Dhaka বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশন থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে : বেবিচক চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো শাখায় লাগা ভয়াবহ আগুনের সূত্রপাত ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশন থেকে হতে পারে। বিষয়টি আমরা নিশ্চিত নই। প্রাথমিকভাবে এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে। অনেকগুলো সংস্থা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। তাদের তদন্ত শেষে আগুনের প্রকৃত ও সুনিশ্চিত কারণ জানা যাবে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে কুর্মিটোলায় বেবিচক সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আগুনের সময় ১৫টি ফ্লাইট ভিন্ন ভিন্ন রুটে পাঠানো হয়েছে। আর এ সময় বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় যত যাত্রী আটকে পড়েছিলেন তাদের পরদিন বিকেল ৪টার মধ্যে নির্ধারিত গন্তব্যে পাঠানো হয়েছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের আরও দল যোগ দিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আনুমানিক দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো টার্মিনাল—বিশেষ করে ইমপোর্ট কার্গো টার্মিনাল এলাকায়—আগুনের সূত্রপাত ঘটে। প্রথমে টাওয়ার থেকে ধোঁয়া দেখা যায়, এরপর খবর পেয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত হয় ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশন থেকে। তবে এটি এখনো তদন্তাধীন বিষয়। একাধিক তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। সঠিক কারণ তারা বের করবেন। নির্ভরযোগ্য তথ্য ছাড়া কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, আগুনের সময় উত্তর পাশে বিমানের হ্যাঙ্গার এবং দক্ষিণ পাশে মূল টার্মিনাল ভবন ছিল, কিন্তু আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টায় আগুন সেই অংশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েনি। আল্লাহর রহমতে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।

তিনি বলেন, ধাপে ধাপে নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসও উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত হয়। ১০ মিনিটের মধ্যে বিমানবাহিনীর একে খন্দকার ঘাঁটি থেকে তিনটি ফায়ার ভেহিকল আসে। ২০ মিনিটের মধ্যে বাসার বিমানঘাঁটি থেকেও দুটি ভেহিকল যোগ দেয়। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০টির বেশি ফায়ার ফাইটিং ভেহিকল আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। বাহিনীগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।

তিনি আরো বলেন, আগুন লাগার সময় টার্মিনালের ভেতরে বেশ কয়েকটি বিমান ছিল। আমরা দ্রুত সেগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছি, যাতে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা না থাকে। উত্তর ও দক্ষিণ উভয় পাশেই কাট-অফ মেকানিজম ব্যবহার করে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হই। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলেই বড় বিপর্যয় এড়ানো গেছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, যেখানে আগুন লেগেছিল, সেটি মূলত ইমপোর্ট কার্গো এলাকা। এই জায়গাটি পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, কাস্টমস, সিএনএফ এজেন্ট এবং কুরিয়ার এজেন্টরা। তাদের বাইরের লোকজন ঢোকা–বেরোনোর জন্য এক্সেস কন্ট্রোল আট নম্বর গেটে। সেই প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আমাদের, কিন্তু ভেতরের কার্গো ব্যবস্থাপনা ওই সংস্থাগুলোর।

তিনি বলেন, ওই এলাকায় প্রায় ১৪০টি ফায়ার এক্সটিংগুইশার ছিল। আমরা কাগজপত্রে প্রমাণ পেয়েছি, নিয়মিত ফায়ার সেফটি কার্যক্রম চলত। শুধু জুন মাসেই প্রায় ২০০ জন কর্মীকে ফায়ার ড্রিল প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, প্রতি সপ্তাহে এক দিন আমরা ফায়ার ড্রিল অনুশীলন করি। এটি সাধারণত বিমান সংক্রান্ত দুর্ঘটনা বা আগুনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য করা হয়। এছাড়া প্রতিদিন আমাদের ফায়ার টিম বিভিন্ন সেকশনে গিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালায়।

মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, আগুনের পরও বিমানবন্দরের কার্গো অপারেশন একদিনের জন্যও বন্ধ রাখা হয়নি। বর্তমানে নয় নম্বর গেট দিয়ে সাময়িকভাবে কার্গো ক্লিয়ারিং কার্যক্রম চালু আছে, এবং স্থায়ী কাঠামো দ্রুত গড়ে তোলার কাজ চলছে। আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা আইকাও এর ফায়ার সেফটি প্রোটোকল মেনে চলি। কতজন জনবল ও কত ইউনিট ফায়ার ভেহিকল থাকতে হবে, সে ন্যূনতম মান আমরা পূরণ করি।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, আগুন লাগার পর দুপুর ২টা ৪২ মিনিটে বিমানের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে রাত ৯টা পর্যন্ত ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়। মোট ১৫টি ফ্লাইট ডাইভার্ট করতে হয়। এর মধ্যে আটটি চট্টগ্রাম, দুটি সিলেট, চারটি কলকাতা এবং একটি কাঠমান্ডুতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে তিনটি ছিল অভ্যন্তরীণ, ১১টি আঞ্চলিক ও একটি কার্গো ফ্লাইট।

