Dhaka বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পে স্কেল বাস্তবায়নে আরো কিছুটা সময় লাগবে : অর্থ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পে স্কেল বাস্তবায়নে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, পে কমিশনের জন্য আলাদা একটি কমিশন কাজ করছে এবং তিনটি রিপোর্ট যাচাই-বাছাইয়ের পর বর্তমান সরকার একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করে যাবে, যা পরবর্তী সরকার এসে বাস্তবায়ন করবে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, পে কমিশনের জন্য আলাদা কমিশন কাজ করছে। তিনটি রিপোর্ট পাওয়ার পর সেগুলো যাচাই-বাছাই করতে হবে। এরপর প্রশাসনিক প্রক্রিয়া যেমন সচিব কমিটি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনা, তারপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত মতামত— এসব প্রক্রিয়া শেষ হলে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। তাই আমাদের সময়ে তা সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা নাও যেতে পারে। আমরা একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করে যাচ্ছি, যা পরবর্তী সরকার বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বলেন, আমাদের সময়ে এটা বাস্তবায়ন করা কিছুটা অনিশ্চিত, কারণ এখানে সময়, প্রশাসনিক প্রক্রিয়া ও অর্থের সংস্থান সবকিছু বিবেচনা করতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে অর্থের ব্যবস্থা করা। তবে আমরা এই উদ্যোগ নিজেরা নিয়েছি, ৭-৮ বছর ধরে কিছু হয়নি। মাত্র ১২ মাসের মধ্যে আমরা নিজেরা কাজ শুরু করেছি, তাই ক্ষোভ নয়, ধৈর্য ধরা উচিত।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আগামী সরকারকে পে কমিশনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। পে স্কেল ছাড়াও অন্যান্য সামাজিক খাতের ব্যয় ও বাজেট ব্যবস্থাপনার ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।’

তিনি আরও জানান, রোজার আগে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে তেল ও চিনি আমদানি করা হবে। এছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় ৪০ হাজার ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’ কেনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বন্দরে আটকে থাকা পুরোনো গাড়িগুলো স্ক্র্যাপ করে বিক্রি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কারণ বাইরে বিক্রি করলে তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। পাশাপাশি সংশোধিত বাজেটের আকার কিছুটা কমানো হবে, যদিও টাকার অঙ্কে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না বলেও জানান তিনি।

আপনারা পে-স্কেল দিতে পারবেন কি না? সাংবাদিকেদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, পে কমিশনের কাজটা কিন্তু অত্যন্ত জটিল। ওরা একেবারে স্বাধীনভাবে কাজ করবে। ওখানে কিন্তু আমাদের কোনো রকম ভূমিকা নেই। পে-কমিশনে- ওইখানে সিভিল পে কমিশন, আর্মিদের জন্য আলাদা একটা .. আছে। এখন ওই তিনটা রিপোর্ট পাওয়ার পরে ওটাকে আবার কনসিসটেন্ট লাগবে। একটা একরকম দেবে, সেটা একটু সময় লাগে। সে জন্য আমি বলেছি যে আমাদের সময় এটা করতে পারবো কি না, এটা কিছুটা আনসার্টেনটি।

তিনি বলেন, এর কারণ এটা আবার এই তিনটা রিপোর্ট দেখে ওটাকে আবার রিকনসাইল (সমন্বয়) করতে হবে। রিকনসাইল করার পরে অ্যাডমিনিস্ট্রেট কতগুলো প্রসেস আছে। সচিব কমিটি আছে ওরা দেখবে। তারপর ফাইনান্স দেখে- কত বিষয় সম্পৃক্ত রয়েছে।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সেজন্য আমি বলেছি যে আমরা পুরাপুরি একটা সেটআপ, রিপোর্টটা পাওয়ার পর মোটামুটি একটা ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে যাবো। কারণ আমরা এই সময়ের মধ্যে যদি এটা রিকনসাল করতে পারি করবো। এখানে সবচেয়ে বড় হলো অর্থের সংস্থান।

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, তিনটা বিশেষ ধরনের পে-স্কেল আছে, এটা রিকনসাল করবে। অতএব আমার মনে হয় এটা ওরা একটু ধৈর্য ধরুক। অর্থের সংস্থান আছে, এখন যদি মনে করে যে যেই পে-স্কেল আছে সেই পে-স্কেল যদি আমরা বলে দেই ওটাই থাকবে, তাহলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। এখানে বাজেটের ব্যাপার আছে তো। অন্যান্য সেক্টর আছে তো আমাদের বাজেটে। পে-স্কেল ছাড়াও তো আমরা স্বাস্থ্য খাতে, শিক্ষা খাতে অন্যান্য উন্নয়ন ব্যয় আছে। সেগুলো তো আমার দেখতে হবে।

জাতিসংঘের তিনটি সংস্থা একটি রিপোর্ট দিয়েছে- আমাদের দেশে প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে এবং ১৬ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগবে। একজন সাংবাদিক এমন প্রশ্ন করলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ওরা যেটা দিয়েছে, ওদের তো কতগুলো ইন্টারন্যাশনাল নর্মস আছে। তবে বাংলাদেশের যে একেবারে হাঙ্গারৃ এমন না। আপনি দেখবেন এই সেক্টরে কিন্তু আমরা মোটামুটি পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের চেয়েও বেটার। তবে আমরা একটু সজাগ যে একেবারে ব্যালেন্স ফুড এবং যেন খাদ্যের কোনো সমস্যা না হয়।

তিনি বলেন, গত পরশু আমরা মিটিং করলাম, ওখানে আমরা নিশ্চিত করেছি আমাদের স্টক যেন যথেষ্ট থাকে এবং একই সঙ্গে আমরা অলরেডি প্রেডিক্ট করেছি। একটু সেফ সাইডে থাকার জন্য দামও একটু বাড়িয়ে দিয়েছি। ধানের ও চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছি। দুইটা দিক আমরা দেখছি যাতে স্টকটা বাড়ে, সঙ্গে সঙ্গে কৃষকের যেন ক্ষতি না হয়।

বাজেট সংশোধনের সময় হয়ে আসছে, আপনারা যখন বাজেট দিয়েছিলেন এবং এডিপির যে সাইজ দিয়েছিলেন তখন বলেছিলেন এটা রিয়েলিস্টিক, প্রেগমেটিক (বাস্তবধর্মী) উপায়েই করা হয়েছে। এখন শোনা যাচ্ছে স্যার বাজেটকে আবার কমিয়ে আনা হবে। তাহলে আগের যে প্রেগমেটিক উপায়ে রিয়েলিস্টিক বাজেট করা হয়েছিল সেটা কী আমাদের ভুল ছিল বা সমস্যা ছিল— এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ওই সময়ের প্রেক্ষাপটে ওটা রিয়েলিস্টিক ছিল। আমরা যখন বাজেট বাস্তবায়নে যাই, তখন নানা রকম বিষয় আসে। প্রথমত অর্থসংস্থানের ব্যাপার আছে। এনবিআর বন্ধ থাকার পরে আপনারা দেখেছেন আমরা যাচাই করছি, তারপর যারা বাস্তবায়ন করছে তাদের ব্যাপারে কিছুটা বিষয় আছে, আর সবাই তো বাস্তবায়ন করতে পারেনি। অনেক রকম বিষয় চলে আসে।

তিনি বলেন, একেবারে ড্রাস্টিকালি (ব্যাপকভাবে) আমাদের বাজেট থেকে যে খুব একটা বিরাট ব্যত্যয় ঘটবে তা কিন্তু না। মোটামুটি আমরা শুধু প্রবৃদ্ধি বলেছি, প্রবৃদ্ধি আমরা কমিয়েছি, আর মূল্যস্ফীতি আমরা বলছি ৫, সেটা ৭ করেছি। এখন এই দুইটা মেজর জিনিস আমরা রেখেছি। আর বাকিগুলো টাকার অংকে খুব বেশি হেরফের হবে না মনে হয়। আমরা দেখি শেষ পদ্ধতিতে কতটুকু টেকে।

