Dhaka শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূমিকম্পে শাহজালাল বিমানবন্দরে খসে পড়লো বিমের পলেস্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ভূমিকম্পে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি বিমের পলেস্তারা খসে পড়েছে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। ক্ষতিগ্রস্ত পলেস্তারা মেরামত করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে ভূমিকম্পের সময় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভূমিকম্পের পর যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করেন। এসময় সিলিং কিছুটা খসে পড়ার পর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি ঘিরে ফেলে এবং সাধারণ যাত্রী চলাচল সাময়িকভাবে সীমিত করে।

শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্র জানায়, শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে আঘাত হানা ভূমিকম্পে বিমানবন্দরের টার্মিনাল-২-এর দ্বিতীয় তলায় ক্যানোপির (আচ্ছাদন) একটি বিমের পলেস্তারা খসে পড়ে। তবে তা কোনো যাত্রীর ওপর পড়েনি। এছাড়া মূল কাঠামোর কোন সমস্যা হয়নি। এ কারণে বিমানবন্দর দিয়ে যাত্রীদের যাতায়াতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

ভূমিকম্পের সময় ক্যানোপিতে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ভূমিকম্প চলাকালে উপস্থিত যাত্রীরা আঁতকে ওঠেন। এদিক-সেদিক দৌড়াতে থাকেন। ক্যানোপিতে যেসব যাত্রী এবং তাদের স্বজনরা ছিলেন, তারাও নিরাপদ স্থানে যেতে থাকেন। এর মধ্যে দ্বিতীয় তলায় চার নম্বর ফটক-সংলগ্ন ভিমের পলেস্তারা খসে পড়ে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। পরে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা মেরামত করা শুরু করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ বলেন, ডিপারচার ড্রাইভওয়েতে উপরের সিলিং জয়েন্ট থেকে একটু প্লাস্টার খসে পড়েছিল। আলহামদুলিল্লাহ, রানওয়ে, অ্যাপ্রোন এবং টার্মিনালের অভ্যন্তরে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বিমান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের গঠনগত সুরক্ষা যাচাই করতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন শুরু করেছে। দলটি ফাটলের প্রকৃতি, গভীরতা এবং ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মূল্যায়ন করছে। বুয়েটের মূল্যায়ন রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় মেরামত বা স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির মাত্রা ৫ দশমিক ৭ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ড থেকে কম্পন শুরু হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আজ সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি, আতঙ্কিত না হয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করুন।

আফটার শকের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ফারজানা সুলতানা বলেন, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী— এ ধরনের ভূমিকম্পের পর ছোটোখাটো আফটার শকের সম্ভাবনা থাকতেই পারে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এখন পর্যন্ত তেমন সম্ভাবনা আমরা দেখতে পাইনি।

এর আগে চলতি বছরের ৫ মার্চ রাজধানীতে মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল।

রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। তারও আগে ২৮ মে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ২টা ২৪ মিনিটে ভারতের মণিপুর রাজ্যের মোইরাং শহরের কাছাকাছি আরেকটি ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। সেসময়ও ভূমিকম্পে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ রাজধানী ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলায় হালকা কম্পন অনুভূত হয়েছিল।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

৫ আগস্টের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকলে, আগামী নির্বাচনেও দেশ লাভবান হবে : ডা. জাহিদ

ভূমিকম্পে শাহজালাল বিমানবন্দরে খসে পড়লো বিমের পলেস্তারা

প্রকাশের সময় : ০৫:০৭:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ভূমিকম্পে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি বিমের পলেস্তারা খসে পড়েছে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। ক্ষতিগ্রস্ত পলেস্তারা মেরামত করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে ভূমিকম্পের সময় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভূমিকম্পের পর যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করেন। এসময় সিলিং কিছুটা খসে পড়ার পর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি ঘিরে ফেলে এবং সাধারণ যাত্রী চলাচল সাময়িকভাবে সীমিত করে।

শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্র জানায়, শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে আঘাত হানা ভূমিকম্পে বিমানবন্দরের টার্মিনাল-২-এর দ্বিতীয় তলায় ক্যানোপির (আচ্ছাদন) একটি বিমের পলেস্তারা খসে পড়ে। তবে তা কোনো যাত্রীর ওপর পড়েনি। এছাড়া মূল কাঠামোর কোন সমস্যা হয়নি। এ কারণে বিমানবন্দর দিয়ে যাত্রীদের যাতায়াতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

ভূমিকম্পের সময় ক্যানোপিতে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ভূমিকম্প চলাকালে উপস্থিত যাত্রীরা আঁতকে ওঠেন। এদিক-সেদিক দৌড়াতে থাকেন। ক্যানোপিতে যেসব যাত্রী এবং তাদের স্বজনরা ছিলেন, তারাও নিরাপদ স্থানে যেতে থাকেন। এর মধ্যে দ্বিতীয় তলায় চার নম্বর ফটক-সংলগ্ন ভিমের পলেস্তারা খসে পড়ে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। পরে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা মেরামত করা শুরু করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ বলেন, ডিপারচার ড্রাইভওয়েতে উপরের সিলিং জয়েন্ট থেকে একটু প্লাস্টার খসে পড়েছিল। আলহামদুলিল্লাহ, রানওয়ে, অ্যাপ্রোন এবং টার্মিনালের অভ্যন্তরে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বিমান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের গঠনগত সুরক্ষা যাচাই করতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন শুরু করেছে। দলটি ফাটলের প্রকৃতি, গভীরতা এবং ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মূল্যায়ন করছে। বুয়েটের মূল্যায়ন রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় মেরামত বা স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির মাত্রা ৫ দশমিক ৭ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ড থেকে কম্পন শুরু হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আজ সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি, আতঙ্কিত না হয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করুন।

আফটার শকের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ফারজানা সুলতানা বলেন, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী— এ ধরনের ভূমিকম্পের পর ছোটোখাটো আফটার শকের সম্ভাবনা থাকতেই পারে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এখন পর্যন্ত তেমন সম্ভাবনা আমরা দেখতে পাইনি।

এর আগে চলতি বছরের ৫ মার্চ রাজধানীতে মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল।

রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। তারও আগে ২৮ মে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ২টা ২৪ মিনিটে ভারতের মণিপুর রাজ্যের মোইরাং শহরের কাছাকাছি আরেকটি ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। সেসময়ও ভূমিকম্পে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ রাজধানী ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলায় হালকা কম্পন অনুভূত হয়েছিল।