বরগুনা জেলা প্রতিনিধি :
বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বুড়িরচর এ.এমজি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে হিন্দুগ্রাম হয়ে ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে।
বিশেষ করে বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত ৩০০ ফুট কাঁচা রাস্তার অংশটুকু বর্ষা মৌসুমে কাঁদার কারণে চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অথচ এই সড়ক দিয়েই প্রতিদিন শতাধিক শিক্ষার্থী স্কুলে যাতায়াত করে এবং এটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যেতেও প্রধান পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, এই রাস্তাটি ব্যবহার করে পূর্ব বুড়িরচর, দক্ষিণ বুড়িরচর, কামড়াবাদ ও মধ্যে বুড়িরচরের বাসিন্দারা চলাচল করেন। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পোহাতে হচ্ছে বুড়িরচর এ.এমজি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। বর্ষার মৌসুমে হাঁটুসমান কাঁদা ও ভাঙাচোরা গর্তের কারণে অনেক শিক্ষার্থী, বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার্থীরা, বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না নিয়মিতভাবে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে, বাড়ছে ঝরে পড়ার আশঙ্কা।
ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দীর্ঘদিন কোনো কার্যকর উদ্যোগ না আসায় এলাকাবাসী এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে এবং ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের দ্রুত সংস্কার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক- শিক্ষার্থী, বিভিন্ন এলাকার পথচারীসহ স্থানীয়রা।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোসা. মারুফা বলেন, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে কষ্ট হয়। বৃষ্টির দিনে আমরা অনেকেই কাঁদা মাড়িয়ে স্কুলে পৌঁছাতে পারি না। কাপড় নষ্ট হয়ে যায়, ব্যাগ ভিজে যায়। অনেক সময় ক্লাসেই যেতে পারি না।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাবিনা বলেন, রাস্তাটা একটু ইট দিয়ে ঠিক করে দিলেই আমাদের ভোগান্তি কমতো। মেয়েদের তো বেশি সমস্যা হয়, অনেকে বর্ষায় স্কুলে আসেই না। এতে পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইদুর রহমান সাইদ বলেন, শিক্ষার্থীদের চলাচলের প্রধান রাস্তাটি এই অবস্থা থাকা দুঃখজনক। এ কারণে অনেক শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকে। ইউনিয়ন পর্যায়ে আমরা বহুবার বলেছি, কিন্তু কোনো ফল পাইনি।
ক্ষোভ ও দাবি স্থানীয় মো. সুলতান মৃধা বলেন, একাধিকবার জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছি, বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করেছি এই জায়গায় ইট বিছিয়ে দিতে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় শ্যামল চন্দ্র বল্লভ বলেন, এত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, অথচ উন্নয়ন নেই। এতে শুধু শিক্ষার্থী নয়, সাধারণ মানুষও দুর্ভোগে পড়ছে। আমরা চাই, দ্রুত এই কাঁচা রাস্তার উন্নয়ন হোক।
বুড়িরচর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আবুল বাসার বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য ঢাকায় তালিকা পাঠানো হয়েছে। পাস হয়ে আসলেই এই জনদুর্ভোগ দূর হবে।
বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইয়াসিন আরাফাত রানা বলেন, রাস্তাটির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জন দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আশা করি, অতি শিগ্রই রাস্তাটি উন্নয়নের ছোঁয়া পাবে। এবং জনদুর্ভোগ দূর হবে।