Dhaka রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনার পতন আল্লাহর তরফ থেকে হয়েছে : কাদের সিদ্দিকী

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি : 

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছেন, শেষ হাসিনার পতন ঘটিয়েছেন আমি তাদের সমর্থন করি। কারণ, শেখ হাসিনার পতন আল্লাহর তরফ থেকে হয়েছে।

শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে ঘাটাইল উপজেলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত মাকড়াই দিবস উপলক্ষে কাদেরিয়া বাহিনী মুক্তিযোদ্ধার মহাসমাবেশে প্রধান প্রক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জনগণ রাস্তায় নেমেছিল বলে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আইন অনুযায়ী তার বিচার করুন, শাস্তি দিন মাথা পেতে নিব। শেখ মুজিব আর শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না। মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ, শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন জয় বাংলা থাকবে। ততদিন বঙ্গবন্ধু থাকবে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের পিতা থাকবে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধুর মাথায় প্রস্রাব করা আমার মাথায় প্রস্রাব হয় নাই। স্বাধীনতার মাথায় প্রস্রাব করা হয় নাই। জিয়াউর রহমানের মাথায় প্রস্রাব করা হয় নাই। বাংলাদেশ ও স্বাধীনতার মাথায় প্রস্রাব করা হয়েছে। এর বিচার চাই, বিচার চাই, বিচার চাই। বঙ্গবন্ধুর বাড়ি যারা ভেঙেছেন, মনে রাখবেন তাদেরও বাড়িঘর রয়েছে। তাদেরও কবর রয়েছে, তাদেরও স্মৃতিসংঘ রয়েছে। তাদের কবর হাতে নিয়ে ঘুরতে পারবেন না। বাড়িঘর হাতে নিয়ে যেতে পারবেন না। তাই সীমা অতিক্রম করবেন না।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, কেউ একজন বলেছেন বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা নন। বঙ্গবন্ধু যদি জাতির পিতা না হন, তাহলে আপনার পিতা কে? কোনও সন্তানের পিতা না থাকলে সে সন্তান সম্মানী সন্তান হয় না, সে সন্তান কুলাঙ্গার হয়। একটু ভেবে চিন্তে বলবেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, শহীদ স্মৃতি উদ্যানে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ার কারণে কাকে কাকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। এই মাকড়াইয়ে এখানে দাঁড়িয়ে বলছি- আল্লাহ যদি দুই বছর বাঁচিয়ে রাখে, যারা গ্রেপ্তার করছে, তাদেরকে গ্রেপ্তার করিয়ে চৌদ্দ শিকের ভেতরে দেব।

তিনি আরো বলেন, অধ্যাপক ইউনূসকে আমি সম্মান করতাম। বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভেঙেছে আপনি দেখেছেন। আপনার গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ছিল আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সরকার। বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছিল। আমি কাদের সিদ্দিকী পাশে না দাঁড়ালে আপনার অর্ধেক গ্রামীণ ব্যাংক মাটির নিচে চলে যেত। আপনার এক বছরের শাসনে সেটি আর হৃদয় থেকে নিতে পারছি না। আপনাকে আবার আমি অনুরোধ করছি, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না দিলে এবং নির্বাচন করতে না পারলে শেখ হাসিনার চাইতে আপনার পরিণতি ১০ গুণ খারাপ হবে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। মুক্তিযোদ্ধাদের গলায় যারা জুতার মালা দিয়েছেন, আমি সেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যেকের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেব ইনশাআল্লাহ।

মুক্তযোদ্ধা নিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। তাদের সম্মানী এক লাখ টাকা করতে হবে। তবে, এ বছরই তাদের সম্মানী ৫০ হাজার করার দাবি জানাচ্ছি। আমরা ভিক্ষা চাই না, সম্মানী চাই। যুদ্ধ বড় কঠিন জিনিস। যখন মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তখন জীবনের মায়াও ছিল না। আমি কোনো দারগা-পুলিশকে ভয় পাই না। আমি আল্লাহ ও রসূলকে ভয় করি। আমি মানুষকে ভয় করি। আমি মুক্তিযোদ্ধার সম্মান বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেছি।”

অনুষ্ঠানে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ফজলুর হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, ঘাটাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এমদাদুল হক খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন, হুমায়ুন বাংগাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান প্রমুখ। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ত্রিশাল জিরো পয়েন্ট-হরিরামপুর সড়কটি যেন মরণফাঁদ

শেখ হাসিনার পতন আল্লাহর তরফ থেকে হয়েছে : কাদের সিদ্দিকী

প্রকাশের সময় : ১২:৫৩:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি : 

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছেন, শেষ হাসিনার পতন ঘটিয়েছেন আমি তাদের সমর্থন করি। কারণ, শেখ হাসিনার পতন আল্লাহর তরফ থেকে হয়েছে।

শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে ঘাটাইল উপজেলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত মাকড়াই দিবস উপলক্ষে কাদেরিয়া বাহিনী মুক্তিযোদ্ধার মহাসমাবেশে প্রধান প্রক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জনগণ রাস্তায় নেমেছিল বলে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আইন অনুযায়ী তার বিচার করুন, শাস্তি দিন মাথা পেতে নিব। শেখ মুজিব আর শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না। মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ, শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন জয় বাংলা থাকবে। ততদিন বঙ্গবন্ধু থাকবে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের পিতা থাকবে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধুর মাথায় প্রস্রাব করা আমার মাথায় প্রস্রাব হয় নাই। স্বাধীনতার মাথায় প্রস্রাব করা হয় নাই। জিয়াউর রহমানের মাথায় প্রস্রাব করা হয় নাই। বাংলাদেশ ও স্বাধীনতার মাথায় প্রস্রাব করা হয়েছে। এর বিচার চাই, বিচার চাই, বিচার চাই। বঙ্গবন্ধুর বাড়ি যারা ভেঙেছেন, মনে রাখবেন তাদেরও বাড়িঘর রয়েছে। তাদেরও কবর রয়েছে, তাদেরও স্মৃতিসংঘ রয়েছে। তাদের কবর হাতে নিয়ে ঘুরতে পারবেন না। বাড়িঘর হাতে নিয়ে যেতে পারবেন না। তাই সীমা অতিক্রম করবেন না।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, কেউ একজন বলেছেন বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা নন। বঙ্গবন্ধু যদি জাতির পিতা না হন, তাহলে আপনার পিতা কে? কোনও সন্তানের পিতা না থাকলে সে সন্তান সম্মানী সন্তান হয় না, সে সন্তান কুলাঙ্গার হয়। একটু ভেবে চিন্তে বলবেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, শহীদ স্মৃতি উদ্যানে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ার কারণে কাকে কাকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। এই মাকড়াইয়ে এখানে দাঁড়িয়ে বলছি- আল্লাহ যদি দুই বছর বাঁচিয়ে রাখে, যারা গ্রেপ্তার করছে, তাদেরকে গ্রেপ্তার করিয়ে চৌদ্দ শিকের ভেতরে দেব।

তিনি আরো বলেন, অধ্যাপক ইউনূসকে আমি সম্মান করতাম। বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভেঙেছে আপনি দেখেছেন। আপনার গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ছিল আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সরকার। বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছিল। আমি কাদের সিদ্দিকী পাশে না দাঁড়ালে আপনার অর্ধেক গ্রামীণ ব্যাংক মাটির নিচে চলে যেত। আপনার এক বছরের শাসনে সেটি আর হৃদয় থেকে নিতে পারছি না। আপনাকে আবার আমি অনুরোধ করছি, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না দিলে এবং নির্বাচন করতে না পারলে শেখ হাসিনার চাইতে আপনার পরিণতি ১০ গুণ খারাপ হবে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। মুক্তিযোদ্ধাদের গলায় যারা জুতার মালা দিয়েছেন, আমি সেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যেকের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেব ইনশাআল্লাহ।

মুক্তযোদ্ধা নিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। তাদের সম্মানী এক লাখ টাকা করতে হবে। তবে, এ বছরই তাদের সম্মানী ৫০ হাজার করার দাবি জানাচ্ছি। আমরা ভিক্ষা চাই না, সম্মানী চাই। যুদ্ধ বড় কঠিন জিনিস। যখন মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তখন জীবনের মায়াও ছিল না। আমি কোনো দারগা-পুলিশকে ভয় পাই না। আমি আল্লাহ ও রসূলকে ভয় করি। আমি মানুষকে ভয় করি। আমি মুক্তিযোদ্ধার সম্মান বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেছি।”

অনুষ্ঠানে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ফজলুর হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, ঘাটাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এমদাদুল হক খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন, হুমায়ুন বাংগাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান প্রমুখ। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।