লক্ষ্য একটাই-স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়া।

সিইসি ভোটার তালিকা সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেন বলেন, প্রায় ২১ লাখ মৃত ভোটারের নাম এখনো ভোটার তালিকায় রয়েছে। আগের তিনটি জাতীয় নির্বাচনে মৃত ভোটারদের হয়ে অন্যরা ভোট দিয়েছে। নীলফামারিতে মিয়ানমারের ২০-২৫ জন নাগরিক ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের পোস্টাল ভোট প্রক্রিয়া বেশ জটিল।

গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইন চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত ব্যালটের ধরন নিশ্চিত নয়। তবে প্রস্তাবিত চারটি পয়েন্টে ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’ ভিত্তিক ভোট হবে বলে জানান তিনি।

সবশেষে সিইসি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি এখন নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কমিশন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহার করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো অপপ্রচার রোধ করা কঠিন হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি যদি সমঝোতা ও সহযোগিতামূলক হতো, তবে কমিশনের কাজ আরও সহজ হতো।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট করা ইসির জন্য চ্যালেঞ্জ : সিইসি

প্রকাশের সময় : ০৮:১৭:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :

একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট করা চ্যালেঞ্জিং বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট করার জন্য এমন মুখোমুখি পরিস্থিতিতে পূর্ববর্তী নির্বাচন কমিশন কখনও হয়নি।

শনিবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনসের আয়োজনে নির্বাচন বিষয়ক এক কর্মশালায় এসব কথা জানান তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, একই দিনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি নিতে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে। সামনের সপ্তাহে গণভোটের আইন করা হবে। আইনটা হয়ে গেলে গণভোটের প্রস্তুতি শুরু করবে কমিশন।

সিইসি বলেন, আগের নির্বাচন কমিশনকে এতটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়নি যা বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কারণ আইন মেনেই সব প্রক্রিয়া হচ্ছে। আমাদের ২য় কোনও অপশন নেই।

নির্বাচন ঘিরে জনগণের প্রত্যাশা বিশাল উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ২-৩ দিনে এটা (জনগণের প্রত্যাশা) বুঝতে পেরেছি। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। যে চ্যালেঞ্জই সামনেই আসুক আমাদের মূল লক্ষ্যই জাতিকে স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দেয়া। এই প্রতিশ্রুতি রাজনৈতিক দলগুলোকেও দেয়া রয়েছে।

আমাদের মূল লক্ষ্যই ফ্রি এবং ফেয়ার ইলেকশন। এর বেশিও নয়, কমও নয়। এ ব্যাপারে আমাদের প্রবল আত্মবিশ্বাস রয়েছে, বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

তিনি বলেন, আমাদের রাজনৈতিক বাস্তবতা খুব একটা মসৃণ নয়। তবে স্বচ্ছ নির্বাচনের পর সকল পরিস্থিতি শান্ত হবে বলে আমার বিশ্বাস, আমাদের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা দায়িত্ববান ও বিজ্ঞ।

নাসির উদ্দিন বলেন, এবারের নির্বাচন কমিশন এমন সব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, যেগুলো আগের কমিশনগুলোর সামনে ছিল না। আইন মেনে কাজ করাই আমাদের একমাত্র পথ। অন্য কোনো বিকল্প নেই। জনগণের উচ্চ প্রত্যাশা প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, গত কয়েক দিনের অভিজ্ঞতায় বুঝতে পেরেছি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা কতটা বেশি। এটি আমাদের জন্য বিশাল চাপ। তারপরও লক্ষ্য একটাই-স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়া।

সিইসি ভোটার তালিকা সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেন বলেন, প্রায় ২১ লাখ মৃত ভোটারের নাম এখনো ভোটার তালিকায় রয়েছে। আগের তিনটি জাতীয় নির্বাচনে মৃত ভোটারদের হয়ে অন্যরা ভোট দিয়েছে। নীলফামারিতে মিয়ানমারের ২০-২৫ জন নাগরিক ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের পোস্টাল ভোট প্রক্রিয়া বেশ জটিল।

গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইন চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত ব্যালটের ধরন নিশ্চিত নয়। তবে প্রস্তাবিত চারটি পয়েন্টে ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’ ভিত্তিক ভোট হবে বলে জানান তিনি।

সবশেষে সিইসি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি এখন নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কমিশন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহার করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো অপপ্রচার রোধ করা কঠিন হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি যদি সমঝোতা ও সহযোগিতামূলক হতো, তবে কমিশনের কাজ আরও সহজ হতো।