Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁদাবাজি নয়, ভাঙারি দোকান দখল দ্বন্দ্বেই মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: ডিএমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নতুন তথ্য দিয়েছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটি জানিয়েছে, চাঁদাবাজি নয়, একটি দোকানে কারা ব্যবসা করবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগ এবং হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে তাদের একসঙ্গে ব্যবসাও ছিল।

শনিবার (১২ জুলাই) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দিন।

তিনি বলেন, গত ৯ জুলাই বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট থেকে ৬টার মধ্যে কোতোয়ালি থানাধীন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের তিন নম্বর গেটে এবং সংলগ্ন এ হত্যাকাণ্ড হয়। অনেক লোক একত্র হয়ে একজনকে বিভিন্নভাবে আঘাত করে হত্যা করেছে। এ ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠাই।

ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, এ ঘটনার নেপথ্যে অনেক রকম কথাবার্তা আমরা মিডিয়া দেখতে পাচ্ছি। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, ওই এলাকায় ভাঙারি ব্যবসা খুব প্রচলিত। সেখানে একটি ভাঙারি দোকান ছিল, সেই দোকানে কারা ব্যবসা করবে এ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। আমরা জানতে পেরেছি, যিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এবং যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে তারা পরস্পর সম্পর্কিত। তারা একসঙ্গে ব্যবসাটা কিছুদিন করেছে। কিন্তু তাদের মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে একটা দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। তারা নিজেদের মতো ব্যবসা করার জন্য সোহাগের সঙ্গে বিবাদে লিপ্ত হয় এবং এ হত্যাকাণ্ড হয়।

তিনি আরও জানান, ৯ জুলাই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর ১০ জুলাই ভুক্তভোগী সোহাগের বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ৭। এ ঘটনার পর ভিডিও ফুটেজ দেখে আমরা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করি এবং এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব এবং তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা অপরাধ হলে কে অপরাধী সেটা বিবেচনা করে পুলিশ মামলা তদন্ত করে। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় আমাদের কাছে মুখ্য বিষয় নয়। অপরাধের সঙ্গে তাদের যে সম্পৃক্ততা এটা কি আমরা গুরুত্ব দিতে চাই। তারা কেন অপরাধটি করেছে এটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা দেখেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িয়ে তাদের পরিচয় দেখানো হচ্ছে। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে পরিচয় বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারিনি। যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদেরকেও আমরা জিজ্ঞেস করেছি তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কিনা। এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য আমাদের দেয়নি। আমরা তাদের আরো নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।

চাঁদাবাজির কোনো বিষয় ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টা আমাদের নলেজে নেই৷ আমরা এমন কোনো তথ্য পাইনি। আমরা যতটুকু জেনেছি এটা পারস্পরিক দ্বন্দ্বের বিষয়।

ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল ও ব্যবসায়িক এলাকায় দীর্ঘক্ষণ ধরে একটি নৃশংসতা হয়েছে। এক্ষেত্রে আগাম পুলিশিং ব্যবস্থা এবং পুলিশ টহলের ব্যত্যয় ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার দশ মিনিটের মধ্যে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

এ সময় ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

চাঁদাবাজি নয়, ভাঙারি দোকান দখল দ্বন্দ্বেই মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: ডিএমপি

প্রকাশের সময় : ০৭:০৯:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নতুন তথ্য দিয়েছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটি জানিয়েছে, চাঁদাবাজি নয়, একটি দোকানে কারা ব্যবসা করবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগ এবং হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে তাদের একসঙ্গে ব্যবসাও ছিল।

শনিবার (১২ জুলাই) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দিন।

তিনি বলেন, গত ৯ জুলাই বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট থেকে ৬টার মধ্যে কোতোয়ালি থানাধীন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের তিন নম্বর গেটে এবং সংলগ্ন এ হত্যাকাণ্ড হয়। অনেক লোক একত্র হয়ে একজনকে বিভিন্নভাবে আঘাত করে হত্যা করেছে। এ ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠাই।

ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, এ ঘটনার নেপথ্যে অনেক রকম কথাবার্তা আমরা মিডিয়া দেখতে পাচ্ছি। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, ওই এলাকায় ভাঙারি ব্যবসা খুব প্রচলিত। সেখানে একটি ভাঙারি দোকান ছিল, সেই দোকানে কারা ব্যবসা করবে এ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। আমরা জানতে পেরেছি, যিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এবং যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে তারা পরস্পর সম্পর্কিত। তারা একসঙ্গে ব্যবসাটা কিছুদিন করেছে। কিন্তু তাদের মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে একটা দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। তারা নিজেদের মতো ব্যবসা করার জন্য সোহাগের সঙ্গে বিবাদে লিপ্ত হয় এবং এ হত্যাকাণ্ড হয়।

তিনি আরও জানান, ৯ জুলাই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর ১০ জুলাই ভুক্তভোগী সোহাগের বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ৭। এ ঘটনার পর ভিডিও ফুটেজ দেখে আমরা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করি এবং এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব এবং তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা অপরাধ হলে কে অপরাধী সেটা বিবেচনা করে পুলিশ মামলা তদন্ত করে। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় আমাদের কাছে মুখ্য বিষয় নয়। অপরাধের সঙ্গে তাদের যে সম্পৃক্ততা এটা কি আমরা গুরুত্ব দিতে চাই। তারা কেন অপরাধটি করেছে এটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা দেখেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িয়ে তাদের পরিচয় দেখানো হচ্ছে। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে পরিচয় বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারিনি। যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদেরকেও আমরা জিজ্ঞেস করেছি তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কিনা। এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য আমাদের দেয়নি। আমরা তাদের আরো নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।

চাঁদাবাজির কোনো বিষয় ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টা আমাদের নলেজে নেই৷ আমরা এমন কোনো তথ্য পাইনি। আমরা যতটুকু জেনেছি এটা পারস্পরিক দ্বন্দ্বের বিষয়।

ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল ও ব্যবসায়িক এলাকায় দীর্ঘক্ষণ ধরে একটি নৃশংসতা হয়েছে। এক্ষেত্রে আগাম পুলিশিং ব্যবস্থা এবং পুলিশ টহলের ব্যত্যয় ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার দশ মিনিটের মধ্যে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

এ সময় ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।