Dhaka বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোটের আগে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন শুভ নয় : মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনের আগে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন শুভ নয়। পিআর ও গণভোট সাধারণ মানুষ বুঝে না। দেশ রক্ষায় দ্রুত নির্বাচন প্রয়োজন।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের গড়েয়া ইউনিয়নে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বললেন, আগামী নির্বাচনে এমন ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে সবার ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যেখানে সকল ধর্মের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে চায়। বিএনপি প্রতিহিংসা চায় না, শান্তি চায়।

সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আর বিভাজন করবেন না, আর কোনো দাবি তুলে বিভেদ তৈরি করবেন না। গণভোট, পিআর নিয়ে আর আন্দোলন করবেন না। নির্বাচনটা হতে দেন, দেশের মানুষ বাঁচুক। দেশের মানুষকে বাঁচাতে তাড়াতাড়ি ভোট হতে দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৫ বছর ঠাকুরগাঁওয়ের বাইরে থাকতে হয়েছে, জেলখানায় থাকতে হয়েছে। ১১ বার জেলে গেছি, সাড়ে তিন বছর কারাগারে ছিলাম। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করতেন আমি ভয়ের লোক, তাই কারাগারে যেতে হতো।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণ যে প্রার্থীকে ভোট দেবেন তিনি সংসদে গিয়ে আপনাদের জন্য কথা বলবেন সেটাই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। সে নিয়মে ভোট হয়ে এসেছে। তবে এবারের নির্বাচন একটু ভিন্ন, যেখানে পার্লামেন্টে দুইটা কক্ষ থাকবে, উচ্চ ও নিম্নকক্ষ। নিম্নকক্ষে দল থেকে মনোনীত ও আপনাদের ভোটে নির্বাচিত প্রার্থী নির্বাচিত হবেন। আর উচ্চেকক্ষে যারা প্রতিনিধি হবেন তারা আলেম সমাজের মানুষ, বিজ্ঞ সমাজ, হিন্দু-বৌদ্ধ সবাই থাকবেন সেখানে। যারা আপনাদের নিয়ে কাজ ও কথা করবেন। সবাই মিলে থাকাটাই বাংলাদেশ। শত ফুল ফুটতে দাও। সকল ফুল ফুটলে সৌরভটা ছড়ায় যাবে।

তিনি বলেন, হিংসার রাজনীতি চাই না। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান বিভেদ চাই না সবাই মিলে থাকতে চাই। শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রই বিএনপির চাওয়া। ভাগাভাগি আর না করেন, ক্ষতি অনেক হয়েছে। ক্ষতি আর চাই না। সৌহার্দ্য ভ্রাতৃত্বের মধ্যে থাকতে চাই সবাই।

জনগণ যাকে ভোট দিবে তিনি নির্বাচিত হবেন। মানসিকতা ঠিক রাখতে হবে। তাহলে সুন্দর দেশ গঠন সম্ভব এ কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল সবাইকে মনে রাখতে বললেন দেশটাকে সুন্দর করতে ছুটছি আমরা। ভোট হবে আমার ভোট আমি দিবো যাকে খুশি তাকে দিবো। ভোট সবাই দিবে, সঠিক প্রতিনিধি পাবে জনগণে। বিভাজন যেন না থাকে বলেও জানান তিনি।

জুলাই সনদ নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এ সনদে স্বাক্ষর করা হবে। কঠিন শব্দ জনগণ কম বোঝে, তারপরও এটা করা হবে, সবাই যারা একমত হয়েছে তা নিয়ে সনদ হবে। সনদ হচ্ছে, ঘরের নতুন টিন লাগানোর মতো। ঘরের চালে নতুন টিন লাগানো হচ্ছে, দরজায় কব্জা লাগাতে হবে জং ধরেছে সংস্কারও তাই। দেশের রাজনীতি সংস্কার করতে হবে সেজন্যই সংস্কার করছি আমরা

সংস্কার প্রস্তাবে যেগুলোতে একমত হয়েছি সেগুলোতে স্বাক্ষর হবে আর যেগুলো হয়নি সেগুলো জনগণের কাছে যেতে হবে তাদের সমর্থন লাগবে বলেও জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে। ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হবে। স্বাস্থ্য-শিক্ষাখাতে গুরুত্ব দেয়া হবে।

তিনি বলেন, সব দলের প্রতি আহ্বান আর বিভাজন করবেন না, আর কোনো দাবি তুলে বিভেদ তৈরি করবেন না। গণভোট, পিআর নিয়ে আর আন্দোলন করবেন না। পিআর নিয়ে তর্ক বিতর্ক হতে পারে, যেটা পরবর্তী সংসদে আলোচনা করতে পারেন। কিন্তু না, তারা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন। নির্বাচনটা হতে দেন, দেশের মানুষ বাঁচুক। দেশের মানুষকে বাঁচতে তাড়াতাড়ি ভোট হতে দেন।

যারা আন্দোলন করছেন তাদের উদ্দেশ্যটা ভালো না, তারা ভণ্ডুল করতে চায় নির্বাচনকে। সবাই ভোট দিতে চায়। দয়া করে নির্বাচনটা করতে দেন, নির্বাচিত সংসদ আসুক পরে এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। হিংসার রাজনীতি করতে চাই না। একটা মানুষও যেনো গুলি খেয়ে না মরে বলেও জানান বিএনপির এ নেতা।

