Dhaka বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুদকের মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিক গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক :  

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায় সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে গ্রেফতার দেখিয়েছে আদালত।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজের আদালত এ আদেশ দেন।

দুদক প্রসিকিউটর মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, শুনানিতে সাবেক বিচারপতি মানিককে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন। এরপর তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দুদকের উপসহকারী পরিচালক পাপন কুমার শাহ গত ১১ সেপ্টেম্বর মানিকের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিচারপতি হিসেবে কর্মরত থাকাকালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮২০ টাকার সম্পদ অর্জন করেন। মামলায় এসব সম্পদের মালিকানা অর্জনপূর্বক তা দখলে রাখা এবং হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

জানা যায়, দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক পাপন কুমার শাহ গত ১১ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা; মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

গত বছরের ২৩ অগাস্ট কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টাকালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করে বিজিবি।

এরপর সিলেট অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অঞ্জন কান্তি দাস সাবেক বিচারপতির জামিন মঞ্জুর করলেও, তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় কারামুক্ত হতে পারেননি তিনি।

পরে সিলেট থেকে তাকে ঢাকায় আনা হয়। জুলাই আন্দোলনের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। নেওয়া হয় রিমান্ডেও।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিচারপতি হিসেবে কর্মরত থাকাকালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮২০ টাকার সম্পদ অর্জন করেন।

মামলায় এসব সম্পদের মালিকানা অর্জন করে তা দখলে রাখা এবং হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

১৯৭৮ সালে হাই কোর্টের আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন জীবন শুরু করা শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হন। ২০০১ সালে তাকে হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারক করে নেয় সরকার। কিন্তু পরে বিএনপি সরকার এসে তাকে বাদ দেয়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর হাই কোর্টের একটি রায়ে বিচারকের আসনে ফেরেন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। ২০১৩ সালে তাকে পদোন্নতি দিয়ে আপিল বিভাগের বিচারক করা হয়।

২০১৫ সালে অবসরে যাওয়ার আগে তখনকার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে বার বার শিরোনাম হয়েছেন বিচারপতি মানিক। সে সময় তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছিলেন। অবসরের পর তাকে নিয়মিত টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে দেখা যেত। বরাবরই তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন।

আবহাওয়া

দুদকের মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিক গ্রেফতার

প্রকাশের সময় : ০২:৪০:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :  

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায় সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে গ্রেফতার দেখিয়েছে আদালত।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজের আদালত এ আদেশ দেন।

দুদক প্রসিকিউটর মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, শুনানিতে সাবেক বিচারপতি মানিককে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন। এরপর তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দুদকের উপসহকারী পরিচালক পাপন কুমার শাহ গত ১১ সেপ্টেম্বর মানিকের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিচারপতি হিসেবে কর্মরত থাকাকালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮২০ টাকার সম্পদ অর্জন করেন। মামলায় এসব সম্পদের মালিকানা অর্জনপূর্বক তা দখলে রাখা এবং হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

জানা যায়, দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক পাপন কুমার শাহ গত ১১ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা; মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

গত বছরের ২৩ অগাস্ট কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টাকালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করে বিজিবি।

এরপর সিলেট অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অঞ্জন কান্তি দাস সাবেক বিচারপতির জামিন মঞ্জুর করলেও, তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় কারামুক্ত হতে পারেননি তিনি।

পরে সিলেট থেকে তাকে ঢাকায় আনা হয়। জুলাই আন্দোলনের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। নেওয়া হয় রিমান্ডেও।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিচারপতি হিসেবে কর্মরত থাকাকালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮২০ টাকার সম্পদ অর্জন করেন।

মামলায় এসব সম্পদের মালিকানা অর্জন করে তা দখলে রাখা এবং হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

১৯৭৮ সালে হাই কোর্টের আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন জীবন শুরু করা শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হন। ২০০১ সালে তাকে হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারক করে নেয় সরকার। কিন্তু পরে বিএনপি সরকার এসে তাকে বাদ দেয়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর হাই কোর্টের একটি রায়ে বিচারকের আসনে ফেরেন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। ২০১৩ সালে তাকে পদোন্নতি দিয়ে আপিল বিভাগের বিচারক করা হয়।

২০১৫ সালে অবসরে যাওয়ার আগে তখনকার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে বার বার শিরোনাম হয়েছেন বিচারপতি মানিক। সে সময় তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছিলেন। অবসরের পর তাকে নিয়মিত টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে দেখা যেত। বরাবরই তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন।