Dhaka বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিরপুরে পোশাক কারখানা ও কেমিক্যাল গুদামে আগুনে নিহত বেড়ে ১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে পোশাক কারখানা ও একটি কেমিক্যাল গোডাউনে লাগা আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গার্মেন্টস অংশ থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। কেমিক্যাল গোডাউন অংশে এখনো তল্লাশি চালানো সম্ভব হয়নি। সেখানেও মৃতদেহ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৃতদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। এসব মরদেহের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ টেস্ট করা লাগবে।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, তল্লাশি অভিযান এখনো চলমান। পাশের যে কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে, সেখানে এখনো আগুন জ্বলছে। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ওখানে কাউকে যেতে দিচ্ছি না। আমরা সর্বোচ্চ প্রযুক্তি দিয়ে, ড্রোন দিয়ে এসব কার্যক্রম করছি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, আগুনের সূত্রপাত এখনো জানা যায়নি। যাঁরা শুরুতে আগুন নেভাতে এসেছেন, তাঁরা রাসায়নিকের গুদাম ও গার্মেন্টস দুই দিকেই আগুন দেখেছেন।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, পোশাক কারখানার নিচতলায় ‘ওয়াশ ইউনিট’ রয়েছে। সেখানে প্রথম আগুন লাগে। সেই আগুন পাশের রাসায়নিকের গুদামে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর আগুন চারতলা পোশাক কারখানার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।

আগুন লাগার পর কারখানা থেকে শ্রমিকেরা নানাভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই অনেকে আটকা পড়েন।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বলেন, রাসায়নিকের গুদামে ব্লিচিং পাউডার, প্লাস্টিক, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছিল প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

ঘটনার পর থেকে রাসায়নিকের গুদামের মালিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান ফায়ার ব্রিগেডের পরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, দেখে মনে হচ্ছে, এই রাসায়নিকের গুদামের অনুমোদন নেই। যাচাই-বাছাই করে তদন্ত করে বিস্তারিত পরে জানা যাবে।

এর আগে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে রূপনগরের ওই গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগার খরব পায় ফায়ার সার্ভিস। বেলা ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট। পরে একে একে বাড়ানো হয় ইউনিটের সংখ্যা। সবশেষ ১২টি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আগুন এখনো পুরোপুরি নেভেনি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিট) কমপক্ষে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃত ব্যক্তিরা বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এ ছাড়াও কয়েকজন আহত বা দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে।

আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ১২টিরও বেশি ইউনিট। ভবনটিতে রাসায়নিক থাকায় এবং প্রচণ্ড ধোঁয়ার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং ভেতরে প্রবেশ করে উদ্ধার কাজ চালাতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রাকিবের গোলে হংকংয়ের বিপক্ষে ড্র করল বাংলাদেশ

মিরপুরে পোশাক কারখানা ও কেমিক্যাল গুদামে আগুনে নিহত বেড়ে ১৬

প্রকাশের সময় : ০৮:১৭:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে পোশাক কারখানা ও একটি কেমিক্যাল গোডাউনে লাগা আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গার্মেন্টস অংশ থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। কেমিক্যাল গোডাউন অংশে এখনো তল্লাশি চালানো সম্ভব হয়নি। সেখানেও মৃতদেহ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৃতদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। এসব মরদেহের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ টেস্ট করা লাগবে।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, তল্লাশি অভিযান এখনো চলমান। পাশের যে কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে, সেখানে এখনো আগুন জ্বলছে। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ওখানে কাউকে যেতে দিচ্ছি না। আমরা সর্বোচ্চ প্রযুক্তি দিয়ে, ড্রোন দিয়ে এসব কার্যক্রম করছি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, আগুনের সূত্রপাত এখনো জানা যায়নি। যাঁরা শুরুতে আগুন নেভাতে এসেছেন, তাঁরা রাসায়নিকের গুদাম ও গার্মেন্টস দুই দিকেই আগুন দেখেছেন।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, পোশাক কারখানার নিচতলায় ‘ওয়াশ ইউনিট’ রয়েছে। সেখানে প্রথম আগুন লাগে। সেই আগুন পাশের রাসায়নিকের গুদামে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর আগুন চারতলা পোশাক কারখানার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।

আগুন লাগার পর কারখানা থেকে শ্রমিকেরা নানাভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই অনেকে আটকা পড়েন।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বলেন, রাসায়নিকের গুদামে ব্লিচিং পাউডার, প্লাস্টিক, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছিল প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

ঘটনার পর থেকে রাসায়নিকের গুদামের মালিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান ফায়ার ব্রিগেডের পরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, দেখে মনে হচ্ছে, এই রাসায়নিকের গুদামের অনুমোদন নেই। যাচাই-বাছাই করে তদন্ত করে বিস্তারিত পরে জানা যাবে।

এর আগে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে রূপনগরের ওই গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগার খরব পায় ফায়ার সার্ভিস। বেলা ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট। পরে একে একে বাড়ানো হয় ইউনিটের সংখ্যা। সবশেষ ১২টি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আগুন এখনো পুরোপুরি নেভেনি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিট) কমপক্ষে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃত ব্যক্তিরা বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এ ছাড়াও কয়েকজন আহত বা দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে।

আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ১২টিরও বেশি ইউনিট। ভবনটিতে রাসায়নিক থাকায় এবং প্রচণ্ড ধোঁয়ার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং ভেতরে প্রবেশ করে উদ্ধার কাজ চালাতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয়।