Dhaka বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুযোগ পেলে প্রথম দিন থেকে দেশের কল্যাণে কাজ করবে বিএনপি : আমীর খসরু

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে প্রথম দিন থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে এবং তা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞ টিম এ বিষয়ে কাজ করছে। ভেটেরিনারি সায়েন্স, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইসিটি ইত্যাদি খাতকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আর সেটাই হবে নতুন বাংলাদেশের লক্ষ্য।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে এককভাবে রাজত্ব কায়েম করেছিল। আমাদের গণতন্ত্র পরিপূর্ণভাবে পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে। সেই গণতন্ত্র প্রবর্তনের জন্য আমাদের মনমানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ভিন্নমতের প্রতি সম্মান জানাতে হবে।

শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন অনিবার্য ছিল উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের উপর অবিচার হয়েছে। ৬০-৭০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, কয়েক হাজার লোক গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছে, জেলখানার মধ্যে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করেছে। গত ৫ আগস্ট আমি নিজেও কারাগারে বন্দি ছিলাম।

তিনি বলেন, জুলাইয়ের ত্যাগের প্রতি আমরা যদি সম্মান জানাতে চাই, তাহলে যার যার অবস্থান থেকে দেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করতে হবে। তাহলে এই ত্যাগের সঠিক মূল্যায়ন করা হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে। আমাদের মনমানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। কথাবার্তায়, আচার-আচরণে গণতান্ত্রিক হতে হবে। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন আনতে হবে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আপনাকে আস্থা রাখতে হবে বাংলাদেশের মালিক যারা জনগণ, তাদের উপর। যত পরিবর্তন, যত সংস্কার, যত আগামী দিনের রূপরেখা- এটাকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে আসতে হবে। জনগণের কাছে আপনাকে যেতে হবে, যেটা শেখ হাসিনা বন্ধ করে দিয়েছিল। এই পথটা উন্মুক্ত করে দিতে হবে। যারা যা করতে চাইবে, জনগণের কাছে যেতে হবে। বলতে হবে, ‘আমরা এই কাজগুলো করতে চাই নতুন বাংলাদেশের জন্য’। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আপনি আগামী দিনের পরিবর্তন আনবেন। আপনার নিজের ম্যান্ডেট না।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা কিন্তু চলে গেছে। সে কিন্তু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বৈরাচার রেখে গেছে আমাদের মধ্যে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফ্যাসিস্ট রেখে গেছে। আচার-আচরণে দেখবেন, ‘এটা হতে হবে, এটা দিতে হবে, এটা না দিলে আমরা নাই’। আমি তো মালিক হই নাই এদেশের; মালিক হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ। এই গণতান্ত্রিক মন-মানসিকতায় আপনাকে আসতে হবে।

“নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হচ্ছে কারেকশন প্রসেস, আপনি ভুল করলে যা আপনাকে সংশোধন করবে; প্রতিবাদ করবেন গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক ভাবে।”

নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার পর বাংলাদেশের মানুষের মনে যে প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা জেগেছে- এটা যদি আমরা ধারণ করতে না পারি, সবকিছু বৃথা যাবে। কোনো রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দল যদি এটা ধারণ করতে না পারে, তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ নেই। শেখ হাসিনার যে কারণে ফ্যাসিস্ট হয়েছে- গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে এককভাবে যা করতে চেয়েছে; আমাদেরকে গণতন্ত্র পরিপূর্ণভাবে পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে। আধা গণতন্ত্র না, থ্রি কোয়ার্টার গণতন্ত্র না। এবং সেই গণতন্ত্র প্রবর্তনের জন্য আমাদেরও মন-মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন আছে। এজন্য আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এখন প্রত্যয়- বিল্ড দ্য ন্যাশন। এই ত্যাগের প্রতি যদি সম্মান জানাতে চাই, তাহলে যার যার জায়গা থেকে দেশ গড়ার কাজ করতে হবে। রাজনীতির সাথে সাথে অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ন করতে হবে। দেশের প্রত্যেক মানুষের অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ করতে সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সিভাসু’র উপাচার্য মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান। অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. ওমর ফারুক ইউসুফ, সিভাসুর পরিচালক (বহিরাঙ্গন কার্যক্রম) প্রফেসর ড. এ. কে. এম. সাইফুদ্দিন, পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রাশেদুল আলম এবং পরিচালক (পিআরটিসি) প্রফেসর ড. এ. কে. এম. হুমায়ুন কবির। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। এতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত সিভাসুর ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাহাত বিন জাহাঙ্গীরও বক্তব্য রাখেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কুড়িগ্রামে সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগে ৩০ গ্রামের মানুষ

