Dhaka বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারার সংস্কৃতি আওয়ামী লীগের : রিজভী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০২:৫৮:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৯৯ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গণপরিবহনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দেওয়া এবং আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারার সংস্কৃতি আওয়ামী লীগের বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ভিডিও কনটেন্ট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ছিল মানুষের শ্বাসরুদ্ধ করে দেওয়া একটি রাজনৈতিক দল। যারা জোর করে ক্ষমতা আকড়ে রেখেছিল। তারা ব্যাংকগুলো শূন্য করে দিয়েছে। তারা বড় বড় প্রকল্পের নামে টাকা পাচার করেছে। সেই লোভে তারা লকডাউনের নামে আবার কর্মসূচি দিয়ে ফিরে আসতে চায়। আর তার জন্য আগুন দিয়ে মানুষ মারছে। আগুন লাগানো ও মানুষ পুড়িয়ে মারার সংস্কৃতি আওয়ামী লীগের। সেটি আবারও তারা প্রমাণ করেছে। রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকাকালেও আওয়ামী লীগ এটা করেছে।

রিজভী বলেন, লকডাউন দেওয়া হয় ভাইরাসের বিরুদ্ধে। কিন্তু তাদের ব্যাপারে লকডাউন তো বাংলাদেশের জনগণের! করোনাভাইরাস যেমন মানুষের শ্বাসরুদ্ধ করে দিত, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ছিল জাতির শ্বাসরুদ্ধ করে দেওয়া একটি রাজনৈতিক দল। যারা জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছিল। জনগণ তো লকডাউন দিয়ে রেখেছে এই আওয়ামী দোসর নামক ভাইরাসদেরকে। আর আপনারা উল্টো লকডাউন দিচ্ছেন এ দেশে! তাহলে আপনারা যদি চলেই আসেন কোনোভাবে, তাহলে বাংলাদেশকে আবার সেই পরিস্থিতির শিকার হতে হবে। কন্ঠের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি, কেউ কোনো কিছু করতে পারবে না।

তিনি বলেন, যেভাবে তারা দেশ চালিয়েছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো শূন্য করে দিয়েছেন, রাজকোষ শূন্য করে দিয়েছেন, শূন্য করে দিয়ে বড় বড় প্রজেক্টের নামে টাকা পাচার করেছেন—এই স্বপ্নে বিভোর হয়ে তারা ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের জন্য লকডাউন নামক একটি অদ্ভুত ফ্রেজ ব্যবহার করে সেই কর্মসূচি দিচ্ছেন এবং তার জন্য আগুন ছড়িয়ে পড়ছে।

রিজভী বলেন, বিএনপি বা সমমান রাজনৈতিক দলগুলো যখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছে, আমরা বলেছিলাম এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন জায়গায় যে আগুন লাগানো হয়েছে বাসে এবং আগুনে পড়ানো হয়েছে, এটা রাষ্ট্র কর্তৃক করা হয়েছে, রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে করা হয়েছে। তার কিছু নজির তখনই বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফুটে উঠেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের ছেলেরা ফেসবুকে পোস্ট করেছে কাজ করে কারা, আর মানে নাম হয় কাদের! আমরা লাগালাম আগুন, আর দোষ পড়ছে…কৌশলটা খুব ভালো। এখনো তার ডকুমেন্ট আছে।

তিনি বলেন, আগুনে মানুষ পড়ানোর এই সমস্ত কালচার যে আওয়ামী লীগের, সেটার আবার আমরা প্রমাণ পাচ্ছি এখন। তখন তো রাষ্ট্র ক্ষমতাকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে তারা অপপ্রচার চালিয়ে গেছে, কিন্তু ওরাই যে করেছে তার প্রমাণ এখন বিভিন্ন বাসে আগুন দেওয়া। গাজীপুর, ঢাকা এবং সারা বাংলাদেশের কয়েকটি জায়গায় তারা আগুন দিচ্ছে এবং আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারছে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি এবং আন্দোলনকামী মানুষের তখন আরও ভয়াবহ অবস্থা। একদিকে পুলিশ, একদিকে র‌্যাব, একদিকে আয়নাঘর, একদিকে টর্চার-অত্যাচার, পাড়ায়-মহল্লায় বসে থাকে যুবলীগ-ছাত্রলীগ, তার মধ্যেও বুক উঁচিয়ে যারা গণতন্ত্র নিশ্চিত করার জন্য সংগ্রাম করেছে, তারা তো মহাবিপ্লবী! তারা তো আদর্শবাদী সৈনিক। আদর্শবাদী সৈনিকরা কোনোদিন সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয়, সাধারণ মানুষ পুড়ে মরবে—এই কাজ আদর্শবাদীরা করেনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, যারা গুপ্তঘাতক, যারা দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় জনগণের টাকা লুট করে, নিজের এলাকায় যারা একেকটা সাদ্দাদের বেহেশত তৈরি করেছে, তাদের তো জনগণের প্রতি কোনো দরদ থাকবে না। ওই সময় লুটের যে আনন্দ, ভোগের যে আনন্দ, বিলাসের যে আনন্দ, এই ভোগ-বিলাসের আনন্দের কথা শেখ হাসিনা ভুলতে পারছে না। আওয়ামী নেতারা ভুলতে পারছে না। এই কারণে তারা অবৈধ সন্ত্রাসী পন্থা অবলম্বন করে একেবারে চোরাগোপ্তাভাবে জনগণের ওপর আক্রমণ করছে। তার নমুনা আজকে দুতিন দিন ধরে আমরা দেখছি।

কখনোই কোনো ফ্যাসিস্ট পরাজিত শক্তি আর ফিরে আসে না উল্লেখ করে রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের জন্য যারা লড়াই করেছেন, তাদেরকে অবশ্যই গণভোট বলুন আর যেটাই বলুন, একটা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করে জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি শিক্ষা নিয়েছে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, তার সহধর্মিনী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছ থেকে। আপনারা দেখেন ৫ আগস্টের আগে এবং পরে তারেক রহমানের ভূমিকা…। আগে আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনের মধ্যে ছিলাম, পরে রাষ্ট্র নির্মাণে যে প্রেরণাদায়ক বক্তব্য তারেক রহমান সাহেব দিয়েছেন তা শিক্ষণীয়। তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কখনো নোংরা ভাষায় আক্রমণ করেননি। তিনি স্বাভাবিক ভাষায় কথা বলেছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ফরিদপুরে আলোচিত রোদেলা হত্যা মামলায় ঘাতক স্বামীর ফাঁসি

আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারার সংস্কৃতি আওয়ামী লীগের : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০২:৫৮:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গণপরিবহনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দেওয়া এবং আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারার সংস্কৃতি আওয়ামী লীগের বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ভিডিও কনটেন্ট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ছিল মানুষের শ্বাসরুদ্ধ করে দেওয়া একটি রাজনৈতিক দল। যারা জোর করে ক্ষমতা আকড়ে রেখেছিল। তারা ব্যাংকগুলো শূন্য করে দিয়েছে। তারা বড় বড় প্রকল্পের নামে টাকা পাচার করেছে। সেই লোভে তারা লকডাউনের নামে আবার কর্মসূচি দিয়ে ফিরে আসতে চায়। আর তার জন্য আগুন দিয়ে মানুষ মারছে। আগুন লাগানো ও মানুষ পুড়িয়ে মারার সংস্কৃতি আওয়ামী লীগের। সেটি আবারও তারা প্রমাণ করেছে। রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকাকালেও আওয়ামী লীগ এটা করেছে।

রিজভী বলেন, লকডাউন দেওয়া হয় ভাইরাসের বিরুদ্ধে। কিন্তু তাদের ব্যাপারে লকডাউন তো বাংলাদেশের জনগণের! করোনাভাইরাস যেমন মানুষের শ্বাসরুদ্ধ করে দিত, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ছিল জাতির শ্বাসরুদ্ধ করে দেওয়া একটি রাজনৈতিক দল। যারা জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছিল। জনগণ তো লকডাউন দিয়ে রেখেছে এই আওয়ামী দোসর নামক ভাইরাসদেরকে। আর আপনারা উল্টো লকডাউন দিচ্ছেন এ দেশে! তাহলে আপনারা যদি চলেই আসেন কোনোভাবে, তাহলে বাংলাদেশকে আবার সেই পরিস্থিতির শিকার হতে হবে। কন্ঠের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি, কেউ কোনো কিছু করতে পারবে না।