রাজস্ব বোর্ড এমনি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে, বারবার এ অবস্থায় পেট্রোলিয়ামে কর্পোরেশনের কাছে রাজস্ব পাওনা হলো প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা, একইভাবে পেট্রোবাংলার কাছে পাওনা হলো প্রায় দুই হাজার ৫০০ কোটি, এই বকেয়া টাকা উদ্ধারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না— জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা তাগাদা দিচ্ছি। ওদের অনেক রকম ফ্যাক্টর আছে। আমরা যে দামে পেট্রোল কিনি, সেই দামে তো বিক্রি করতে পারছি না। আমরা তো প্রাইস অ্যাডজাস্ট করতে পারছি না।

তিনি বলেন, ওদের দিকটাও আছে যে পুরপুরি আমরা ওদেরকে এলাও করছি না ক্যারিব্রেনেট করার জন্য আমরা যদি দিতাম যে তোমরা প্রাইস বাড়িয়ে দাও অন্তত তারা দিতে পারতো। সবদিক দেখতে হবে তো আমরা কনসার্ন যে রাজস্ব বাড়ানোর জন্য। আমরা রাজস্ব বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছি। ট্যাক্স যেন ফাঁকি না দেয়, লিকেজ যেন না হয়৷ ওইদিকে বেশি নজর দিয়েছি। সবচেয়ে বেশি কিন্তু এসে ট্যাক্সটা এফেক্ট করার আদেশটা ওইখানে।

তিনি বলেন, তাদের দিক থেকেও একটি বিষয় আছে যে, আমরা পুরোপুরি তাদের ক্যালিব্রেশন করার (দাম সমন্বয়ের) অনুমতি দিচ্ছি না। আমরা যদি সেই অনুমতি দিতাম যে তোমরা দাম বাড়িয়ে দাও, তাহলে অন্তত তারা করত। সব দিক দেখতে হবে। আমরা রাজস্ব বাড়ানোর বিষয়ে সচেতন। রাজস্ব বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছি। বিশেষ করে, ট্যাক্স যেন ফাঁকি না দেওয়া হয় এবং রাজস্বে যেন কোনো লিকেজ (ফাঁকফোকর) না থাকে, সেদিকে বেশি নজর দিয়েছি। সবচেয়ে বেশি প্রভাব কিন্তু পড়েছে ওই ট্যাক্সকে কার্যকর করার নির্দেশনার ওপরই।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সরকারের ভেতরের ভূতরা বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে : রিজভী

পে স্কেল বাস্তবায়নে আরো কিছুটা সময় লাগবে : অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৪:০৪:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পে স্কেল বাস্তবায়নে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, পে কমিশনের জন্য আলাদা একটি কমিশন কাজ করছে এবং তিনটি রিপোর্ট যাচাই-বাছাইয়ের পর বর্তমান সরকার একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করে যাবে, যা পরবর্তী সরকার এসে বাস্তবায়ন করবে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, পে কমিশনের জন্য আলাদা কমিশন কাজ করছে। তিনটি রিপোর্ট পাওয়ার পর সেগুলো যাচাই-বাছাই করতে হবে। এরপর প্রশাসনিক প্রক্রিয়া যেমন সচিব কমিটি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনা, তারপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত মতামত— এসব প্রক্রিয়া শেষ হলে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। তাই আমাদের সময়ে তা সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা নাও যেতে পারে। আমরা একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করে যাচ্ছি, যা পরবর্তী সরকার বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বলেন, আমাদের সময়ে এটা বাস্তবায়ন করা কিছুটা অনিশ্চিত, কারণ এখানে সময়, প্রশাসনিক প্রক্রিয়া ও অর্থের সংস্থান সবকিছু বিবেচনা করতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে অর্থের ব্যবস্থা করা। তবে আমরা এই উদ্যোগ নিজেরা নিয়েছি, ৭-৮ বছর ধরে কিছু হয়নি। মাত্র ১২ মাসের মধ্যে আমরা নিজেরা কাজ শুরু করেছি, তাই ক্ষোভ নয়, ধৈর্য ধরা উচিত।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আগামী সরকারকে পে কমিশনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। পে স্কেল ছাড়াও অন্যান্য সামাজিক খাতের ব্যয় ও বাজেট ব্যবস্থাপনার ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।’

তিনি আরও জানান, রোজার আগে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে তেল ও চিনি আমদানি করা হবে। এছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় ৪০ হাজার ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’ কেনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বন্দরে আটকে থাকা পুরোনো গাড়িগুলো স্ক্র্যাপ করে বিক্রি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কারণ বাইরে বিক্রি করলে তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। পাশাপাশি সংশোধিত বাজেটের আকার কিছুটা কমানো হবে, যদিও টাকার অঙ্কে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না বলেও জানান তিনি।

আপনারা পে-স্কেল দিতে পারবেন কি না? সাংবাদিকেদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, পে কমিশনের কাজটা কিন্তু অত্যন্ত জটিল। ওরা একেবারে স্বাধীনভাবে কাজ করবে। ওখানে কিন্তু আমাদের কোনো রকম ভূমিকা নেই। পে-কমিশনে- ওইখানে সিভিল পে কমিশন, আর্মিদের জন্য আলাদা একটা .. আছে। এখন ওই তিনটা রিপোর্ট পাওয়ার পরে ওটাকে আবার কনসিসটেন্ট লাগবে। একটা একরকম দেবে, সেটা একটু সময় লাগে। সে জন্য আমি বলেছি যে আমাদের সময় এটা করতে পারবো কি না, এটা কিছুটা আনসার্টেনটি।

তিনি বলেন, এর কারণ এটা আবার এই তিনটা রিপোর্ট দেখে ওটাকে আবার রিকনসাইল (সমন্বয়) করতে হবে। রিকনসাইল করার পরে অ্যাডমিনিস্ট্রেট কতগুলো প্রসেস আছে। সচিব কমিটি আছে ওরা দেখবে। তারপর ফাইনান্স দেখে- কত বিষয় সম্পৃক্ত রয়েছে।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সেজন্য আমি বলেছি যে আমরা পুরাপুরি একটা সেটআপ, রিপোর্টটা পাওয়ার পর মোটামুটি একটা ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে যাবো। কারণ আমরা এই সময়ের মধ্যে যদি এটা রিকনসাল করতে পারি করবো। এখানে সবচেয়ে বড় হলো অর্থের সংস্থান।

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, তিনটা বিশেষ ধরনের পে-স্কেল আছে, এটা রিকনসাল করবে। অতএব আমার মনে হয় এটা ওরা একটু ধৈর্য ধরুক। অর্থের সংস্থান আছে, এখন যদি মনে করে যে যেই পে-স্কেল আছে সেই পে-স্কেল যদি আমরা বলে দেই ওটাই থাকবে, তাহলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। এখানে বাজেটের ব্যাপার আছে তো। অন্যান্য সেক্টর আছে তো আমাদের বাজেটে। পে-স্কেল ছাড়াও তো আমরা স্বাস্থ্য খাতে, শিক্ষা খাতে অন্যান্য উন্নয়ন ব্যয় আছে। সেগুলো তো আমার দেখতে হবে।

জাতিসংঘের তিনটি সংস্থা একটি রিপোর্ট দিয়েছে- আমাদের দেশে প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে এবং ১৬ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগবে। একজন সাংবাদিক এমন প্রশ্ন করলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ওরা যেটা দিয়েছে, ওদের তো কতগুলো ইন্টারন্যাশনাল নর্মস আছে। তবে বাংলাদেশের যে একেবারে হাঙ্গারৃ এমন না। আপনি দেখবেন এই সেক্টরে কিন্তু আমরা মোটামুটি পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের চেয়েও বেটার। তবে আমরা একটু সজাগ যে একেবারে ব্যালেন্স ফুড এবং যেন খাদ্যের কোনো সমস্যা না হয়।

তিনি বলেন, গত পরশু আমরা মিটিং করলাম, ওখানে আমরা নিশ্চিত করেছি আমাদের স্টক যেন যথেষ্ট থাকে এবং একই সঙ্গে আমরা অলরেডি প্রেডিক্ট করেছি। একটু সেফ সাইডে থাকার জন্য দামও একটু বাড়িয়ে দিয়েছি। ধানের ও চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছি। দুইটা দিক আমরা দেখছি যাতে স্টকটা বাড়ে, সঙ্গে সঙ্গে কৃষকের যেন ক্ষতি না হয়।