বেবিচক চেয়ারম্যান আরো বলেন, আগুনের কারণে যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তি হয়েছিল। তবে পরদিন বিকেল চারটার মধ্যে সব ব্যাকলগ ক্লিয়ার করা সম্ভব হয়েছে। বিকেল চারটার পর থেকে সব ফ্লাইট স্বাভাবিকভাবে চলছে।

তিনি বলেন, যেসব এয়ারলাইন অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করেছে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে, উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন — ২১ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত তাদের জন্য সব ধরনের কর ও চার্জ মওকুফ থাকবে। এটি যাত্রীসেবার স্বার্থে একটি ভালো সিদ্ধান্ত।

কার্গো কার্যক্রম প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ইমপোর্ট কার্গো ভিলেজ পুড়ে গেলেও, আমরা রাত আড়াইটা পর্যন্ত সেটি সচল রেখেছিলাম। এরপর উপদেষ্টার নির্দেশনায় নয় নম্বর গেট দিয়ে নতুন করে কার্গো ক্লিয়ারিং চালু করেছি। এটি আপাতত সাময়িক ব্যবস্থা। ভবিষ্যতে নতুন কাঠামো গড়ে তোলা হবে।

তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে একাধিক উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। এই কমিটিগুলোর প্রতিবেদন পেলে আমরা জানব কেন এমন দুর্ঘটনা ঘটল, ভবিষ্যতে কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়। আমরা আশা করছি, এই তদন্ত থেকেই ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে।

এর আগে শনিবার (১৮ অক্টোবর) এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শনিবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে কার্গো ভিলেজের আমদানি বিভাগে লাগা আগুন দীর্ঘ ২২ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে। ৩৭টি ফায়ার সার্ভিস ইউনিটসহ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবি অংশগ্রহণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে কোটি কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে, যা দেশের তৈরি পোশাক খাতেও প্রভাব ফেলতে পারে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশন থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে : বেবিচক চেয়ারম্যান

প্রকাশের সময় : ১২:৫৮:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো শাখায় লাগা ভয়াবহ আগুনের সূত্রপাত ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশন থেকে হতে পারে। বিষয়টি আমরা নিশ্চিত নই। প্রাথমিকভাবে এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে। অনেকগুলো সংস্থা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। তাদের তদন্ত শেষে আগুনের প্রকৃত ও সুনিশ্চিত কারণ জানা যাবে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে কুর্মিটোলায় বেবিচক সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আগুনের সময় ১৫টি ফ্লাইট ভিন্ন ভিন্ন রুটে পাঠানো হয়েছে। আর এ সময় বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় যত যাত্রী আটকে পড়েছিলেন তাদের পরদিন বিকেল ৪টার মধ্যে নির্ধারিত গন্তব্যে পাঠানো হয়েছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের আরও দল যোগ দিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আনুমানিক দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো টার্মিনাল—বিশেষ করে ইমপোর্ট কার্গো টার্মিনাল এলাকায়—আগুনের সূত্রপাত ঘটে। প্রথমে টাওয়ার থেকে ধোঁয়া দেখা যায়, এরপর খবর পেয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত হয় ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশন থেকে। তবে এটি এখনো তদন্তাধীন বিষয়। একাধিক তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। সঠিক কারণ তারা বের করবেন। নির্ভরযোগ্য তথ্য ছাড়া কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, আগুনের সময় উত্তর পাশে বিমানের হ্যাঙ্গার এবং দক্ষিণ পাশে মূল টার্মিনাল ভবন ছিল, কিন্তু আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টায় আগুন সেই অংশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েনি। আল্লাহর রহমতে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।

তিনি বলেন, ধাপে ধাপে নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসও উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত হয়। ১০ মিনিটের মধ্যে বিমানবাহিনীর একে খন্দকার ঘাঁটি থেকে তিনটি ফায়ার ভেহিকল আসে। ২০ মিনিটের মধ্যে বাসার বিমানঘাঁটি থেকেও দুটি ভেহিকল যোগ দেয়। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০টির বেশি ফায়ার ফাইটিং ভেহিকল আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। বাহিনীগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।

