Dhaka বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে, ১৩ তারিখ নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই : ডিএমপি কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঢাকা মহানগরীতে বর্তমানে অপরাধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ঢাকাবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। ১৩ নভেম্বর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা প্রস্তুত আছি।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ঢাকা মহানগরীর চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি-সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক ভালো। এপ্রিল-মে মাসে যে হারে ছিনতাই ও দিনের বেলায় চাপাতি হামলার ঘটনা ঘটত, এখন তা অনেক কমেছে। বিশেষ করে মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বিক্ষোভ বা আন্দোলনেও পুলিশ সংযম দেখিয়েছে।

মো. সাজ্জাত আলী বলেন, আমরা কোনো মারণাস্ত্র বা লাঠি ব্যবহার না করেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। ডিএমপির নীতিই হচ্ছে কোনো নাগরিকের গায়ে হাত তোলা যাবে না। মানুষ যদি দাবি নিয়ে আসে, আমরা তাদের বুঝিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার পথেই সমস্যা সমাধান চাই।

১৩ নভেম্বর রাজনৈতিক নিষিদ্ধ দলের সম্ভাব্য নাশকতার আশঙ্কা প্রসঙ্গে কমিশনার বলেন, একটি-দুটি মোটরসাইকেল থেকে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে, তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ সব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের কাজ চলছে। ঢাকাবাসী আমাদের সঙ্গে আছে– তাই কোনো অঘটন ঘটলে তা মোকাবিলার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্যরা কি সাম্প্রতিক নাশকতার সঙ্গে জড়িত? জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমরা সম্প্রতি বেশ কয়েকজন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের পদধারী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছি। গত সপ্তাহে শেরেবাংলা নগর এলাকায়ও এমন কিছু গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

সিসিটিভি স্থাপন প্রসঙ্গে তিনি ঢাকাবাসীকে আহ্বান জানান কমিশনার বলেন, ‘গুলশানের মতো বিভিন্ন এলাকায় যেভাবে সমিতি উদ্যোগে ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে, অন্য এলাকাগুলোর বাসিন্দারাও যদি এভাবে উদ্যোগ নেয়, তাহলে নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে।

হাইকোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা প্রসঙ্গে কমিশনার সাজ্জাত আলী বলেন, মানুষ বিচার পাওয়ার জন্য আদালতে যায়। আমরা কখনোই বিচারপ্রার্থীদের বাধা দিতে চাই না। তবে নির্ধারিত দিনে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, অপরিচিত কাউকে আশ্রয় দেবেন না। নিজের মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাড়া দেওয়ার আগে যাচাই করুন। কোনো দুর্বৃত্তের হাতে চলে যাচ্ছে কি না তা খেয়াল রাখবেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, অন্যের মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাড়া নিয়ে কোনো দুর্বৃত্ত নাশকতা না করতে পারে সেজন্য যানবাহন ভাড়া দেওয়ার আগে যাচাই করে নেবেন। সন্দেহজনক কাউকে দেখলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে জানাবেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৭টি মামলা ও ৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অক্টোবর থেকে ১৪টি ঝটিকা মিছিল করে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। অক্টোবর থেকে ঢাকায় এ পর্যন্ত ৫৫২ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি।

নাশকতা যারা করে তাদের প্রতিহত করবে ঢাকাবাসী বলেও উল্লেখ করেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার।

রাজধানীর উত্তরার জসীম উদদীন রোড ও মৌচাক মার্কেট এলাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা ককটেল নিক্ষেপ করেছে বলে জানিয়ে শেখ মো. সাজ্জাত আলী। এ ঘটনায় পুলিশের একজন সার্জেন্ট আহত হয়েছেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে গতকাল সোমবার ককটেল নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। একটি ঘটনা উত্তরার জসীম উদদীন রোডে আরেকটি মৌচাকে। ফ্লাইওভার থেকে জসীম উদদীন রোডে পুলিশ সার্জেন্টকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। ককটেলটি সার্জেন্টের পায়ে লাগে। এতে তিনি আহত হন। মৌচাক মার্কেটে ডিউটিরত অবস্থায় পুলিশকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হলেও কোনো পুলিশ সদস্যের ওপর পড়েনি।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, হেলমেট ও মাস্ক পরে ভোরবেলা অথবা দিনের ব্যস্ততম সময়ে টার্গেট স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ করে দ্রুত ঘটনাস্থলত্যাগ করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি রাজনৈতিক দল। অনেক সময় ককটেল বিস্ফোরণে অপ্রাপ্তবয়স্কদেরও ব্যবহার করা হচ্ছে।

শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, কিছুদিন ধরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন অপপ্রচারের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির প্রচেষ্টা করছে। বিশেষ করে ঢাকা শহরের। গত কয়েকদিনে ঢাকা শহরে ককটেল সদৃশ্য বস্তু নিক্ষেপ এবং বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোসহ আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট করার অপচেষ্টা রয়েছে।

তিনি বলেন, গত ১ নভেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। গত দুদিনে ৯টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৭টি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং গত ২৪ ঘণ্টায় এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে ৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার অপচেষ্টা করছে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এরই অংশ হিসেবে রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে। অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ১৪টি ঝটিকা মিছিল করেছে তারা। স্বল্পস্থায়ী এসব ঝটিকা মিছিলের ছবি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মো. সরওয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলামসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিএনপি হচ্ছে গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন একটি রাজনৈতিক দল : রিজভী

ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে, ১৩ তারিখ নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই : ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৯:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঢাকা মহানগরীতে বর্তমানে অপরাধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ঢাকাবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। ১৩ নভেম্বর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা প্রস্তুত আছি।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ঢাকা মহানগরীর চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি-সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক ভালো। এপ্রিল-মে মাসে যে হারে ছিনতাই ও দিনের বেলায় চাপাতি হামলার ঘটনা ঘটত, এখন তা অনেক কমেছে। বিশেষ করে মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বিক্ষোভ বা আন্দোলনেও পুলিশ সংযম দেখিয়েছে।

মো. সাজ্জাত আলী বলেন, আমরা কোনো মারণাস্ত্র বা লাঠি ব্যবহার না করেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। ডিএমপির নীতিই হচ্ছে কোনো নাগরিকের গায়ে হাত তোলা যাবে না। মানুষ যদি দাবি নিয়ে আসে, আমরা তাদের বুঝিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার পথেই সমস্যা সমাধান চাই।

১৩ নভেম্বর রাজনৈতিক নিষিদ্ধ দলের সম্ভাব্য নাশকতার আশঙ্কা প্রসঙ্গে কমিশনার বলেন, একটি-দুটি মোটরসাইকেল থেকে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে, তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ সব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের কাজ চলছে। ঢাকাবাসী আমাদের সঙ্গে আছে– তাই কোনো অঘটন ঘটলে তা মোকাবিলার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্যরা কি সাম্প্রতিক নাশকতার সঙ্গে জড়িত? জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমরা সম্প্রতি বেশ কয়েকজন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের পদধারী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছি। গত সপ্তাহে শেরেবাংলা নগর এলাকায়ও এমন কিছু গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

সিসিটিভি স্থাপন প্রসঙ্গে তিনি ঢাকাবাসীকে আহ্বান জানান কমিশনার বলেন, ‘গুলশানের মতো বিভিন্ন এলাকায় যেভাবে সমিতি উদ্যোগে ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে, অন্য এলাকাগুলোর বাসিন্দারাও যদি এভাবে উদ্যোগ নেয়, তাহলে নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে।

হাইকোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা প্রসঙ্গে কমিশনার সাজ্জাত আলী বলেন, মানুষ বিচার পাওয়ার জন্য আদালতে যায়। আমরা কখনোই বিচারপ্রার্থীদের বাধা দিতে চাই না। তবে নির্ধারিত দিনে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, অপরিচিত কাউকে আশ্রয় দেবেন না। নিজের মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাড়া দেওয়ার আগে যাচাই করুন। কোনো দুর্বৃত্তের হাতে চলে যাচ্ছে কি না তা খেয়াল রাখবেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, অন্যের মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাড়া নিয়ে কোনো দুর্বৃত্ত নাশকতা না করতে পারে সেজন্য যানবাহন ভাড়া দেওয়ার আগে যাচাই করে নেবেন। সন্দেহজনক কাউকে দেখলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে জানাবেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৭টি মামলা ও ৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অক্টোবর থেকে ১৪টি ঝটিকা মিছিল করে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। অক্টোবর থেকে ঢাকায় এ পর্যন্ত ৫৫২ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি।

নাশকতা যারা করে তাদের প্রতিহত করবে ঢাকাবাসী বলেও উল্লেখ করেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার।

রাজধানীর উত্তরার জসীম উদদীন রোড ও মৌচাক মার্কেট এলাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা ককটেল নিক্ষেপ করেছে বলে জানিয়ে শেখ মো. সাজ্জাত আলী। এ ঘটনায় পুলিশের একজন সার্জেন্ট আহত হয়েছেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে গতকাল সোমবার ককটেল নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। একটি ঘটনা উত্তরার জসীম উদদীন রোডে আরেকটি মৌচাকে। ফ্লাইওভার থেকে জসীম উদদীন রোডে পুলিশ সার্জেন্টকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। ককটেলটি সার্জেন্টের পায়ে লাগে। এতে তিনি আহত হন। মৌচাক মার্কেটে ডিউটিরত অবস্থায় পুলিশকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হলেও কোনো পুলিশ সদস্যের ওপর পড়েনি।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, হেলমেট ও মাস্ক পরে ভোরবেলা অথবা দিনের ব্যস্ততম সময়ে টার্গেট স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ করে দ্রুত ঘটনাস্থলত্যাগ করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি রাজনৈতিক দল। অনেক সময় ককটেল বিস্ফোরণে অপ্রাপ্তবয়স্কদেরও ব্যবহার করা হচ্ছে।

শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, কিছুদিন ধরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন অপপ্রচারের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির প্রচেষ্টা করছে। বিশেষ করে ঢাকা শহরের। গত কয়েকদিনে ঢাকা শহরে ককটেল সদৃশ্য বস্তু নিক্ষেপ এবং বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোসহ আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট করার অপচেষ্টা রয়েছে।

তিনি বলেন, গত ১ নভেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। গত দুদিনে ৯টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৭টি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং গত ২৪ ঘণ্টায় এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে ৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার অপচেষ্টা করছে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এরই অংশ হিসেবে রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে। অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ১৪টি ঝটিকা মিছিল করেছে তারা। স্বল্পস্থায়ী এসব ঝটিকা মিছিলের ছবি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মো. সরওয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলামসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।