Dhaka বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যান্ত্রিক ত্রুটি ও সরঞ্জাম চুরিতে ভাঙ্গায় ৫ কিলোমিটারের সড়কবাতি এক মাস ধরে বন্ধ

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : 

ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের শেষ প্রান্তের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের রাজধানীতে প্রবেশমুখ হিসেবে পরিচিত এই এলাকায় সন্ধ্যা নামলেই ৫ কিলোমিটার সড়কজুড়ে নেমে আসে অন্ধকার। এক মাস আট দিন ধরে ইন্টারচেঞ্জের শতাধিক সড়কবাতি বন্ধ রয়েছে। ফলে রাতের আঁধারে পথচারী, যানবাহনচালক থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তির শেষ নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইন্টারচেঞ্জ এলাকার বৈদ্যুতিক তার ও কন্ট্রোল বোর্ডের কিছু অংশ চুরি হয়েছে। পাশাপাশি কন্ট্রোল প্যানেলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ পুড়ে যাওয়ায় নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও বাতিগুলো জ্বালানো যাচ্ছে না। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীনে থাকা ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ এখন রাতে একেবারে জনমানবশূন্য হয়ে পড়ে।

পাশের নগরকান্দা উপজেলা থেকে ইন্টারচেঞ্জ ঘুরতে আসা কলেজছাত্র মাহমুদ হাসান বলেন, আগে এখানে সন্ধ্যার পর আলোয় ঝলমল করত। এখন অন্ধকার, দাঁড়িয়ে থাকতে ভয় লাগে।

তিনি বলেন, এত সুন্দর একটা জায়গায় এত বড় সমস্যা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা অতিদ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই।

পৌর এলাকার নওপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক মজিবর মিয়া বলেন, রাতের বেলায় ভাঙ্গা গোলচত্বর থেকে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাতি জ্বলে না। ফলে দুর্ঘটনা ও ছিনতাইয়ের ভয় নিয়ে চলতে হয়।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ হোসেন বলেন, আলো না থাকায় অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি মামলায় ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা রাতের টহল আরও বাড়াচ্ছি।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) ভাঙ্গা আবাসিক প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, আমাদের দিক থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক। তবে কন্ট্রোল বোর্ডের তার পুড়ে যাওয়া ও কিছু সরঞ্জাম চুরি হওয়ায় ইন্টারচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ নিতে পারছে না। এখানে আমাদের করনীয় কিছু নেই।

ইন্টারচেঞ্জ বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনের নৈশপ্রহরী সিরাজ খান বলেন, এক মাস আট দিন আগে কন্ট্রোল সিস্টেমের একটি অংশ নষ্ট হয়েছে। এখন জেনারেটর চালিয়ে প্রতি রাতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা করে কিছু বাতি জ্বালানো হয়।

ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জের লাইটগুলোর বিষয়টি দেখা-শোনা করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) উপবিভাগীয় কার্যালয়। ওই কার্যালয়ের প্রকৌশলী এস এম হানিফ বলেন, চুরি ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পুরো সড়কবাতি ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। ইতোমধ্যে মেরামতের কাজ চলছে। সংস্কারের কাজ একেবারেই শেষ পর্যায়ে রয়েছে। খুব দ্রুতই আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারবো।

দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ এখন অন্ধকারে নিমজ্জিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রত্যাশা, দ্রুত মেরামতের মাধ্যমে আবারও আগের মতো আলো ঝলমলে রূপে ফিরবে এই আধুনিক সড়কসংযোগের মুখটি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

যান্ত্রিক ত্রুটি ও সরঞ্জাম চুরিতে ভাঙ্গায় ৫ কিলোমিটারের সড়কবাতি এক মাস ধরে বন্ধ

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৫:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : 

ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের শেষ প্রান্তের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের রাজধানীতে প্রবেশমুখ হিসেবে পরিচিত এই এলাকায় সন্ধ্যা নামলেই ৫ কিলোমিটার সড়কজুড়ে নেমে আসে অন্ধকার। এক মাস আট দিন ধরে ইন্টারচেঞ্জের শতাধিক সড়কবাতি বন্ধ রয়েছে। ফলে রাতের আঁধারে পথচারী, যানবাহনচালক থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তির শেষ নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইন্টারচেঞ্জ এলাকার বৈদ্যুতিক তার ও কন্ট্রোল বোর্ডের কিছু অংশ চুরি হয়েছে। পাশাপাশি কন্ট্রোল প্যানেলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ পুড়ে যাওয়ায় নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও বাতিগুলো জ্বালানো যাচ্ছে না। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীনে থাকা ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ এখন রাতে একেবারে জনমানবশূন্য হয়ে পড়ে।

পাশের নগরকান্দা উপজেলা থেকে ইন্টারচেঞ্জ ঘুরতে আসা কলেজছাত্র মাহমুদ হাসান বলেন, আগে এখানে সন্ধ্যার পর আলোয় ঝলমল করত। এখন অন্ধকার, দাঁড়িয়ে থাকতে ভয় লাগে।

তিনি বলেন, এত সুন্দর একটা জায়গায় এত বড় সমস্যা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা অতিদ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই।

পৌর এলাকার নওপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক মজিবর মিয়া বলেন, রাতের বেলায় ভাঙ্গা গোলচত্বর থেকে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাতি জ্বলে না। ফলে দুর্ঘটনা ও ছিনতাইয়ের ভয় নিয়ে চলতে হয়।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ হোসেন বলেন, আলো না থাকায় অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি মামলায় ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা রাতের টহল আরও বাড়াচ্ছি।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) ভাঙ্গা আবাসিক প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, আমাদের দিক থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক। তবে কন্ট্রোল বোর্ডের তার পুড়ে যাওয়া ও কিছু সরঞ্জাম চুরি হওয়ায় ইন্টারচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ নিতে পারছে না। এখানে আমাদের করনীয় কিছু নেই।

ইন্টারচেঞ্জ বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনের নৈশপ্রহরী সিরাজ খান বলেন, এক মাস আট দিন আগে কন্ট্রোল সিস্টেমের একটি অংশ নষ্ট হয়েছে। এখন জেনারেটর চালিয়ে প্রতি রাতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা করে কিছু বাতি জ্বালানো হয়।

ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জের লাইটগুলোর বিষয়টি দেখা-শোনা করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) উপবিভাগীয় কার্যালয়। ওই কার্যালয়ের প্রকৌশলী এস এম হানিফ বলেন, চুরি ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পুরো সড়কবাতি ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। ইতোমধ্যে মেরামতের কাজ চলছে। সংস্কারের কাজ একেবারেই শেষ পর্যায়ে রয়েছে। খুব দ্রুতই আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারবো।

দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ এখন অন্ধকারে নিমজ্জিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রত্যাশা, দ্রুত মেরামতের মাধ্যমে আবারও আগের মতো আলো ঝলমলে রূপে ফিরবে এই আধুনিক সড়কসংযোগের মুখটি।