তিনি আরো বলেন, আগুন লাগার সময় টার্মিনালের ভেতরে বেশ কয়েকটি বিমান ছিল। আমরা দ্রুত সেগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছি, যাতে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা না থাকে। উত্তর ও দক্ষিণ উভয় পাশেই কাট-অফ মেকানিজম ব্যবহার করে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হই। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলেই বড় বিপর্যয় এড়ানো গেছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, যেখানে আগুন লেগেছিল, সেটি মূলত ইমপোর্ট কার্গো এলাকা। এই জায়গাটি পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, কাস্টমস, সিএনএফ এজেন্ট এবং কুরিয়ার এজেন্টরা। তাদের বাইরের লোকজন ঢোকা–বেরোনোর জন্য এক্সেস কন্ট্রোল আট নম্বর গেটে। সেই প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আমাদের, কিন্তু ভেতরের কার্গো ব্যবস্থাপনা ওই সংস্থাগুলোর।

তিনি বলেন, ওই এলাকায় প্রায় ১৪০টি ফায়ার এক্সটিংগুইশার ছিল। আমরা কাগজপত্রে প্রমাণ পেয়েছি, নিয়মিত ফায়ার সেফটি কার্যক্রম চলত। শুধু জুন মাসেই প্রায় ২০০ জন কর্মীকে ফায়ার ড্রিল প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, প্রতি সপ্তাহে এক দিন আমরা ফায়ার ড্রিল অনুশীলন করি। এটি সাধারণত বিমান সংক্রান্ত দুর্ঘটনা বা আগুনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য করা হয়। এছাড়া প্রতিদিন আমাদের ফায়ার টিম বিভিন্ন সেকশনে গিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালায়।

মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, আগুনের পরও বিমানবন্দরের কার্গো অপারেশন একদিনের জন্যও বন্ধ রাখা হয়নি। বর্তমানে নয় নম্বর গেট দিয়ে সাময়িকভাবে কার্গো ক্লিয়ারিং কার্যক্রম চালু আছে, এবং স্থায়ী কাঠামো দ্রুত গড়ে তোলার কাজ চলছে। আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা আইকাও এর ফায়ার সেফটি প্রোটোকল মেনে চলি। কতজন জনবল ও কত ইউনিট ফায়ার ভেহিকল থাকতে হবে, সে ন্যূনতম মান আমরা পূরণ করি।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, আগুন লাগার পর দুপুর ২টা ৪২ মিনিটে বিমানের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে রাত ৯টা পর্যন্ত ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়। মোট ১৫টি ফ্লাইট ডাইভার্ট করতে হয়। এর মধ্যে আটটি চট্টগ্রাম, দুটি সিলেট, চারটি কলকাতা এবং একটি কাঠমান্ডুতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে তিনটি ছিল অভ্যন্তরীণ, ১১টি আঞ্চলিক ও একটি কার্গো ফ্লাইট।

বেবিচক চেয়ারম্যান আরো বলেন, আগুনের কারণে যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তি হয়েছিল। তবে পরদিন বিকেল চারটার মধ্যে সব ব্যাকলগ ক্লিয়ার করা সম্ভব হয়েছে। বিকেল চারটার পর থেকে সব ফ্লাইট স্বাভাবিকভাবে চলছে।

তিনি বলেন, যেসব এয়ারলাইন অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করেছে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে, উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন — ২১ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত তাদের জন্য সব ধরনের কর ও চার্জ মওকুফ থাকবে। এটি যাত্রীসেবার স্বার্থে একটি ভালো সিদ্ধান্ত।

কার্গো কার্যক্রম প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ইমপোর্ট কার্গো ভিলেজ পুড়ে গেলেও, আমরা রাত আড়াইটা পর্যন্ত সেটি সচল রেখেছিলাম। এরপর উপদেষ্টার নির্দেশনায় নয় নম্বর গেট দিয়ে নতুন করে কার্গো ক্লিয়ারিং চালু করেছি। এটি আপাতত সাময়িক ব্যবস্থা। ভবিষ্যতে নতুন কাঠামো গড়ে তোলা হবে।

তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে একাধিক উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। এই কমিটিগুলোর প্রতিবেদন পেলে আমরা জানব কেন এমন দুর্ঘটনা ঘটল, ভবিষ্যতে কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়। আমরা আশা করছি, এই তদন্ত থেকেই ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে।

এর আগে শনিবার (১৮ অক্টোবর) এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শনিবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে কার্গো ভিলেজের আমদানি বিভাগে লাগা আগুন দীর্ঘ ২২ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে। ৩৭টি ফায়ার সার্ভিস ইউনিটসহ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবি অংশগ্রহণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে কোটি কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে, যা দেশের তৈরি পোশাক খাতেও প্রভাব ফেলতে পারে।