সুযোগ পেলে প্রথম দিন থেকে দেশের কল্যাণে কাজ করবে বিএনপি : আমীর খসরু

প্রকাশের সময় : ০৯:২৮:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে প্রথম দিন থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে এবং তা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞ টিম এ বিষয়ে কাজ করছে। ভেটেরিনারি সায়েন্স, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইসিটি ইত্যাদি খাতকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আর সেটাই হবে নতুন বাংলাদেশের লক্ষ্য।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে এককভাবে রাজত্ব কায়েম করেছিল। আমাদের গণতন্ত্র পরিপূর্ণভাবে পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে। সেই গণতন্ত্র প্রবর্তনের জন্য আমাদের মনমানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ভিন্নমতের প্রতি সম্মান জানাতে হবে।

শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন অনিবার্য ছিল উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের উপর অবিচার হয়েছে। ৬০-৭০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, কয়েক হাজার লোক গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছে, জেলখানার মধ্যে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করেছে। গত ৫ আগস্ট আমি নিজেও কারাগারে বন্দি ছিলাম।

তিনি বলেন, জুলাইয়ের ত্যাগের প্রতি আমরা যদি সম্মান জানাতে চাই, তাহলে যার যার অবস্থান থেকে দেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করতে হবে। তাহলে এই ত্যাগের সঠিক মূল্যায়ন করা হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে। আমাদের মনমানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। কথাবার্তায়, আচার-আচরণে গণতান্ত্রিক হতে হবে। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন আনতে হবে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আপনাকে আস্থা রাখতে হবে বাংলাদেশের মালিক যারা জনগণ, তাদের উপর। যত পরিবর্তন, যত সংস্কার, যত আগামী দিনের রূপরেখা- এটাকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে আসতে হবে। জনগণের কাছে আপনাকে যেতে হবে, যেটা শেখ হাসিনা বন্ধ করে দিয়েছিল। এই পথটা উন্মুক্ত করে দিতে হবে। যারা যা করতে চাইবে, জনগণের কাছে যেতে হবে। বলতে হবে, ‘আমরা এই কাজগুলো করতে চাই নতুন বাংলাদেশের জন্য’। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আপনি আগামী দিনের পরিবর্তন আনবেন। আপনার নিজের ম্যান্ডেট না।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা কিন্তু চলে গেছে। সে কিন্তু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বৈরাচার রেখে গেছে আমাদের মধ্যে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফ্যাসিস্ট রেখে গেছে। আচার-আচরণে দেখবেন, ‘এটা হতে হবে, এটা দিতে হবে, এটা না দিলে আমরা নাই’। আমি তো মালিক হই নাই এদেশের; মালিক হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ। এই গণতান্ত্রিক মন-মানসিকতায় আপনাকে আসতে হবে।

“নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হচ্ছে কারেকশন প্রসেস, আপনি ভুল করলে যা আপনাকে সংশোধন করবে; প্রতিবাদ করবেন গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক ভাবে।”

নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার পর বাংলাদেশের মানুষের মনে যে প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা জেগেছে- এটা যদি আমরা ধারণ করতে না পারি, সবকিছু বৃথা যাবে। কোনো রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দল যদি এটা ধারণ করতে না পারে, তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ নেই। শেখ হাসিনার যে কারণে ফ্যাসিস্ট হয়েছে- গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে এককভাবে যা করতে চেয়েছে; আমাদেরকে গণতন্ত্র পরিপূর্ণভাবে পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে। আধা গণতন্ত্র না, থ্রি কোয়ার্টার গণতন্ত্র না। এবং সেই গণতন্ত্র প্রবর্তনের জন্য আমাদেরও মন-মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন আছে। এজন্য আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এখন প্রত্যয়- বিল্ড দ্য ন্যাশন। এই ত্যাগের প্রতি যদি সম্মান জানাতে চাই, তাহলে যার যার জায়গা থেকে দেশ গড়ার কাজ করতে হবে। রাজনীতির সাথে সাথে অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ন করতে হবে। দেশের প্রত্যেক মানুষের অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ করতে সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সিভাসু’র উপাচার্য মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান। অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. ওমর ফারুক ইউসুফ, সিভাসুর পরিচালক (বহিরাঙ্গন কার্যক্রম) প্রফেসর ড. এ. কে. এম. সাইফুদ্দিন, পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রাশেদুল আলম এবং পরিচালক (পিআরটিসি) প্রফেসর ড. এ. কে. এম. হুমায়ুন কবির। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। এতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত সিভাসুর ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাহাত বিন জাহাঙ্গীরও বক্তব্য রাখেন।