পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি :
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। সেই টাকা পাঠিয়ে তারা মাঝে মাঝে সন্ত্রাসী কায়দায় টোকাই মিছিল দেওয়াচ্ছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড়ের মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠে এক বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, আওয়ামী লীগের নাকি টোয়েন্টি-থার্টি পার্সেন্ট লোক, এই লোক কোনও কালেই ছিল না। আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সময়ে ভাড়া করা লোক দিয়ে প্রোগ্রাম সাজিয়েছে। যদি আওয়ামী লীগের এত লোক থাকতো, তাহলে জুলাই-আগস্টে যখন ছাত্র–জনতা রাজপথে নেমেছিল, তখন তারা কোথায় ছিল? এখন বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়ে টোকাই ভাড়া করে ভোরবেলা দু-একটা দৌড়ানি দিয়ে ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে ফাঁপর নিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ বোঝে কোনটা আসল রাজনৈতিক কর্মসূচি আর কোনটা সাজানো। এই অভ্যুত্থানে যারা গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের রাজনৈতিক বাস্তবতা এখানেই শেষ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ক্লোজড। আওয়ামী লীগ তাদের পাচার করা টাকা পাঠিয়ে মাঝে মধ্যে টোকাই মিছিল দেওয়াচ্ছে। এগুলো আওয়ামী লীগের মিছিল না। অনেক সময় বড় ভাব নিয়ে বলা হয় আওয়ামী লীগ ৩০ শতাংশ বা ৫০ শতাংশ, আসলে এই লোক কোনো কালেই ছিলো না। তারা প্রোগ্রামে যে লোক দেখাতো সেগুলো ভাড়া করা। এরা যদি তাদেরই লোক হতো তাহলে জুলাই অভ্যুত্থানে তারা মাঠে থাকত।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) শাপলা প্রতীক না দেওয়ার বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘আসলে তাদের কাছে কারণ নাই। যৌক্তিক আইনগত কোনও কারণ নাই দেখেই তারা ব্যাখ্যা করতে পারছে না। আমরা মনে করি, যেহেতু তাদের কাছে কোনও আইনগত কারণ নেই, নিশ্চয়ই তারা কোনও না কোনও কিছুর চাপে তাদের জায়গা থেকে মার্কাটা দিচ্ছে না। এই অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের মতো একটা স্বাধীন প্রতিষ্ঠান যদি চাপের কাছে একটা প্রতীক দেওয়া নিয়ে পরাজিত হয় তাহলে নির্বাচনে তাদের কাছে স্বচ্ছতা কিংবা তাদের থেকে যে নিরপেক্ষতা আমরা প্রত্যাশা করি, সেটা নির্বাচন শুরুর আগেই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।’
এনসিপি নেতা বলেন, এই প্রতীকটা তাদের তালিকায় নেই, তালিকায় যুক্ত করার দায়িত্ব তো তাদের। আমরা আজকে থেকে কয়েক মাস আগে নিবন্ধনের আবেদন করেছি, তখনই তারা যুক্ত করতো। তারপরও আমরা নতুন করে যুক্ত করার আবেদন করেছি। আমরা মনে করি যে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানে স্বাধীনতা এবং পেশাদারত্বের পরিচয় দেবে। যেহেতু কোনো আইনগত বাধা নেই, সে ক্ষেত্রে এনসিপি তাদের জায়গা থেকে প্রতীক হিসেবে শাপলা পাবে।
সারজিস আলম তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক ঐক্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, আমরা সমমনা ও কাছাকাছি আদর্শের তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছি। বাংলাদেশের মানুষ চায়, তরুণরা ঐক্যবদ্ধ হোক। আমরা যদি রাজনৈতিক দলের পর্যায়ে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, তাহলে মাঠ পর্যায়ের মানুষও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাবে।
গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি একিভূত করা সম্পর্কে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, আমরা যেহেতু সমমনা ও কাছাকাছি আদর্শের, কাছাকাছি বয়সের তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক দল আমরা সবার সঙ্গে কথা বলছিলাম কীভাবে নির্বাচনে একসঙ্গে লড়াই করা যায়। বাংলাদেশের মানুষ এই তরুণ প্রজন্মকে একসঙ্গে ইউনাইটেড দেখতে চায়। আমরা রাজনৈতিক দলের পর্যায়ে যদি ইউনাইটেড হতে পারি মাঠপর্যায়ের মানুষও ইউনাইটেড হয়ে যাবে। এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। এটি পজেটিভভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করি নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা অংশ নিয়ে মানুষের সমর্থন নিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবো।