Dhaka বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই সনদ শুধু কাগজে নয়, বাস্তবায়নের নির্ভরযোগ্যতা থাকতে হবে : নাহিদ ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জুলাই সনদ শুধু কাগজে নয়, বাস্তবায়নের নির্ভরযোগ্যতা থাকতে হবে। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পরিষ্কার না হলে স্বাক্ষর অর্থহীন হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, প্রথমে কখন, কীভাবে ও কার মাধ্যমে এই সনদ বাস্তবায়িত হবে, তার একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে। এরপরই আমরা সিদ্ধান্ত নেব, স্বাক্ষর করব কি না।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদের কাগুজে মূল্যে আমরা বিশ্বাসী নই। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কিভাবে হবে, সেটার নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই এনসিপি স্বাক্ষর করবে। সে ক্ষেত্রে আমরা সাংবিধানিক একটি আদেশের কথা বলেছি। যে আদেশটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জারি করবেন।

তিন দাবির বিষয়ে মনে করিয়ে দিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, জুলাই সনদের আদেশ শুধু ড. মুহাম্মদ ইউনূস জারি করবেন, নোট অব ডিসেন্টের কোনো কার্যকারিতা থাকবে না ও গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে—এই তিনি দাবি বিবেচনা করলে আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করব।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমরা উদ্বেগ জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশনের গঠন প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন কমিশনের বর্তমান আচরণ আমাদের নিরপেক্ষ মনে হচ্ছে না, স্বচ্ছ হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম করার কথা ছিল সেগুলো করছে না।

নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনে পক্ষপাতিত্ব দেখা যাচ্ছে, কিছু কিছু দলের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ দেখা যাচ্ছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে দায় সরকারের ওপর আসবে। তাই এ বিষয়ে সরকারকে আমরা বলেছি। আমরা মনে করি এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন প্রয়োজন।

এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে আমরা অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জুলাই গণহত্যার বিচারের বিষয়টি। আমরা আজকে দেখেছি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এবং অভিযোগের কারণে সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যকে আদালতে আনা হয়েছে। আমরা এটাকে সাধুবাদ জানিয়েছি। সরকার এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতি আমরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি। ন্যায়বিচারের একটি ধাপ আমরা আগাচ্ছি।

তিনি বলেন, এর পাশাপাশি সারাদেশে শহীদ এবং আহত পরিবারের পক্ষ থেকে যেসব মামলা হয়েছে, সেই মামলাগুলোর বিষয়ে সরকারের কি পদক্ষেপ। পত্র পত্রিকায় আমরা দেখতে পাচ্ছি জামিনে আসামিরা ছাড়া পাচ্ছে। শহীদ পরিবার এবং আহতদের হুমকি দিচ্ছে। শহীদ পরিবার, আহতদের নিরাপত্তা এবং বিচারের যে রোডম্যাপ আমরা চেয়েছি সেই রোডম্যাপ যেন প্রকাশ করা হয়। ৮০০ এর অধিক যে মামলাগুলো হয়েছে সে মামলাগুলোর এখন কি অবস্থা, সেগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে, কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা জুলাই সনদ নিয়ে কথা বলেছি। জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে এবং এনসিপি সেখানে অংশগ্রহণ করেনি। ফলে আমরা আমাদের অবস্থান সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। ঐকমত্য কমিশনের কাছেও আমরা তুলে ধরেছি। আমরা সেই কথাগুলোই পুনর্ব্যক্ত করেছি যে, জুলাই সনদের শুধু কাগুজে মূল্যে আমরা বিশ্বাসী নই। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, সেটির নিশ্চয়তা পাওয়ার পরেই আমরা সনদে স্বাক্ষর করবো।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ বলেন, জনপ্রশাসনের যে বদলি হচ্ছে সেগুলো কিসের ভিত্তিতে হচ্ছে। সেগুলো দক্ষতা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে হচ্ছে কি-না? আমরা দেখতে পাচ্ছি এবং শুনতে পাচ্ছি যে, প্রশাসনের বিভিন্ন ভাগ বাটোয়ারা হচ্ছে। বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে যারা পরিচয় দেয় তারা প্রশাসন, এসপি, ডিসি ভাগ বাটোয়ারা করছে। নির্বাচনের জন্য তারা তালিকা করছে এবং সেগুলো সরকারকে দিচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদের ভেতর থেকেও সেই দলগুলোকে সহায়তা করা হচ্ছে। এভাবে চললে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। উপদেষ্টা পরিষদে যাদের বিরুদ্ধে এই সংশ্লিষ্টতাগুলো রয়েছে তাদের বিষয় যেন প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেন।

উপদেষ্টা পরিষদের দক্ষতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বলেছি- ছাত্র উপদেষ্টাদের যদি কোনো নির্দিষ্ট দলের সংশ্লিষ্ট হিসেবে দেখা হয়, তাহলে অন্যান্য দলের সুপারিশে যারা উপদেষ্টা পরিষদে ঠাঁই পেয়েছেন তাদেরও একইভাবে দেখতে হবে।’

প্রশাসনে বদলি ও পদায়ন অনেক ক্ষেত্রেই যোগ্যতার ভিত্তিতে নয় বরং রাজনৈতিক বিবেচনায় হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম বলেন, এতে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদেও এমন সদস্য আছেন, যারা রাজনৈতিকভাবে সংযুক্ত বা প্রভাবিত।

তিনি আরও বলেন, প্রশাসন ও উপদেষ্টা পরিষদ যেন পার্টি রাজনীতির বাহক না হয়ে স্বচ্ছ ও দক্ষভাবে কাজ করে, সেটিই এখন জরুরি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে নই। তবে বর্তমান সরকার যেন নিরপেক্ষভাবে তত্ত্বাবধায়ক-সদৃশ দায়িত্ব পালন করে, সেটাই আমরা চাই।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু জুলাই সনদ এখনও আলোচনার পর্যায়ে, তাই এখনই নতুন সরকার বা উপদেষ্টা পরিষদ সম্পূর্ণ পরিবর্তন করা আইনগতভাবে উপযুক্ত নয়। এ বিষয়ে এনসিপি সংবিধান সংস্কার, গণভোট এবং আইন প্রক্রিয়ার রূপরেখা চেয়েছে।

নির্বাচন কমিশন এনসিপিকে নিবন্ধন ও ‘শাপলা’ প্রতীক না দেয়, তবে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, এটি শুধু প্রতীকের বিষয় নয়, বরং কমিশনের ন্যায্যতা ও নিরপেক্ষতার প্রশ্ন।

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মামলার প্রসঙ্গ টেনে নাহিদ ইসলাম প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচন কমিশন কি নির্বাচনের প্রস্তুতিতে যথেষ্ট কার্যকর ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

বৈঠকে এনসিপির পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। প্রতিনিধিদলে আরও আছেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সেন্টমার্টিন ভ্রমণে সরকারের নতুন নির্দেশনা জারি

জুলাই সনদ শুধু কাগজে নয়, বাস্তবায়নের নির্ভরযোগ্যতা থাকতে হবে : নাহিদ ইসলাম

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৯:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জুলাই সনদ শুধু কাগজে নয়, বাস্তবায়নের নির্ভরযোগ্যতা থাকতে হবে। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পরিষ্কার না হলে স্বাক্ষর অর্থহীন হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, প্রথমে কখন, কীভাবে ও কার মাধ্যমে এই সনদ বাস্তবায়িত হবে, তার একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে। এরপরই আমরা সিদ্ধান্ত নেব, স্বাক্ষর করব কি না।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদের কাগুজে মূল্যে আমরা বিশ্বাসী নই। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কিভাবে হবে, সেটার নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই এনসিপি স্বাক্ষর করবে। সে ক্ষেত্রে আমরা সাংবিধানিক একটি আদেশের কথা বলেছি। যে আদেশটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জারি করবেন।

তিন দাবির বিষয়ে মনে করিয়ে দিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, জুলাই সনদের আদেশ শুধু ড. মুহাম্মদ ইউনূস জারি করবেন, নোট অব ডিসেন্টের কোনো কার্যকারিতা থাকবে না ও গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে—এই তিনি দাবি বিবেচনা করলে আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করব।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমরা উদ্বেগ জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশনের গঠন প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন কমিশনের বর্তমান আচরণ আমাদের নিরপেক্ষ মনে হচ্ছে না, স্বচ্ছ হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম করার কথা ছিল সেগুলো করছে না।

নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনে পক্ষপাতিত্ব দেখা যাচ্ছে, কিছু কিছু দলের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ দেখা যাচ্ছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে দায় সরকারের ওপর আসবে। তাই এ বিষয়ে সরকারকে আমরা বলেছি। আমরা মনে করি এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন প্রয়োজন।

এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে আমরা অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জুলাই গণহত্যার বিচারের বিষয়টি। আমরা আজকে দেখেছি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এবং অভিযোগের কারণে সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যকে আদালতে আনা হয়েছে। আমরা এটাকে সাধুবাদ জানিয়েছি। সরকার এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতি আমরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি। ন্যায়বিচারের একটি ধাপ আমরা আগাচ্ছি।

তিনি বলেন, এর পাশাপাশি সারাদেশে শহীদ এবং আহত পরিবারের পক্ষ থেকে যেসব মামলা হয়েছে, সেই মামলাগুলোর বিষয়ে সরকারের কি পদক্ষেপ। পত্র পত্রিকায় আমরা দেখতে পাচ্ছি জামিনে আসামিরা ছাড়া পাচ্ছে। শহীদ পরিবার এবং আহতদের হুমকি দিচ্ছে। শহীদ পরিবার, আহতদের নিরাপত্তা এবং বিচারের যে রোডম্যাপ আমরা চেয়েছি সেই রোডম্যাপ যেন প্রকাশ করা হয়। ৮০০ এর অধিক যে মামলাগুলো হয়েছে সে মামলাগুলোর এখন কি অবস্থা, সেগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে, কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা জুলাই সনদ নিয়ে কথা বলেছি। জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে এবং এনসিপি সেখানে অংশগ্রহণ করেনি। ফলে আমরা আমাদের অবস্থান সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। ঐকমত্য কমিশনের কাছেও আমরা তুলে ধরেছি। আমরা সেই কথাগুলোই পুনর্ব্যক্ত করেছি যে, জুলাই সনদের শুধু কাগুজে মূল্যে আমরা বিশ্বাসী নই। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, সেটির নিশ্চয়তা পাওয়ার পরেই আমরা সনদে স্বাক্ষর করবো।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ বলেন, জনপ্রশাসনের যে বদলি হচ্ছে সেগুলো কিসের ভিত্তিতে হচ্ছে। সেগুলো দক্ষতা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে হচ্ছে কি-না? আমরা দেখতে পাচ্ছি এবং শুনতে পাচ্ছি যে, প্রশাসনের বিভিন্ন ভাগ বাটোয়ারা হচ্ছে। বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে যারা পরিচয় দেয় তারা প্রশাসন, এসপি, ডিসি ভাগ বাটোয়ারা করছে। নির্বাচনের জন্য তারা তালিকা করছে এবং সেগুলো সরকারকে দিচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদের ভেতর থেকেও সেই দলগুলোকে সহায়তা করা হচ্ছে। এভাবে চললে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। উপদেষ্টা পরিষদে যাদের বিরুদ্ধে এই সংশ্লিষ্টতাগুলো রয়েছে তাদের বিষয় যেন প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেন।

উপদেষ্টা পরিষদের দক্ষতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বলেছি- ছাত্র উপদেষ্টাদের যদি কোনো নির্দিষ্ট দলের সংশ্লিষ্ট হিসেবে দেখা হয়, তাহলে অন্যান্য দলের সুপারিশে যারা উপদেষ্টা পরিষদে ঠাঁই পেয়েছেন তাদেরও একইভাবে দেখতে হবে।’

প্রশাসনে বদলি ও পদায়ন অনেক ক্ষেত্রেই যোগ্যতার ভিত্তিতে নয় বরং রাজনৈতিক বিবেচনায় হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম বলেন, এতে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদেও এমন সদস্য আছেন, যারা রাজনৈতিকভাবে সংযুক্ত বা প্রভাবিত।

তিনি আরও বলেন, প্রশাসন ও উপদেষ্টা পরিষদ যেন পার্টি রাজনীতির বাহক না হয়ে স্বচ্ছ ও দক্ষভাবে কাজ করে, সেটিই এখন জরুরি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে নই। তবে বর্তমান সরকার যেন নিরপেক্ষভাবে তত্ত্বাবধায়ক-সদৃশ দায়িত্ব পালন করে, সেটাই আমরা চাই।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু জুলাই সনদ এখনও আলোচনার পর্যায়ে, তাই এখনই নতুন সরকার বা উপদেষ্টা পরিষদ সম্পূর্ণ পরিবর্তন করা আইনগতভাবে উপযুক্ত নয়। এ বিষয়ে এনসিপি সংবিধান সংস্কার, গণভোট এবং আইন প্রক্রিয়ার রূপরেখা চেয়েছে।

নির্বাচন কমিশন এনসিপিকে নিবন্ধন ও ‘শাপলা’ প্রতীক না দেয়, তবে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, এটি শুধু প্রতীকের বিষয় নয়, বরং কমিশনের ন্যায্যতা ও নিরপেক্ষতার প্রশ্ন।

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মামলার প্রসঙ্গ টেনে নাহিদ ইসলাম প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচন কমিশন কি নির্বাচনের প্রস্তুতিতে যথেষ্ট কার্যকর ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

বৈঠকে এনসিপির পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। প্রতিনিধিদলে আরও আছেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।