রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি :
দেশের তরুণ ও প্রবীণরা ভোট দিতে উদগ্রীব—তাই দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে দলের কাজকর্ম যেন আওয়ামী লীগের মতো না হয় সেই আহ্বানও জানান তিনি।
শনিবার (১২ জুলাই) বেলা ১১টায় রাজশাহীর ভুবন-মোহন পার্কে রাজশাহী মহানগর বিএনপি আয়োজিত নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচিতে ফরম বিতরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগ সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ একটি পথভ্রষ্ট রাজনৈতিক দল। তারা যা করেছে, তার জন্য কখনও জাতির কাছে ক্ষমাও চায়নি। আমাদের আচরণ যেন তাদের মতো না হয় আমরা মানুষের জন্য কাজ করবো, আর মানুষ আমাদের প্রতিদান দেবে।
ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আগে বিচার ও সংস্কার, তারপর নির্বাচন’ বিএনপি এই কথা আর শুনতে চায় না। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমাদের মূল দাবি একটাই- জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। বিচার ও সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার যুক্তি আর চলবে না।
তিনি বলেন, সংস্কার ও বিচার চলমান প্রক্রিয়া। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া।
তিনি বলেন, আমরা জানি, এখানে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে, ন্যায়বিচারের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু সংস্কার আর বিচার দুটোই চলমান প্রক্রিয়া। এটা এ রকম নয় যে, আমরা সংস্কার করে দিলাম সব সংস্কার হয়ে গেল। আমরা বিচার করে দিলাম সব ন্যায়বিচার হয়ে গেল। সংস্কার প্রক্রিয়া, বিচার প্রক্রিয়া- এরকম নয়। বিগত স্বৈরাচার সরকার বলত, আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র; সেটা ছিল ভূয়া কথা। কাজেই আজকে কারও মুখে এটা শুনতে চাই না যে, আগে সংস্কার হবে, আগে বিচার হবে, পরে গণতন্ত্র হবে, পরে নির্বাচন হবে। এই কথা আজকে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে শুনতে চাই না।
আব্দুল মঈন খান বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে দেশের মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছে, মানুষ আপনাদের উপর আস্থা রেখেছে। যত দ্রুত সম্ভব একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের আকুতি গণতন্ত্রকে তাদের হাতে ফিরিয়ে দেন।
তিনি বলেন, ১৬ বছর তরুণ সমাজ, প্রবীণ সমাজ ভোট দিতে পারেনি। এমনকি ২০০৮ সালের নির্বাচনও একটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছিল। আজকে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ, প্রবীণ সমাজ ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।
শৃঙ্খলার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মঈন খান বলেন, আমরা সুশৃঙ্খলাভাবে একটি পরিবেশ পরিস্থিতি বাংলাদেশে সৃষ্টি করব যাতে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়। আমরা ১৭ বছর অপেক্ষা করেছি। আমরা আগামী কয়েক মাস ধৈর্য্য ধরব। আমরা নিয়মের বাইরে যাব না; আমরা শৃঙ্খলার বাইরে যাব না। আমরা জোর করে কারও উপর কিছু চাপিয়ে দেব না। কেন না সেটি গণতন্ত্র নয়, সেটি স্বৈরতন্ত্র।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত। সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব মামুন-অর-রশীদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নজরুল হুদা। এ সময় পুরোনো সদস্যদের নবায়ন এবং নতুন সদস্য সংগ্রহের ফরম বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ড. মঈন খান।