Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সমতার মর্যাদায় নারীকে সম্মানিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব : ড. আলী রীয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজনীতি, সংসদ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নারীদের সম্মানজনক অবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে-এ কথা জানিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, সমতার মর্যাদায় তাদেরকে সম্মানিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফা ১৩তম দিনের বৈঠকের শুরুতে তিনি এ সব কথা বলেন।

ড. আলী রীয়াজ বলেন, মনে রাখতে হবে গতবছরের ১৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মোড় ঘুরানোর গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা তাদের অপমানের জবাব দিতে প্রতিবাদ মুখর হয়েছিলেন। তাই মনে রাখতে হবে নারীকে যথাযথ সম্মান না দিয়ে দমিয়ে রাখলে রাষ্ট্র পিছিয়ে যাবে। রাজনীতি, সংসদ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নারীদের সম্মানজনক অবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

তিনি বলেন, তাদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কারণে আন্দোলন যেভাবে বেগবান হয়েছে, সেটা স্মরণ করে তাদের ভূমিকাকে যেন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারি, বাংলাদেশের রাষ্ট্র পুর্নগঠনের ক্ষেত্রে, সেই জন্য আমরা মনে করি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে, সাংবিধানিকভাবে সমতার মর্যাদায় নারীকে অধিষ্ঠিত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ দরকার।

আলী রীয়াজ বলেন, আজকে ১৪ জুলাই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জুলাই নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের এ অবদান আমাদের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তারই প্রেক্ষাপটে আমরা সংসদে নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আলোচনা করবো। আমাদের সবার মনে রাখা দরকার দিনটির, কারণ সবার প্রতিরোধের মুখে ফ্যাসিবাদ শাসনকে ক্রমাগত ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে। তাদের প্রচেষ্টার কারণে আজকে এখানে এসেছি।

২০২৪ সালের ১৪ জুলাইকে স্মরণ করে তিনি বলেন, আপনাদের সবার মনে আছে একবছর আগে আমরা কোথায় ছিলাম। ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে যে আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল জুলাই মাসে, ১৪ জুলাই বড় ধরনের মোড় ঘুরার দিন।

তিনি আরো বলেন, আন্দোলনকারীদের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা রাতের মধ্যে পথে নেমে এসেছিলেন, তাদের সে প্রতিবাদ, তাদের সে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, যে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ রচনা করেছিল, সেটি ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করেছিল, একটি পরিবর্তনের দিকে নিয়েছিল।

আজকের আলোচনার দুটো বিষয়ে ঐকমত্যে হওয়ার আশা প্রকাশ করে আলী রীয়াজ বলেন, বিশেষ করে রাজনীতিতে, রাষ্ট্রগঠনে, আইন প্রণয়নে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারীকে মর্যাদার সঙ্গে অংশগ্রহণের পথ আমরা তৈরি করতে পারবো। সে জায়গায় একমত হতে পারবো, এক জায়গায় আসতে পারবো।

আজকের বৈঠকে নারীদের সংসদীয় আসন এবং দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এই দুটি বিষয়ে আলোচনা হবে। আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমতে পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

কমিশনের আজকের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ আমন্ত্রিত ২৮টি রাজনৈতিক দল ও দুটি জোটের প্রতিনিধিরা। গত ৩ জুন থেকে এ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ১২টি বৈঠক করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

দ্বিতীয় দফা আলোচনায় এ পর্যন্ত সাতটি বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- সংবিধানের ৭০নং অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা সম্পর্কিত বিধান, বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ, উপজেলা পর্যায়ে আদালত সম্প্রসারণ, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

সমতার মর্যাদায় নারীকে সম্মানিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব : ড. আলী রীয়াজ

প্রকাশের সময় : ০১:২৮:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজনীতি, সংসদ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নারীদের সম্মানজনক অবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে-এ কথা জানিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, সমতার মর্যাদায় তাদেরকে সম্মানিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফা ১৩তম দিনের বৈঠকের শুরুতে তিনি এ সব কথা বলেন।

ড. আলী রীয়াজ বলেন, মনে রাখতে হবে গতবছরের ১৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মোড় ঘুরানোর গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা তাদের অপমানের জবাব দিতে প্রতিবাদ মুখর হয়েছিলেন। তাই মনে রাখতে হবে নারীকে যথাযথ সম্মান না দিয়ে দমিয়ে রাখলে রাষ্ট্র পিছিয়ে যাবে। রাজনীতি, সংসদ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নারীদের সম্মানজনক অবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

তিনি বলেন, তাদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কারণে আন্দোলন যেভাবে বেগবান হয়েছে, সেটা স্মরণ করে তাদের ভূমিকাকে যেন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারি, বাংলাদেশের রাষ্ট্র পুর্নগঠনের ক্ষেত্রে, সেই জন্য আমরা মনে করি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে, সাংবিধানিকভাবে সমতার মর্যাদায় নারীকে অধিষ্ঠিত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ দরকার।

আলী রীয়াজ বলেন, আজকে ১৪ জুলাই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জুলাই নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের এ অবদান আমাদের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তারই প্রেক্ষাপটে আমরা সংসদে নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আলোচনা করবো। আমাদের সবার মনে রাখা দরকার দিনটির, কারণ সবার প্রতিরোধের মুখে ফ্যাসিবাদ শাসনকে ক্রমাগত ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে। তাদের প্রচেষ্টার কারণে আজকে এখানে এসেছি।

২০২৪ সালের ১৪ জুলাইকে স্মরণ করে তিনি বলেন, আপনাদের সবার মনে আছে একবছর আগে আমরা কোথায় ছিলাম। ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে যে আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল জুলাই মাসে, ১৪ জুলাই বড় ধরনের মোড় ঘুরার দিন।

তিনি আরো বলেন, আন্দোলনকারীদের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা রাতের মধ্যে পথে নেমে এসেছিলেন, তাদের সে প্রতিবাদ, তাদের সে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, যে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ রচনা করেছিল, সেটি ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করেছিল, একটি পরিবর্তনের দিকে নিয়েছিল।

আজকের আলোচনার দুটো বিষয়ে ঐকমত্যে হওয়ার আশা প্রকাশ করে আলী রীয়াজ বলেন, বিশেষ করে রাজনীতিতে, রাষ্ট্রগঠনে, আইন প্রণয়নে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারীকে মর্যাদার সঙ্গে অংশগ্রহণের পথ আমরা তৈরি করতে পারবো। সে জায়গায় একমত হতে পারবো, এক জায়গায় আসতে পারবো।

আজকের বৈঠকে নারীদের সংসদীয় আসন এবং দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এই দুটি বিষয়ে আলোচনা হবে। আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমতে পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

কমিশনের আজকের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ আমন্ত্রিত ২৮টি রাজনৈতিক দল ও দুটি জোটের প্রতিনিধিরা। গত ৩ জুন থেকে এ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ১২টি বৈঠক করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

দ্বিতীয় দফা আলোচনায় এ পর্যন্ত সাতটি বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- সংবিধানের ৭০নং অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা সম্পর্কিত বিধান, বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ, উপজেলা পর্যায়ে আদালত সম্প্রসারণ, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা।