সূত্র জানায়, পৌরশহরের অয়েলমিল মসজিদ সড়ক, ইউএনও সড়ক, হাসপাতাল সড়ক,মাদ্রাসা সড়ক, ইসমাইল তালুকদার টেকনিক্যাল সড়ক, নজরুল ইসলাম সড়ক, পল্লী বিদ্যুৎ সড়ক, নাচনাপাড়া সড়ক, রহমতপুর কানেকটিং সড়ক, ভূমি অফিস সড়ক সহ শহরের বেশ কিছু সড়কে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে উন্নয়ন চিত্র। অপরিকল্পিত উন্নয়নের দেখা মিলবে শহরের আবাসিক এলাকায় অনুমোদনহীন নকশায় বাড়ী তৈরী কিংবা একাধিক ড্রেন নির্মান সহ সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়ার চিত্রে। সড়কের চেয়ে উঁচু ড্রেন নির্মানের পর ফুট পাথ হিসেবে ব্যবহারে ঢাকনা তৈরী করা হলেও তেমন কাজে আসছেনা পথচারীদের। এনিয়ে উন্নয়ন সভা, সেমিনারে কথা ওঠায় ফের ড্রেন ভেঙ্গে সড়কের সমান্তরাল করা হচ্ছে। অপরিকল্পিত একই উন্নয়ন কর্মকান্ডে পৌরসভার অর্থ গচ্চা গেলেও লাভবান হচ্ছে কারা? এমন প্রশ্ন এখন নাগরিকদের।
সূত্রটি আরও জানায়, ২৪’র জুলাই আন্দোলনের পর অবস্থার পরিবর্তনে নাগরিকদের মনে আশার সঞ্চার হলেও বদলায়নি কিছুই। পৌরসভার হাট, বাজার, বাসষ্ট্যান্ড ইজারা আদায়ে কাগজে কলমে খাস কালেকশনের তথ্য থাকলেও রাজস্ব আদায় খাতের লোপাট চিত্র ফ্যাসীবাদ বিগতদিনেরই। উন্নয়ন কর্মকান্ডের দরপত্র প্রক্রিয়া অনলাইনে থাকলেও সবকিছুই হচ্ছে আগেরমত অফলাইনে। এক জনের লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজ করছে অন্যজন। কাজ শেষ হওয়ার আগেই ছাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে বিল। এমনকি দরপত্র প্রকাশের আগেই উন্নয়ন কাজ শেষ করে বসে আছে নেতার আশীর্বাদ পুষ্ট ঠিকাদার। পরের দরপত্রে যুক্ত করা হচ্ছে উন্নয়ন কাজ। এরপরও সন্তুষ্ট নন নেতা, পৌরসভার কাজ পেতে রাত বেরাতে মাতাল হয়ে প্রকৌশলীদের হুমকী ধামকী দিচ্ছেন তিনি। এমন অভিযোগ ওঠার পরও পাল্টায়নি দৃশ্যপট। কমছেনা মধ্য রাতে মাতাল হওয়া নেতার দাপট।
এদিকে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজের সিংহভাগ অর্থ ব্যয় হয়েছে সড়ক, ড্রেন নির্মানে। ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজের সিংহভাগ ব্যয় হয়েছে ফের সড়ক, ড্রেন উন্নয়ন কাজ সহ শহরের হ্যালিপ্যাড উন্নয়ন কাজে। গত দুই অর্থ বছরের দৃশ্যমান এসব উন্নয়ন কাজ পর্যবেক্ষনে টেকসই পরিকল্পনার অভাব সহ প্রকাশ হয়ে পড়তে পারে লুটপাটের আসল চিত্র। এরপরও ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে শহরের ফেরীঘাট চৌরাস্তা থেকে বড় মসজিদ পর্যন্ত ওয়াক ওয়ে নির্মান কাজ চলছে পৌরসভার অর্থায়নে। যে কাজ নিয়ে খোদ বিএনপি শিবিরেই চলছে কানা ঘুষা। এমনও শোনা যাচ্ছে, একাজে সাধারণ জনগণের উপকার হবেনা,উপকার হবে ঠিকাদার ও পৌরসভার কিছু কর্মকর্তার। এমনও মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে। তবুও বর্ষায় শহরের জলাবদ্ধতা, অপরিকল্পিত ময়লা ব্যবস্থাপনা, মশার উপদ্রব, পানি সাপ্লাই সংকট, অনিয়ন্ত্রিত গবাদিপশুর উপদ্রব নিত্য সঙ্গী এখন নাগরিকদের।
পৌরসভার রহমতপুর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক অ্যাডভোকেট বিএইচ তালুকদার সুমন বলেন, ’আমার বাসার সামনের সড়কে মাসের পর মাস পানি জমে থাকছে। স্বাভাবিক চলাফেরা ব্যহত হলেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা কেউ।’
কলাপাড়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মশিউর রহমান বলেন, কলাপাড়া পৌরসভার উন্নয়নে কোনও মাষ্টার প্লান করা হয়নি। অন্য পৌরসভায় মাষ্টার প্লান দেখেছি। শহরের বেশ কিছু সড়ক সংস্কারে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। এডিবি’র বরাদ্দ পেলে সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। পৌরসভার সামনে থেকে বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেনের বাসা পর্যন্ত সড়কের পার্শ্ববর্তী ড্রেনের ওয়াল ভেঙ্গে সড়কের সাথে সমান্তরাল করার উদ্দোগ নেয়া হয়েছে।