তিনি বলেন, যেভাবে তারা দেশ চালিয়েছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো শূন্য করে দিয়েছেন, রাজকোষ শূন্য করে দিয়েছেন, শূন্য করে দিয়ে বড় বড় প্রজেক্টের নামে টাকা পাচার করেছেন—এই স্বপ্নে বিভোর হয়ে তারা ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের জন্য লকডাউন নামক একটি অদ্ভুত ফ্রেজ ব্যবহার করে সেই কর্মসূচি দিচ্ছেন এবং তার জন্য আগুন ছড়িয়ে পড়ছে।

রিজভী বলেন, বিএনপি বা সমমান রাজনৈতিক দলগুলো যখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছে, আমরা বলেছিলাম এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন জায়গায় যে আগুন লাগানো হয়েছে বাসে এবং আগুনে পড়ানো হয়েছে, এটা রাষ্ট্র কর্তৃক করা হয়েছে, রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে করা হয়েছে। তার কিছু নজির তখনই বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফুটে উঠেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের ছেলেরা ফেসবুকে পোস্ট করেছে কাজ করে কারা, আর মানে নাম হয় কাদের! আমরা লাগালাম আগুন, আর দোষ পড়ছে…কৌশলটা খুব ভালো। এখনো তার ডকুমেন্ট আছে।

তিনি বলেন, আগুনে মানুষ পড়ানোর এই সমস্ত কালচার যে আওয়ামী লীগের, সেটার আবার আমরা প্রমাণ পাচ্ছি এখন। তখন তো রাষ্ট্র ক্ষমতাকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে তারা অপপ্রচার চালিয়ে গেছে, কিন্তু ওরাই যে করেছে তার প্রমাণ এখন বিভিন্ন বাসে আগুন দেওয়া। গাজীপুর, ঢাকা এবং সারা বাংলাদেশের কয়েকটি জায়গায় তারা আগুন দিচ্ছে এবং আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারছে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি এবং আন্দোলনকামী মানুষের তখন আরও ভয়াবহ অবস্থা। একদিকে পুলিশ, একদিকে র‌্যাব, একদিকে আয়নাঘর, একদিকে টর্চার-অত্যাচার, পাড়ায়-মহল্লায় বসে থাকে যুবলীগ-ছাত্রলীগ, তার মধ্যেও বুক উঁচিয়ে যারা গণতন্ত্র নিশ্চিত করার জন্য সংগ্রাম করেছে, তারা তো মহাবিপ্লবী! তারা তো আদর্শবাদী সৈনিক। আদর্শবাদী সৈনিকরা কোনোদিন সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয়, সাধারণ মানুষ পুড়ে মরবে—এই কাজ আদর্শবাদীরা করেনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, যারা গুপ্তঘাতক, যারা দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় জনগণের টাকা লুট করে, নিজের এলাকায় যারা একেকটা সাদ্দাদের বেহেশত তৈরি করেছে, তাদের তো জনগণের প্রতি কোনো দরদ থাকবে না। ওই সময় লুটের যে আনন্দ, ভোগের যে আনন্দ, বিলাসের যে আনন্দ, এই ভোগ-বিলাসের আনন্দের কথা শেখ হাসিনা ভুলতে পারছে না। আওয়ামী নেতারা ভুলতে পারছে না। এই কারণে তারা অবৈধ সন্ত্রাসী পন্থা অবলম্বন করে একেবারে চোরাগোপ্তাভাবে জনগণের ওপর আক্রমণ করছে। তার নমুনা আজকে দুতিন দিন ধরে আমরা দেখছি।

কখনোই কোনো ফ্যাসিস্ট পরাজিত শক্তি আর ফিরে আসে না উল্লেখ করে রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের জন্য যারা লড়াই করেছেন, তাদেরকে অবশ্যই গণভোট বলুন আর যেটাই বলুন, একটা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করে জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি শিক্ষা নিয়েছে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, তার সহধর্মিনী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছ থেকে। আপনারা দেখেন ৫ আগস্টের আগে এবং পরে তারেক রহমানের ভূমিকা…। আগে আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনের মধ্যে ছিলাম, পরে রাষ্ট্র নির্মাণে যে প্রেরণাদায়ক বক্তব্য তারেক রহমান সাহেব দিয়েছেন তা শিক্ষণীয়। তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কখনো নোংরা ভাষায় আক্রমণ করেননি। তিনি স্বাভাবিক ভাষায় কথা বলেছেন।