বাজেট সংশোধনের সময় হয়ে আসছে, আপনারা যখন বাজেট দিয়েছিলেন এবং এডিপির যে সাইজ দিয়েছিলেন তখন বলেছিলেন এটা রিয়েলিস্টিক, প্রেগমেটিক (বাস্তবধর্মী) উপায়েই করা হয়েছে। এখন শোনা যাচ্ছে স্যার বাজেটকে আবার কমিয়ে আনা হবে। তাহলে আগের যে প্রেগমেটিক উপায়ে রিয়েলিস্টিক বাজেট করা হয়েছিল সেটা কী আমাদের ভুল ছিল বা সমস্যা ছিল— এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ওই সময়ের প্রেক্ষাপটে ওটা রিয়েলিস্টিক ছিল। আমরা যখন বাজেট বাস্তবায়নে যাই, তখন নানা রকম বিষয় আসে। প্রথমত অর্থসংস্থানের ব্যাপার আছে। এনবিআর বন্ধ থাকার পরে আপনারা দেখেছেন আমরা যাচাই করছি, তারপর যারা বাস্তবায়ন করছে তাদের ব্যাপারে কিছুটা বিষয় আছে, আর সবাই তো বাস্তবায়ন করতে পারেনি। অনেক রকম বিষয় চলে আসে।

তিনি বলেন, একেবারে ড্রাস্টিকালি (ব্যাপকভাবে) আমাদের বাজেট থেকে যে খুব একটা বিরাট ব্যত্যয় ঘটবে তা কিন্তু না। মোটামুটি আমরা শুধু প্রবৃদ্ধি বলেছি, প্রবৃদ্ধি আমরা কমিয়েছি, আর মূল্যস্ফীতি আমরা বলছি ৫, সেটা ৭ করেছি। এখন এই দুইটা মেজর জিনিস আমরা রেখেছি। আর বাকিগুলো টাকার অংকে খুব বেশি হেরফের হবে না মনে হয়। আমরা দেখি শেষ পদ্ধতিতে কতটুকু টেকে।

রাজস্ব বোর্ড এমনি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে, বারবার এ অবস্থায় পেট্রোলিয়ামে কর্পোরেশনের কাছে রাজস্ব পাওনা হলো প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা, একইভাবে পেট্রোবাংলার কাছে পাওনা হলো প্রায় দুই হাজার ৫০০ কোটি, এই বকেয়া টাকা উদ্ধারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না— জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা তাগাদা দিচ্ছি। ওদের অনেক রকম ফ্যাক্টর আছে। আমরা যে দামে পেট্রোল কিনি, সেই দামে তো বিক্রি করতে পারছি না। আমরা তো প্রাইস অ্যাডজাস্ট করতে পারছি না।

তিনি বলেন, ওদের দিকটাও আছে যে পুরপুরি আমরা ওদেরকে এলাও করছি না ক্যারিব্রেনেট করার জন্য আমরা যদি দিতাম যে তোমরা প্রাইস বাড়িয়ে দাও অন্তত তারা দিতে পারতো। সবদিক দেখতে হবে তো আমরা কনসার্ন যে রাজস্ব বাড়ানোর জন্য। আমরা রাজস্ব বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছি। ট্যাক্স যেন ফাঁকি না দেয়, লিকেজ যেন না হয়৷ ওইদিকে বেশি নজর দিয়েছি। সবচেয়ে বেশি কিন্তু এসে ট্যাক্সটা এফেক্ট করার আদেশটা ওইখানে।

তিনি বলেন, তাদের দিক থেকেও একটি বিষয় আছে যে, আমরা পুরোপুরি তাদের ক্যালিব্রেশন করার (দাম সমন্বয়ের) অনুমতি দিচ্ছি না। আমরা যদি সেই অনুমতি দিতাম যে তোমরা দাম বাড়িয়ে দাও, তাহলে অন্তত তারা করত। সব দিক দেখতে হবে। আমরা রাজস্ব বাড়ানোর বিষয়ে সচেতন। রাজস্ব বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছি। বিশেষ করে, ট্যাক্স যেন ফাঁকি না দেওয়া হয় এবং রাজস্বে যেন কোনো লিকেজ (ফাঁকফোকর) না থাকে, সেদিকে বেশি নজর দিয়েছি। সবচেয়ে বেশি প্রভাব কিন্তু পড়েছে ওই ট্যাক্সকে কার্যকর করার নির্দেশনার ওপরই।