Dhaka মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসিনার বিচার হলে ভবিষ্যৎ সরকারে যারা আসবেন তারা সতর্ক হবেন : মাহমুদুর রহমান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৩১:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৭৮ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট দুঃশাসনের ন্যায়বিচার দাবি করে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান তিনি বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে ভবিষ্যৎ সরকারে যারা আসবেন তারা সতর্ক হবেন।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এই বিচারের মাধ্যমে আমরা চাই ফ্যাসিস্ট শাসন যেন আর না আসে। ন্যায়বিচার করা হোক, তাহলে শহীদ পরিবার, আহত জুলাই যোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের শোক কিছুটা লাঘব হয়।

মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি একজন সাংবাদিক, লেখক ও ইতিহাস গবেষক হিসেবে গত ১৬ বছর ধরে এই ফ্যাসিস্ট শাসনের উত্থান, বিকাশ ও পতন প্রত্যক্ষ করেছি। অনবরত লেখালেখিসহ বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে জনগণকে অবহিত করার চেষ্টা করেছি। আমি চাই অপরাধীরা সাজা পাক। ন্যায়বিচার পেলে প্রায় ১৪০০ শহীদ ও ২০ হাজার আহত পরিবারের শোক কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট শাসনের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা গেলে ভবিষ্যতে আসা সরকাররাও সতর্ক হবে বলে প্রত্যাশা করি। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যেভাবে হিটলারকে বলা হয়েছিল ‘নেভার অ্যাগেইন’, বাংলাদেশেও এই বিচারের মাধ্যমে আমরা চাই ফ্যাসিস্ট শাসনের আগমন না ঘটুক। নিশ্চিত হোক যেন গত ১৫ বছরের দুঃশাসনের পুনরাবৃত্তি আর না হয়।

এদিন জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৪৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মাহমুদুর রহমানের জেরা শুরু হয়। তাকে জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।

জেরার একপর্যায়ে এই সাক্ষীর উদ্দেশ্যে আমির হোসেন বলেন, ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার পেছনে ২০০৮ সালে ভূমিকা রাখায় তৎকালীন ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা জেনারেল আমিন, ব্রিগেডিয়ার বারী ও ব্রিগেডিয়ার মামুন খালেদরা পদোন্নতি পেয়েছেন বলে আপনি সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে তারা নিজ যোগ্যতায় বড় পদ পেয়েছেন। কোনো পুরস্কার হিসেবে নয়।

জবাবে সত্য নয় বলে জানান মাহমুদুর রহমান। ইহা সত্য নয় যে, শেখ হাসিনার আমলে তোষামোদির মাধ্যমে পদোন্নতির ঘটনা ঘটেনি। পরে সাক্ষী বলেন, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে কারো কোনো পদোন্নতি যোগ্যতার ভিত্তিতে হয়নি। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী পুলিশের ডিআইজি থেকে ওপরের সব পদে পদোন্নতির বিষয়ে নিজ সিদ্ধান্ত দিতেন শেখ হাসিনা।
এ প্রসঙ্গে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, মাহমুদুর রহমান বলেছিলেন যে, পুলিশের ডিআইজি থেকে ওপরের পদোন্নতি সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতেন শেখ হাসিনা। তিনি যাকে মনে করতেন তাকে ওই পদে পদোন্নতি দিতেন আর যাকে করতেন না তাকে দিতেন না।

দ্বিতীয় দিনের মতো ট্রাইব্যুনালে আজ অবশিষ্ট সাক্ষ্য দেন মাহমুদুর রহমান। জবানবন্দিতে তিনি আওয়ামী দুঃশাসনকালের পুরো চিত্র তুলে ধরেন। একইসঙ্গে এমন ফ্যাসিস্ট সরকারের আগমন যেন বাংলাদেশে না হোক, সেজন্য জুলাই গণহত্যার ন্যায়বিচারের মাধ্যমে প্রত্যাশা করেছেন এই সাক্ষী।

মামলায় সাক্ষ্য দিতে মঙ্গলবার বেলা ১১টার ১১টার কিছুক্ষণ আগে ট্রাইব্যুনালে পৌঁছান তিনি। দুপুর ১২টা থেকে জবানবন্দি দেওয়া শুরু করেন। বেলা ১টার কিছুক্ষণ আগে জবানবন্দি দেওয়া শেষ করেন মাহমুদুর রহমানের। এরপর তাকে জেরা শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। এর আগে তিনি সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রথম দিন তার জবানবন্দি দেন। এ দিকে, সাক্ষ্য দেওয়ার পর মাহমুদুরকে জেরা করা শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য নেওয়া হবে ট্রাইব্যুনালে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পরিণাম ভবিষ্যতে ভয়ংকর চর্চায় রূপ নিবে : সালাহউদ্দিন আহমদ