বিএনপির এ নেতা এক ইউনিয়ন থেকে অন্য ইউনিয়নে ছুটে বেড়াচ্ছেন উত্তরের জনপদ ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন প্রান্তরে। আগামী জাতীয় নির্বাচন ধানের শীষের পক্ষে ভোট টানতে নিজ সংসদীয় আসনে জনসংযোগ করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সকালে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের গড়েয়া ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ভোটের আগে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন শুভ নয় : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০১:৪৭:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনের আগে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন শুভ নয়। পিআর ও গণভোট সাধারণ মানুষ বুঝে না। দেশ রক্ষায় দ্রুত নির্বাচন প্রয়োজন।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের গড়েয়া ইউনিয়নে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বললেন, আগামী নির্বাচনে এমন ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে সবার ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যেখানে সকল ধর্মের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে চায়। বিএনপি প্রতিহিংসা চায় না, শান্তি চায়।

সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আর বিভাজন করবেন না, আর কোনো দাবি তুলে বিভেদ তৈরি করবেন না। গণভোট, পিআর নিয়ে আর আন্দোলন করবেন না। নির্বাচনটা হতে দেন, দেশের মানুষ বাঁচুক। দেশের মানুষকে বাঁচাতে তাড়াতাড়ি ভোট হতে দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৫ বছর ঠাকুরগাঁওয়ের বাইরে থাকতে হয়েছে, জেলখানায় থাকতে হয়েছে। ১১ বার জেলে গেছি, সাড়ে তিন বছর কারাগারে ছিলাম। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করতেন আমি ভয়ের লোক, তাই কারাগারে যেতে হতো।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণ যে প্রার্থীকে ভোট দেবেন তিনি সংসদে গিয়ে আপনাদের জন্য কথা বলবেন সেটাই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। সে নিয়মে ভোট হয়ে এসেছে। তবে এবারের নির্বাচন একটু ভিন্ন, যেখানে পার্লামেন্টে দুইটা কক্ষ থাকবে, উচ্চ ও নিম্নকক্ষ। নিম্নকক্ষে দল থেকে মনোনীত ও আপনাদের ভোটে নির্বাচিত প্রার্থী নির্বাচিত হবেন। আর উচ্চেকক্ষে যারা প্রতিনিধি হবেন তারা আলেম সমাজের মানুষ, বিজ্ঞ সমাজ, হিন্দু-বৌদ্ধ সবাই থাকবেন সেখানে। যারা আপনাদের নিয়ে কাজ ও কথা করবেন। সবাই মিলে থাকাটাই বাংলাদেশ। শত ফুল ফুটতে দাও। সকল ফুল ফুটলে সৌরভটা ছড়ায় যাবে।

তিনি বলেন, হিংসার রাজনীতি চাই না। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান বিভেদ চাই না সবাই মিলে থাকতে চাই। শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রই বিএনপির চাওয়া। ভাগাভাগি আর না করেন, ক্ষতি অনেক হয়েছে। ক্ষতি আর চাই না। সৌহার্দ্য ভ্রাতৃত্বের মধ্যে থাকতে চাই সবাই।

জনগণ যাকে ভোট দিবে তিনি নির্বাচিত হবেন। মানসিকতা ঠিক রাখতে হবে। তাহলে সুন্দর দেশ গঠন সম্ভব এ কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল সবাইকে মনে রাখতে বললেন দেশটাকে সুন্দর করতে ছুটছি আমরা। ভোট হবে আমার ভোট আমি দিবো যাকে খুশি তাকে দিবো। ভোট সবাই দিবে, সঠিক প্রতিনিধি পাবে জনগণে। বিভাজন যেন না থাকে বলেও জানান তিনি।

জুলাই সনদ নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এ সনদে স্বাক্ষর করা হবে। কঠিন শব্দ জনগণ কম বোঝে, তারপরও এটা করা হবে, সবাই যারা একমত হয়েছে তা নিয়ে সনদ হবে। সনদ হচ্ছে, ঘরের নতুন টিন লাগানোর মতো। ঘরের চালে নতুন টিন লাগানো হচ্ছে, দরজায় কব্জা লাগাতে হবে জং ধরেছে সংস্কারও তাই। দেশের রাজনীতি সংস্কার করতে হবে সেজন্যই সংস্কার করছি আমরা

সংস্কার প্রস্তাবে যেগুলোতে একমত হয়েছি সেগুলোতে স্বাক্ষর হবে আর যেগুলো হয়নি সেগুলো জনগণের কাছে যেতে হবে তাদের সমর্থন লাগবে বলেও জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে। ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হবে। স্বাস্থ্য-শিক্ষাখাতে গুরুত্ব দেয়া হবে।

তিনি বলেন, সব দলের প্রতি আহ্বান আর বিভাজন করবেন না, আর কোনো দাবি তুলে বিভেদ তৈরি করবেন না। গণভোট, পিআর নিয়ে আর আন্দোলন করবেন না। পিআর নিয়ে তর্ক বিতর্ক হতে পারে, যেটা পরবর্তী সংসদে আলোচনা করতে পারেন। কিন্তু না, তারা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন। নির্বাচনটা হতে দেন, দেশের মানুষ বাঁচুক। দেশের মানুষকে বাঁচতে তাড়াতাড়ি ভোট হতে দেন।

যারা আন্দোলন করছেন তাদের উদ্দেশ্যটা ভালো না, তারা ভণ্ডুল করতে চায় নির্বাচনকে। সবাই ভোট দিতে চায়। দয়া করে নির্বাচনটা করতে দেন, নির্বাচিত সংসদ আসুক পরে এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। হিংসার রাজনীতি করতে চাই না। একটা মানুষও যেনো গুলি খেয়ে না মরে বলেও জানান বিএনপির এ নেতা।

বিএনপির এ নেতা এক ইউনিয়ন থেকে অন্য ইউনিয়নে ছুটে বেড়াচ্ছেন উত্তরের জনপদ ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন প্রান্তরে। আগামী জাতীয় নির্বাচন ধানের শীষের পক্ষে ভোট টানতে নিজ সংসদীয় আসনে জনসংযোগ করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সকালে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের গড়েয়া ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি।