Dhaka শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চড়া মাছ-মুরগি-সবজির বাজার, দিশেহারা মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নমধ্যবিত্তরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৫৪:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৮২ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বৃষ্টি ও সরবারহ ঘাটতির অজুহাতে গত কয়েকমাস ধরেই অস্থির সবজির বাজার। মাঝে কিছুটা ওঠানামা করলেও চলতি সপ্তাহে ফের বেড়েছে দাম। এছাড়াও মাছ ও মাংসের বাজার চড়া। সপ্তাহ ব্যবধানে বাজারে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দামই বেড়েছে। বেড়েছে গরীবের ইলিশ খ্যাত পাঙাশ-তেলাপিয়ার দামও। এতে জীবন নির্বাহে খরচের বোঝা সামলাতে না পারা মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নমধ্যবিত্ত সবার এখন দিশেহারা অবস্থা।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ানবাজার, বিজয় সরণীর কলমিলতা, মহাখালীর বউবাজার ও শেওড়াপাড়ার ইব্রাহিমপুর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সবজির বাজারে দেখা গেছে, চিচিঙ্গার কেজি ৮০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, লাউ ৮০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, উস্তা ১০০ টাকা, বেগুন ১২০ টাকা, বড় (বেগুনি রং) বেগুন ২০০ টাকা, ঝিঙ্গা ১০০ টাকা, চালকুমড়া ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে বাজারভেদে ৩৫ কাটা, পটল ৮০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেড়স ১০০ টাকা, ধুন্দল ১০০ টাকা এবং কাকরোলের কেজি ১০০ টাকা দেখা গেছে বাজারগুলোতে। কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা।

এছাড়া গাজর ১২০ টাকা, টমেটো ১৪০ টাকা, মুলা ৮০ টাকা, কচুর লতি ৭০ টাকা কেজি এবং লেবুর হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় মিলছে।

বাজারে মাঝারি মানের এক হালি কাঁচকলা ৪০ টাকা, বড় কাঁচকলা ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, ওলের কেজি মিলছে ৭০ টাকা। বাজারে মণ খারাপ শুধু আলুর। প্রতি কেজি আলুর দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা। কোনো বাজারেই এ সবজির দাম ২৫ টাকার ওপরে দেখা যায়নি।

উচ্চ মূল্যের বাজারে বাড়তি পকেট কাটছে শাকের দাম। বাজারগুলোতে লাল শাকের আঁটি ২৫ টাকা, পুঁই শাকের আঁটি ৫০ টাকা, লাউ শাক ৫০ টাকা, কলমি শাকের আঁটি ২৫ টাকা এবং কচুর শাকের আঁটি ১০ টাকায় মিলছে।

প্রতিযোগিতার দামে দেশি সবজির মণ খারাপের অবস্থা সাহেবি সবজিতে। এত বেড়েও নাগাল ছুতে পারেনি বিদেশি সবজির দামে। বাজারে সবুজ ক্যাপসিকাম মিলছে ৩৫০ টাকা কেজি, রঙিন ক্যাপসিকাম ৮০০ টাকা এবং বিটরুট প্রতি কেজির দাম রাখা হচ্ছে ১৪০ টাকা।

শীত আসতে ঢের দেরি। তার আগে বাজারে যে নতুন শিম উঠেছে তার কেজি ২৫০ টাকা এবং ২০০/২৫০ গ্রামের একটি ফুল কপির দাম বাজারভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দেখা যাচ্ছে।

এক মাসে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়ার পর ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগিও ২৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২৮০ টাকায় উঠেছে। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে গরু ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি ও খাসি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

আর মাছের মধ্যে রুই কেজিপ্রতি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, বাইলা ৮৫০ টাকা, টেংরা ৮০০ টাকা ও চিংড়ি কেজিপ্রতি ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ গুড়া মাছ ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, ইলিশের বাজার এখনো চড়া রয়েছে। সবচেয়ে বড় সাইজের অর্থাৎ ১ কেজি ২০০ থেকে ১ কেজি ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর সবচেয়ে ছোট সাইজের ইলিশ ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭২ টাকা। সুপার পাম অয়েলের লিটার বিক্রি হয়েছে ১৫৫ টাকা ১৬০ টাকা দরে। চার দিন আগেও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের দাম ১৬৯ এবং পাম অয়েলের দাম ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

এদিকে, বাজারে এখন নাজিরশাইল চাল ৮৪ থেকে ৮৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহেও তা ৯০ থেকে ৯২ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। মোটা চালের মধ্যে পায়জাম ও স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকায়, যা কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা কমেছে। তবে মিনিকেট চাল আগের দামেই ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, বাজারের পেঁয়াজের দাম সামান্য কমেছে। আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হলে এখন ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে পাড়া-মহল্লায় এ দাম আরও অন্তত ৫ টাকা বেশি।

অন্যদিকে, এখন এক কেজি প্যাকেটেজাত আটা কোম্পানি ভেদে ৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। খোলা আটার দাম ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। একইভাবে বিভিন্ন কোম্পানির ময়দার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চড়া মাছ-মুরগি-সবজির বাজার, দিশেহারা মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নমধ্যবিত্তরা

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৪:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বৃষ্টি ও সরবারহ ঘাটতির অজুহাতে গত কয়েকমাস ধরেই অস্থির সবজির বাজার। মাঝে কিছুটা ওঠানামা করলেও চলতি সপ্তাহে ফের বেড়েছে দাম। এছাড়াও মাছ ও মাংসের বাজার চড়া। সপ্তাহ ব্যবধানে বাজারে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দামই বেড়েছে। বেড়েছে গরীবের ইলিশ খ্যাত পাঙাশ-তেলাপিয়ার দামও। এতে জীবন নির্বাহে খরচের বোঝা সামলাতে না পারা মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নমধ্যবিত্ত সবার এখন দিশেহারা অবস্থা।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ানবাজার, বিজয় সরণীর কলমিলতা, মহাখালীর বউবাজার ও শেওড়াপাড়ার ইব্রাহিমপুর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সবজির বাজারে দেখা গেছে, চিচিঙ্গার কেজি ৮০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, লাউ ৮০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, উস্তা ১০০ টাকা, বেগুন ১২০ টাকা, বড় (বেগুনি রং) বেগুন ২০০ টাকা, ঝিঙ্গা ১০০ টাকা, চালকুমড়া ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে বাজারভেদে ৩৫ কাটা, পটল ৮০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেড়স ১০০ টাকা, ধুন্দল ১০০ টাকা এবং কাকরোলের কেজি ১০০ টাকা দেখা গেছে বাজারগুলোতে। কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা।

এছাড়া গাজর ১২০ টাকা, টমেটো ১৪০ টাকা, মুলা ৮০ টাকা, কচুর লতি ৭০ টাকা কেজি এবং লেবুর হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় মিলছে।

বাজারে মাঝারি মানের এক হালি কাঁচকলা ৪০ টাকা, বড় কাঁচকলা ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, ওলের কেজি মিলছে ৭০ টাকা। বাজারে মণ খারাপ শুধু আলুর। প্রতি কেজি আলুর দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা। কোনো বাজারেই এ সবজির দাম ২৫ টাকার ওপরে দেখা যায়নি।

উচ্চ মূল্যের বাজারে বাড়তি পকেট কাটছে শাকের দাম। বাজারগুলোতে লাল শাকের আঁটি ২৫ টাকা, পুঁই শাকের আঁটি ৫০ টাকা, লাউ শাক ৫০ টাকা, কলমি শাকের আঁটি ২৫ টাকা এবং কচুর শাকের আঁটি ১০ টাকায় মিলছে।

প্রতিযোগিতার দামে দেশি সবজির মণ খারাপের অবস্থা সাহেবি সবজিতে। এত বেড়েও নাগাল ছুতে পারেনি বিদেশি সবজির দামে। বাজারে সবুজ ক্যাপসিকাম মিলছে ৩৫০ টাকা কেজি, রঙিন ক্যাপসিকাম ৮০০ টাকা এবং বিটরুট প্রতি কেজির দাম রাখা হচ্ছে ১৪০ টাকা।

শীত আসতে ঢের দেরি। তার আগে বাজারে যে নতুন শিম উঠেছে তার কেজি ২৫০ টাকা এবং ২০০/২৫০ গ্রামের একটি ফুল কপির দাম বাজারভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দেখা যাচ্ছে।

এক মাসে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়ার পর ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগিও ২৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২৮০ টাকায় উঠেছে। তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে গরু ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি ও খাসি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

আর মাছের মধ্যে রুই কেজিপ্রতি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, বাইলা ৮৫০ টাকা, টেংরা ৮০০ টাকা ও চিংড়ি কেজিপ্রতি ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ গুড়া মাছ ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, ইলিশের বাজার এখনো চড়া রয়েছে। সবচেয়ে বড় সাইজের অর্থাৎ ১ কেজি ২০০ থেকে ১ কেজি ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর সবচেয়ে ছোট সাইজের ইলিশ ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭২ টাকা। সুপার পাম অয়েলের লিটার বিক্রি হয়েছে ১৫৫ টাকা ১৬০ টাকা দরে। চার দিন আগেও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের দাম ১৬৯ এবং পাম অয়েলের দাম ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

এদিকে, বাজারে এখন নাজিরশাইল চাল ৮৪ থেকে ৮৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহেও তা ৯০ থেকে ৯২ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। মোটা চালের মধ্যে পায়জাম ও স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকায়, যা কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা কমেছে। তবে মিনিকেট চাল আগের দামেই ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, বাজারের পেঁয়াজের দাম সামান্য কমেছে। আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হলে এখন ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে পাড়া-মহল্লায় এ দাম আরও অন্তত ৫ টাকা বেশি।

অন্যদিকে, এখন এক কেজি প্যাকেটেজাত আটা কোম্পানি ভেদে ৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। খোলা আটার দাম ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। একইভাবে বিভিন্ন কোম্পানির ময়দার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।