হাসিনার বিচার হলে ভবিষ্যৎ সরকারে যারা আসবেন তারা সতর্ক হবেন : মাহমুদুর রহমান

প্রকাশের সময় : ০৪:৩১:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট দুঃশাসনের ন্যায়বিচার দাবি করে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান তিনি বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে ভবিষ্যৎ সরকারে যারা আসবেন তারা সতর্ক হবেন।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এই বিচারের মাধ্যমে আমরা চাই ফ্যাসিস্ট শাসন যেন আর না আসে। ন্যায়বিচার করা হোক, তাহলে শহীদ পরিবার, আহত জুলাই যোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের শোক কিছুটা লাঘব হয়।

মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি একজন সাংবাদিক, লেখক ও ইতিহাস গবেষক হিসেবে গত ১৬ বছর ধরে এই ফ্যাসিস্ট শাসনের উত্থান, বিকাশ ও পতন প্রত্যক্ষ করেছি। অনবরত লেখালেখিসহ বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে জনগণকে অবহিত করার চেষ্টা করেছি। আমি চাই অপরাধীরা সাজা পাক। ন্যায়বিচার পেলে প্রায় ১৪০০ শহীদ ও ২০ হাজার আহত পরিবারের শোক কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট শাসনের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা গেলে ভবিষ্যতে আসা সরকাররাও সতর্ক হবে বলে প্রত্যাশা করি। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যেভাবে হিটলারকে বলা হয়েছিল ‘নেভার অ্যাগেইন’, বাংলাদেশেও এই বিচারের মাধ্যমে আমরা চাই ফ্যাসিস্ট শাসনের আগমন না ঘটুক। নিশ্চিত হোক যেন গত ১৫ বছরের দুঃশাসনের পুনরাবৃত্তি আর না হয়।

এদিন জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৪৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মাহমুদুর রহমানের জেরা শুরু হয়। তাকে জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।

জেরার একপর্যায়ে এই সাক্ষীর উদ্দেশ্যে আমির হোসেন বলেন, ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার পেছনে ২০০৮ সালে ভূমিকা রাখায় তৎকালীন ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা জেনারেল আমিন, ব্রিগেডিয়ার বারী ও ব্রিগেডিয়ার মামুন খালেদরা পদোন্নতি পেয়েছেন বলে আপনি সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে তারা নিজ যোগ্যতায় বড় পদ পেয়েছেন। কোনো পুরস্কার হিসেবে নয়।

জবাবে সত্য নয় বলে জানান মাহমুদুর রহমান। ইহা সত্য নয় যে, শেখ হাসিনার আমলে তোষামোদির মাধ্যমে পদোন্নতির ঘটনা ঘটেনি। পরে সাক্ষী বলেন, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে কারো কোনো পদোন্নতি যোগ্যতার ভিত্তিতে হয়নি। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী পুলিশের ডিআইজি থেকে ওপরের সব পদে পদোন্নতির বিষয়ে নিজ সিদ্ধান্ত দিতেন শেখ হাসিনা।
এ প্রসঙ্গে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, মাহমুদুর রহমান বলেছিলেন যে, পুলিশের ডিআইজি থেকে ওপরের পদোন্নতি সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতেন শেখ হাসিনা। তিনি যাকে মনে করতেন তাকে ওই পদে পদোন্নতি দিতেন আর যাকে করতেন না তাকে দিতেন না।

দ্বিতীয় দিনের মতো ট্রাইব্যুনালে আজ অবশিষ্ট সাক্ষ্য দেন মাহমুদুর রহমান। জবানবন্দিতে তিনি আওয়ামী দুঃশাসনকালের পুরো চিত্র তুলে ধরেন। একইসঙ্গে এমন ফ্যাসিস্ট সরকারের আগমন যেন বাংলাদেশে না হোক, সেজন্য জুলাই গণহত্যার ন্যায়বিচারের মাধ্যমে প্রত্যাশা করেছেন এই সাক্ষী।

মামলায় সাক্ষ্য দিতে মঙ্গলবার বেলা ১১টার ১১টার কিছুক্ষণ আগে ট্রাইব্যুনালে পৌঁছান তিনি। দুপুর ১২টা থেকে জবানবন্দি দেওয়া শুরু করেন। বেলা ১টার কিছুক্ষণ আগে জবানবন্দি দেওয়া শেষ করেন মাহমুদুর রহমানের। এরপর তাকে জেরা শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। এর আগে তিনি সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রথম দিন তার জবানবন্দি দেন। এ দিকে, সাক্ষ্য দেওয়ার পর মাহমুদুরকে জেরা করা শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য নেওয়া হবে ট্রাইব্যুনালে।