Dhaka শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে : আখতার হোসেন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ১১:৫৮:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৭৯ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক :

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায়কে স্বাগত জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। তত্ত্বাবধারক সরকার ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য সরকার ব্যবস্থা।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কার্যালয়ে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার রায়ের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া তিনি এসব কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় অবৈধ ঘোষণা করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের যে রায় আদালত দিয়েছেন, তাকে আমরা স্বাগত জানাই। এর মাধ্যমে জাতি কলঙ্ক থেকে মুক্ত হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা সবার রক্তের মধ্য দিয়ে এই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। সে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত ঐকমত্য কমিশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে যে প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আমরা সম্মত হয়েছি, জুলাই সনদে যে প্রক্রিয়ায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে, সামনের দিনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সেই প্রক্রিয়াতে গঠন করতে হবে। এই আহ্বান এবং এই বাধ্যবাধকতার কথা জানিয়ে আজকের যে রায়, সেটাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’

আখতার হোসেন বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের একতরফা নির্বাচন করেছিল হাসিনা সরকার। এর মধ্য দিয়ে দেশে ফ্যাসিবাদের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছিল।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় যুগান্তকারী উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে হাসিনা সরকারের আমলে দেওয়া কলঙ্কজনক রায় থেকে দেশের বিচার বিভাগ ও জাতি মুক্তি লাভ করেছে।’ তিনি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছিলাম, দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া হিসেবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হবে। জুলাই সনদে এ ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু জুলাই সনদের আদেশে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ত্রয়োদশ সংশোধনীর মতো করে হবে, নাকি জুলাই সনদে যেভাবে বলা হয়েছে, সেভাবে গঠিত হবে—তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের রায়ের পর এই প্রশ্ন সামনে এসেছে বলে উল্লেখ করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই অস্পষ্টতা সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা হচ্ছে না। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, জুলাই সনদে যেভাবে বলা হয়েছে, সেভাবে হবে। কিন্তু বিভিন্ন দল, বিশেষ করে বিএনপি ত্রয়োদশ সংশোধনীতেই ফিরে যাওয়ার কথা বলছে। কিন্তু সেখানে যেভাবে এটা আছে, সেটা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নানা ধরনের সংকট তৈরি করেছে, এক–এগারোর মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সেই জায়গায় শুধু বিচার বিভাগের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে জুলাই সনদে যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কথা বলা হয়েছে, সেভাবে গঠন করাই দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সবচেয়ে উপযোগী পদ্ধতি। এর ব্যত্যয় করার কোনো সুযোগ নেই।’

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আসন্ন নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ঠিক এই মুহূর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। এ অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন দিতে ক্ষমতায় এসেছে এবং তাদের মধ্য দিয়েই সামনে নির্বাচনটা অনুষ্ঠিত হতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

তোফায়েল আহমেদের স্ত্রী মারা গেছেন

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে : আখতার হোসেন

প্রকাশের সময় : ১১:৫৮:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায়কে স্বাগত জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। তত্ত্বাবধারক সরকার ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য সরকার ব্যবস্থা।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কার্যালয়ে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার রায়ের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া তিনি এসব কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় অবৈধ ঘোষণা করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের যে রায় আদালত দিয়েছেন, তাকে আমরা স্বাগত জানাই। এর মাধ্যমে জাতি কলঙ্ক থেকে মুক্ত হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা সবার রক্তের মধ্য দিয়ে এই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। সে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত ঐকমত্য কমিশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে যে প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আমরা সম্মত হয়েছি, জুলাই সনদে যে প্রক্রিয়ায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে, সামনের দিনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সেই প্রক্রিয়াতে গঠন করতে হবে। এই আহ্বান এবং এই বাধ্যবাধকতার কথা জানিয়ে আজকের যে রায়, সেটাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’

আখতার হোসেন বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের একতরফা নির্বাচন করেছিল হাসিনা সরকার। এর মধ্য দিয়ে দেশে ফ্যাসিবাদের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছিল।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় যুগান্তকারী উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে হাসিনা সরকারের আমলে দেওয়া কলঙ্কজনক রায় থেকে দেশের বিচার বিভাগ ও জাতি মুক্তি লাভ করেছে।’ তিনি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছিলাম, দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া হিসেবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হবে। জুলাই সনদে এ ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু জুলাই সনদের আদেশে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ত্রয়োদশ সংশোধনীর মতো করে হবে, নাকি জুলাই সনদে যেভাবে বলা হয়েছে, সেভাবে গঠিত হবে—তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের রায়ের পর এই প্রশ্ন সামনে এসেছে বলে উল্লেখ করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই অস্পষ্টতা সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা হচ্ছে না। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, জুলাই সনদে যেভাবে বলা হয়েছে, সেভাবে হবে। কিন্তু বিভিন্ন দল, বিশেষ করে বিএনপি ত্রয়োদশ সংশোধনীতেই ফিরে যাওয়ার কথা বলছে। কিন্তু সেখানে যেভাবে এটা আছে, সেটা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নানা ধরনের সংকট তৈরি করেছে, এক–এগারোর মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সেই জায়গায় শুধু বিচার বিভাগের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে জুলাই সনদে যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কথা বলা হয়েছে, সেভাবে গঠন করাই দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সবচেয়ে উপযোগী পদ্ধতি। এর ব্যত্যয় করার কোনো সুযোগ নেই।’

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আসন্ন নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ঠিক এই মুহূর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। এ অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন দিতে ক্ষমতায় এসেছে এবং তাদের মধ্য দিয়েই সামনে নির্বাচনটা অনুষ্ঠিত হতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা প্রমুখ।