Dhaka বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে গণসংযোগকালে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গুলিবিদ্ধ, নিহত ১

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

নির্বাচনী গণসংযোগে নেমে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। এ ঘটনায় তার সাথে থাকা সরওয়ার হোসেন বাবলা নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন।

বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলার হামজারবাগ এলাকায় গণসংযোগের সময় দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এরশাদ উল্লাহকে নগরীর অনন্যা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা তাকে শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার দুইদিন পর কোনো প্রার্থীর গণসংযোগে এটি প্রথম সহিংসতার ঘটনা। নির্বাচনী প্রচারের শুরুতেই এমন সন্ত্রাসী ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির নেতারা। নিহত যুবকের নাম সরওয়ার হোসেন বাবলা। তিনি পুলিশের খাতায় তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় আরও একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান শুরুর করার কথাও জানান নগর পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এরশাদ উল্লাহ মাগরিবের নামাজের পর স্থানীয় মসজিদ থেকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগে বের হন। এ সময় তার পাশে থাকা সরওয়ার বাবলার গায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে এক যুবক গুলি করে। একটি গুলি তার বুকে বিদ্ধ হয়। অপর একটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে এরশাদ উল্লাহর পায়ে লাগে। এ সময় আরও একজন যুবক গুলিবিদ্ধ হন। আকস্মিক গুলির ঘটনায় নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। এ সুযোগে অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে এরশাদ উল্লাহ মাটিতে পড়ে যান। একই সময়ে সরওয়ার বাবলাও রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি করেন। এরকম একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর নেতা-কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে এরশাদ উল্লাহকে উদ্ধার করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান। গুলিবিদ্ধ অপর দুই যুবককে হাসপাতালে নেয়া হলে সরওয়ার বাবলাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

গুলিবিদ্ধ সরওয়ার হোসেন বাবলা

স্থানীয়রা জানান, সরওয়ার হোসেন বাবলা ও ছোট সাজ্জাদ গ্রুপের সন্ত্রাসীদের মধ্যে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। কারাবন্দি ছোট সাজ্জাদের অনুসারীরা বাবলাকে কাছে পেয়ে তাকে গুলি করে। স্থানীয় দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরোধের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসীদের দুটি গ্রুপই বর্তমানে বিএনপি সমর্থিত। এরশাদ উল্লাহ নগর বিএনপির আহ্বায়ক এবং আট আসনে বিএনপির একক প্রার্থী। তার প্রার্থীতা নিয়ে দলের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। বিএনপির নেতারা বলছেন, এটি দুটি সন্ত্রাসী গ্রুপের অভ্যন্তরীণ বিরোধের ঘটনা।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী বেলাল উদ্দিন বলেন, নগরীর তিন নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ডে নির্বাচনি সভা করেছেন এরশাদ উল্লাহ ভাই। সভা শেষ করে তিনি সেখানে একটি মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়েন। মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর তিনি হেঁটে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে গুলি করে। এদিকে এরশাদ উল্লাহ’র ওপর হামলার প্রতিবাদে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। শত শত নেতা-কর্মী এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে জড়ো হন।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম বলেন, এরশাদ উল্লাহ নির্বাচনি প্রচারে গিয়েছিলেন হাজীপাড়া এলাকায়। সেখানে উনার ওপর হামলা হয়েছে। উনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালে আছেন। উনি ঝুঁকিমুক্ত আছেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। গুলিতে নিহত সরওয়ার বাবলা শীর্ষ সন্ত্রাসী জানিয়ে তিনি বলেন, অস্ত্রসহ গ্রেফতারের পর সম্প্রতি সে জামিনে বেরিয়ে আসে। কারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে, অভিযান শুরু হয়েছে।

আবহাওয়া

খুরশীদ আলমকে হাইকোর্টের বিচারপতি পদ থেকে অপসারণ

চট্টগ্রামে গণসংযোগকালে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গুলিবিদ্ধ, নিহত ১

প্রকাশের সময় : ০৭:২৬:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

নির্বাচনী গণসংযোগে নেমে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। এ ঘটনায় তার সাথে থাকা সরওয়ার হোসেন বাবলা নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন।

বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলার হামজারবাগ এলাকায় গণসংযোগের সময় দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এরশাদ উল্লাহকে নগরীর অনন্যা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা তাকে শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার দুইদিন পর কোনো প্রার্থীর গণসংযোগে এটি প্রথম সহিংসতার ঘটনা। নির্বাচনী প্রচারের শুরুতেই এমন সন্ত্রাসী ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির নেতারা। নিহত যুবকের নাম সরওয়ার হোসেন বাবলা। তিনি পুলিশের খাতায় তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় আরও একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান শুরুর করার কথাও জানান নগর পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এরশাদ উল্লাহ মাগরিবের নামাজের পর স্থানীয় মসজিদ থেকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগে বের হন। এ সময় তার পাশে থাকা সরওয়ার বাবলার গায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে এক যুবক গুলি করে। একটি গুলি তার বুকে বিদ্ধ হয়। অপর একটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে এরশাদ উল্লাহর পায়ে লাগে। এ সময় আরও একজন যুবক গুলিবিদ্ধ হন। আকস্মিক গুলির ঘটনায় নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। এ সুযোগে অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে এরশাদ উল্লাহ মাটিতে পড়ে যান। একই সময়ে সরওয়ার বাবলাও রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি করেন। এরকম একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর নেতা-কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে এরশাদ উল্লাহকে উদ্ধার করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান। গুলিবিদ্ধ অপর দুই যুবককে হাসপাতালে নেয়া হলে সরওয়ার বাবলাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

গুলিবিদ্ধ সরওয়ার হোসেন বাবলা

স্থানীয়রা জানান, সরওয়ার হোসেন বাবলা ও ছোট সাজ্জাদ গ্রুপের সন্ত্রাসীদের মধ্যে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। কারাবন্দি ছোট সাজ্জাদের অনুসারীরা বাবলাকে কাছে পেয়ে তাকে গুলি করে। স্থানীয় দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরোধের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসীদের দুটি গ্রুপই বর্তমানে বিএনপি সমর্থিত। এরশাদ উল্লাহ নগর বিএনপির আহ্বায়ক এবং আট আসনে বিএনপির একক প্রার্থী। তার প্রার্থীতা নিয়ে দলের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। বিএনপির নেতারা বলছেন, এটি দুটি সন্ত্রাসী গ্রুপের অভ্যন্তরীণ বিরোধের ঘটনা।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী বেলাল উদ্দিন বলেন, নগরীর তিন নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ডে নির্বাচনি সভা করেছেন এরশাদ উল্লাহ ভাই। সভা শেষ করে তিনি সেখানে একটি মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়েন। মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর তিনি হেঁটে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে গুলি করে। এদিকে এরশাদ উল্লাহ’র ওপর হামলার প্রতিবাদে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। শত শত নেতা-কর্মী এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে জড়ো হন।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম বলেন, এরশাদ উল্লাহ নির্বাচনি প্রচারে গিয়েছিলেন হাজীপাড়া এলাকায়। সেখানে উনার ওপর হামলা হয়েছে। উনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালে আছেন। উনি ঝুঁকিমুক্ত আছেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। গুলিতে নিহত সরওয়ার বাবলা শীর্ষ সন্ত্রাসী জানিয়ে তিনি বলেন, অস্ত্রসহ গ্রেফতারের পর সম্প্রতি সে জামিনে বেরিয়ে আসে। কারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে, অভিযান শুরু হয়েছে।