খুলনা জেলা প্রতিনিধি :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে খুনি, চাঁদাবাজ ও মস্তানদের সঙ্গে নতুন ভোটারদের মনস্তাত্ত্বিক লড়াই হবে। যারা অতীতে ফ্যাসিবাদকে বিদায় দিয়েছে, তারাই ভবিষ্যতেও দেশের নেতৃত্ব নির্বাচনে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে স্বাধীনতা চত্বরে আয়োজিত ছাত্র-যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ছাত্র-যুবদের নেতৃত্বেই আগামী নির্বাচনে ‘ভোট বিপ্লবের’ মাধ্যমে একটি মানবিক, সাম্যভিত্তিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে বেকার সমস্যার সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং একটি সুখী ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনে সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
তরুণ প্রজন্মের প্রথম ভোট ‘দাঁড়িপাল্লায়’ হবে বলে মন্তব্য করে অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জামায়াত ইসলামী ক্ষমতায় গেলে দেশে কোনো বেকার থাকবে না। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে কোনো এমপি বা মন্ত্রী সরকারি গাড়ি, বাড়ি বা অন্য কোনো সুবিধা নেবে না। পারলে অন্য দলও সেই অঙ্গীকার করুক।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, কুরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে জুলুম থাকবে না, ইনসাফ কায়েম হবে। বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। কর্মসংস্থান না দিতে পারলে বেকারদের ভাতা দেওয়া হবে। উৎপাদনমুখী কারিগরি শিক্ষা চালু করা হবে।
ডুমুরিয়া-ফুলতলা অঞ্চলের অন্যতম বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এর মূল কারণ বিল ডাকাতিয়া। আমরা এই বিলকে কেন্দ্র করে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করব। ডুমুরিয়াকে একটি আধুনিক ব্যবসায়িক হাবে পরিণত করা হবে।’
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমূল পরিবর্তনে গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা করা হবে। শিক্ষার্থীরা পাশ করার পরপরই যেন চাকরি পায়, সে ব্যবস্থা করা হবে। যাদের চাকরি দেওয়া যাবে না, তাদের জন্য থাকবে বেকার ভাতা। পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে আরও সমৃদ্ধ করা হবে।
তিনি আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে জামায়াতের সহযোগিতার আশ্বাসও দেন।
জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘যারা এর আগে দুর্নীতিতে বারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তারা আবারও সেই ধারাবাহিকতায় কাজ শুরু করেছে। বালু চুরি, পাথর চুরি, দুর্নীতি—সবই করছে তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কারের ব্যাপারে একটি দল বাদে সবাই এক মত হয়েছে। অথচ তারা ভাবছে, ক্ষমতায় গেলে তবেই না সংস্কার করবে!’
এদিন সকাল থেকেই সমাবেশে একের পর এক মিছিল নিয়ে স্বাধীনতা চত্বরে জড়ো হন জামায়াত নেতাকর্মীরা। স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো চত্বর।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহা. জাহিদুল ইসলাম, জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ।