Dhaka শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক পান্নার জামিন নামঞ্জুর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১৪:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৮১ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর শাহবাগ থানার সন্ত্রাস বিরোধ আইনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ পিয়াসের আদালত এ আদেশ দেন।

আসামিদের পক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখীসহ অনেকেই তাদের জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন এই জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।

প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জিন্নাত আলী এ তথ্য দিয়েছেন।

২৮ অগাস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে এক আলোচনা সভায় ‘মব’ হামলার শিকার লতিফ সিদ্দিকী, সাংবাদিক পান্নাসহ ১৬ জনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরের দিন শুক্রবার শাহবাগ থানা সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

বুধবার লতিফ সিদ্দিকীর স্বাস্থ বিষয়ক প্রতিবেদন না পাওয়ায় জামিন আবেদন করেও তা প্রত্যাহার করে নেন আইনজীবী।

এদিন আবারও লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে মোহাম্মদ কামরুল হোসেন ও ইফফাত জাহান রনি জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

সাংবাদিক পান্নার পক্ষে ফারজানা ইয়াসমিন রাখী জামিন আবেদন করেন।

আইনজীবী কামরুল হোসেন আদালতে বলেন, লতিফ সিদ্দিকী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, এটা কারো অজানা না। ঘরোয়া পরিবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, সাংবাদিক, সমাজের বিশিষ্ট লোকদের ‘মব ভায়োলেন্স’ করে উত্তেজিত হয়ে মারধর করে। তিনি কিন্তু আওয়ামী লীগের আমলেও কারাগারে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেই ফ্যাসিস্ট, আওয়ামী বানিয়ে দেন। তাহলে কি মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জন আওয়ামী লীগের। অনেক দলে অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছে। ৮৭ বছর বয়সের একজন লোক। তাছাড়া তিনি অসুস্থ। তার জামিনের প্রার্থনা করছি।

সাংবাদিক পান্নার পক্ষে ফারজানা ইয়াসমিন রাখী বলেন, এজাহারে সাংবাদিক পান্নার বিরুদ্ধে একটা ‘সিঙ্গেল লাইনও’ নেই। আলোচনা সভা করার আগে কিন্তু ডিএমপির অনুমতি ছিল। যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কনসার্ন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভাবে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করতে সমাজের ভদ্র স্বভাবের মানুষ লাঞ্ছিত হলেন। যারা লাঞ্ছিত করলো তাদের বিরুদ্ধে মামলা না দিয়ে যারা লাঞ্ছিত হলেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলো। তার জামিনের প্রার্থনা করছি।

শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেয়।

মামলায় বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের লক্ষ্যে গত ৫ অগাস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এ সংগঠনের উদ্দেশ্য জাতির অর্জনকে মুছে ফেলার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নেওয়া। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ২৮ অগাস্ট সকাল ১০টায় একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেগুনবাগিচায় বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর মধ্যেই এক দল ব্যক্তি হট্টগোল করে স্লোগান দিয়ে সভাস্থলে ঢুকে পড়েন। একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানস্থলের দরজা বন্ধ করে দেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া কয়েকজনকে লাঞ্ছিত করেন। হট্টগোলকারীরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন এবং আলোচনায় অংশ নেওয়াদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে অতিথিদের অনেককেই বের করে দেওয়া হলেও আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। পরে পুলিশ এসে ১৬ জনকে আটক করে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেন এসআই আমিরুল ইসলাম। পরবর্তীতে এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

লতিফ সিদ্দিকী ও পান্না ছাড়া বাকি ১৪ জন হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), কাজী এ টি এম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু, মো. জাকির হোসেন, মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, মো. তৌছিফুল বারী খান, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহম্মদ আলী, মো. আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বার্ড স্ট্রাইক, বেঙ্গালুরুতে ফ্লাইট বাতিল করল এয়ার ইন্ডিয়া

লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক পান্নার জামিন নামঞ্জুর

প্রকাশের সময় : ০৮:১৪:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর শাহবাগ থানার সন্ত্রাস বিরোধ আইনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ পিয়াসের আদালত এ আদেশ দেন।

আসামিদের পক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখীসহ অনেকেই তাদের জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন এই জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।

প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জিন্নাত আলী এ তথ্য দিয়েছেন।

২৮ অগাস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে এক আলোচনা সভায় ‘মব’ হামলার শিকার লতিফ সিদ্দিকী, সাংবাদিক পান্নাসহ ১৬ জনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরের দিন শুক্রবার শাহবাগ থানা সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

বুধবার লতিফ সিদ্দিকীর স্বাস্থ বিষয়ক প্রতিবেদন না পাওয়ায় জামিন আবেদন করেও তা প্রত্যাহার করে নেন আইনজীবী।

এদিন আবারও লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে মোহাম্মদ কামরুল হোসেন ও ইফফাত জাহান রনি জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

সাংবাদিক পান্নার পক্ষে ফারজানা ইয়াসমিন রাখী জামিন আবেদন করেন।

আইনজীবী কামরুল হোসেন আদালতে বলেন, লতিফ সিদ্দিকী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, এটা কারো অজানা না। ঘরোয়া পরিবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, সাংবাদিক, সমাজের বিশিষ্ট লোকদের ‘মব ভায়োলেন্স’ করে উত্তেজিত হয়ে মারধর করে। তিনি কিন্তু আওয়ামী লীগের আমলেও কারাগারে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেই ফ্যাসিস্ট, আওয়ামী বানিয়ে দেন। তাহলে কি মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জন আওয়ামী লীগের। অনেক দলে অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছে। ৮৭ বছর বয়সের একজন লোক। তাছাড়া তিনি অসুস্থ। তার জামিনের প্রার্থনা করছি।

সাংবাদিক পান্নার পক্ষে ফারজানা ইয়াসমিন রাখী বলেন, এজাহারে সাংবাদিক পান্নার বিরুদ্ধে একটা ‘সিঙ্গেল লাইনও’ নেই। আলোচনা সভা করার আগে কিন্তু ডিএমপির অনুমতি ছিল। যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কনসার্ন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভাবে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করতে সমাজের ভদ্র স্বভাবের মানুষ লাঞ্ছিত হলেন। যারা লাঞ্ছিত করলো তাদের বিরুদ্ধে মামলা না দিয়ে যারা লাঞ্ছিত হলেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলো। তার জামিনের প্রার্থনা করছি।

শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেয়।

মামলায় বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের লক্ষ্যে গত ৫ অগাস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এ সংগঠনের উদ্দেশ্য জাতির অর্জনকে মুছে ফেলার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নেওয়া। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ২৮ অগাস্ট সকাল ১০টায় একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেগুনবাগিচায় বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর মধ্যেই এক দল ব্যক্তি হট্টগোল করে স্লোগান দিয়ে সভাস্থলে ঢুকে পড়েন। একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানস্থলের দরজা বন্ধ করে দেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া কয়েকজনকে লাঞ্ছিত করেন। হট্টগোলকারীরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন এবং আলোচনায় অংশ নেওয়াদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে অতিথিদের অনেককেই বের করে দেওয়া হলেও আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। পরে পুলিশ এসে ১৬ জনকে আটক করে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেন এসআই আমিরুল ইসলাম। পরবর্তীতে এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

লতিফ সিদ্দিকী ও পান্না ছাড়া বাকি ১৪ জন হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), কাজী এ টি এম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু, মো. জাকির হোসেন, মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, মো. তৌছিফুল বারী খান, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহম্মদ আলী, মো. আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।