Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংস্কার কাজে সমর্থন অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মধ্যকার আলাপে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি উঠে এসেছে। চলমান সংস্কার কাজে সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলেও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র— এমন মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

তৌহিদ হোসেন বলেন, তারা খুব চমৎকার পরিবেশে কথা বলেছে। তখন আমি সামনে বসা ছিলাম। সেখানে সংস্কার কার্যক্রমে তাদের সমর্থনের কথা বলেছে এবং কথায় উঠে এসেছে যথা শিগগিরই সম্ভব নির্বাচন করা হোক।

তিনি বলেন, তিন বছরের জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে দুইপক্ষ একমত হলে চূড়ান্ত চুক্তি করা হবে। তবে পরবর্তী সরকার চাইলে এটির মেয়াদ বাড়াতে পারবে।

তিনি আরো বলেন, মিশন চালুর বিষয়ে চার দফা খসড়া আদান-প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে চুক্তির খসড়াটি বিবেচনা করছে জাতিসংঘ। এরপর কোনও পরিবর্তন না হলে দুপক্ষ এটি সই করবে। তিন বছরের জন্য অফিস খোলার বিষয়ে দুপক্ষ সম্মত। তিন বছর পরে নবায়ন না হলে অফিস থাকবে না।

খসড়া কত দিনের মধ্যে চূড়ান্ত হতে পারে— জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এ ধরনের কোনও টাইমফ্রেম নেই। এরই মধ্যে দুপক্ষের চারবার খসড়া চালাচালি হয়েছে। এরপর আমরা সেটিকে পরিবর্তন করেছি। তারা আবার কিছু পরিবর্তনের কথা বলেছে। কাছাকাছি যাওয়ার পরে অন্যান্য যে প্রক্রিয়া আছে, সেটি শুরু করেছি। তবে সেই পর্যায়ে তাদের দেওয়া কিছু পরিবর্তন আছে এবং অনেকটা আমরা সম্মত হয়েছি। বাকি পরিবর্তনগুলো যদি তারা গ্রহণ করে এবং বলে যে আবার পরিবর্তন কর, তবে আমরা দেখব সেটি পরিবর্তন করা যাবে কিনা।

এর আগে বুধবার কুড়িগ্রামের ঘোষপাড়ায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিফলকের সামনে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র সংক্ষিপ্ত পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে কোনো টালবাহানা এনসিপি মেনে নেবে না। বাস্তবসম্মত উপায়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা করতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেখুন, যদি বলে থাকে টালবাহানা মেনে নেওয়া হবে না, এখানে টালবাহানার কিছু নেই। আমরা চেষ্টা করছি, ভারত থেকে আমরা এ ব্যাপারে গত ১৫-২০ এমনকি ৩০ বছরেও পজিটিভ কিছু পাইনি। বহু আগে একবার পজিটিভ মতামত এসেছিল। তখন আমরা গ্রহণ করিনি। এ পর্যায়ে আছে এখন।

তিনি বলেন, কাজেই এটা নিয়ে টালবাহানা করার কোনো কারণ নেই। দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধান করতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি। কতটুকু সফল হই সেটা দেখা যাবে।

এ সময় মালয়েশিয়ায় গ্রেফতার ৩৬ বাংলাদেশির সম্পর্কে তথ্য জানতে চাইলে এখনো উত্তর পাওয়া যায়নি বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, আমি একটি কথা বলতে চাই। মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীদের বিভিন্ন কারণে যে সাফারিং, সেটা দূর করার জন্য চেষ্টা করেছি। সবই যে করতে পেরেছি, তা নয়। ওমানে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি কর্মীদের পাসপোর্ট দিতে, যেন রাস্তায় রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে না হয়। বাকি মিশনগুলোকেও এই ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে না পারার জন্য কোনো আক্ষেপ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আক্ষেপ তো একটা নোটেড টার্ম। কার কতটুকু আক্ষেপ আমি জানি না। আমি এটাকে দেখি এভাবে, আমরা ফেরত আনার জন্য চিঠি দিয়েছি, প্রয়োজনে সেটা ফলোআপ করা হবে। এইটুকুই।

গত এক বছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কতটুকু সংস্কার হয়েছে, এই সংস্কার নিয়ে আপনারা সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার নিয়ে কখনো হ্যাপি হওয়া উচিত নয়। কেননা হ্যাপি হলে আর কিছু করার নেই। আমরা চেষ্টা করছি এটাকে (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) যতটুকু জনবান্ধব করা যায়।

শিগগিরই নির্বাচন করার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন কিনা, প্রশ্ন রাখা হয় উপদেষ্টার কাছে। জবাবে তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করেননি। তিনি বলেন, দু’পক্ষের কথা হচ্ছিল আন্তরিক পরিবেশে। তার মধ্যে এ কথাগুলো উঠে এসেছে। নির্বাচন সম্পর্কে তারা জানতে চেয়েছে এবং সংস্কার কার্যক্রমের ব্যাপারে সমর্থনের কথা বলেছে। তখন তাদের জানানো হয়েছে, যথা শিগগিরই সম্ভব নির্বাচন করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আলোচনা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আজকে ওয়াশিংটনে বৈঠক হবে। বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখানে গেছেন। আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সেখানে আছেন। কাজেই আমরা আশা করব যে একটি সমাধানে আমরা দুপক্ষ পৌঁছাতে পারব এবং বাণিজ্যে তেমন প্রভাব পড়বে না।

মানবিক করিডর নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা— জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, না, এ ধরণের কোনো কথা হয়নি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

লেক থেকে সদ্য এসএসসি পাস করা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার, ৭ সহপাঠী আটক

সংস্কার কাজে সমর্থন অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ১০:০৪:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মধ্যকার আলাপে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি উঠে এসেছে। চলমান সংস্কার কাজে সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলেও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র— এমন মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

তৌহিদ হোসেন বলেন, তারা খুব চমৎকার পরিবেশে কথা বলেছে। তখন আমি সামনে বসা ছিলাম। সেখানে সংস্কার কার্যক্রমে তাদের সমর্থনের কথা বলেছে এবং কথায় উঠে এসেছে যথা শিগগিরই সম্ভব নির্বাচন করা হোক।

তিনি বলেন, তিন বছরের জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে দুইপক্ষ একমত হলে চূড়ান্ত চুক্তি করা হবে। তবে পরবর্তী সরকার চাইলে এটির মেয়াদ বাড়াতে পারবে।

তিনি আরো বলেন, মিশন চালুর বিষয়ে চার দফা খসড়া আদান-প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে চুক্তির খসড়াটি বিবেচনা করছে জাতিসংঘ। এরপর কোনও পরিবর্তন না হলে দুপক্ষ এটি সই করবে। তিন বছরের জন্য অফিস খোলার বিষয়ে দুপক্ষ সম্মত। তিন বছর পরে নবায়ন না হলে অফিস থাকবে না।

খসড়া কত দিনের মধ্যে চূড়ান্ত হতে পারে— জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এ ধরনের কোনও টাইমফ্রেম নেই। এরই মধ্যে দুপক্ষের চারবার খসড়া চালাচালি হয়েছে। এরপর আমরা সেটিকে পরিবর্তন করেছি। তারা আবার কিছু পরিবর্তনের কথা বলেছে। কাছাকাছি যাওয়ার পরে অন্যান্য যে প্রক্রিয়া আছে, সেটি শুরু করেছি। তবে সেই পর্যায়ে তাদের দেওয়া কিছু পরিবর্তন আছে এবং অনেকটা আমরা সম্মত হয়েছি। বাকি পরিবর্তনগুলো যদি তারা গ্রহণ করে এবং বলে যে আবার পরিবর্তন কর, তবে আমরা দেখব সেটি পরিবর্তন করা যাবে কিনা।

এর আগে বুধবার কুড়িগ্রামের ঘোষপাড়ায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিফলকের সামনে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র সংক্ষিপ্ত পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে কোনো টালবাহানা এনসিপি মেনে নেবে না। বাস্তবসম্মত উপায়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা করতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেখুন, যদি বলে থাকে টালবাহানা মেনে নেওয়া হবে না, এখানে টালবাহানার কিছু নেই। আমরা চেষ্টা করছি, ভারত থেকে আমরা এ ব্যাপারে গত ১৫-২০ এমনকি ৩০ বছরেও পজিটিভ কিছু পাইনি। বহু আগে একবার পজিটিভ মতামত এসেছিল। তখন আমরা গ্রহণ করিনি। এ পর্যায়ে আছে এখন।

তিনি বলেন, কাজেই এটা নিয়ে টালবাহানা করার কোনো কারণ নেই। দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধান করতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি। কতটুকু সফল হই সেটা দেখা যাবে।

এ সময় মালয়েশিয়ায় গ্রেফতার ৩৬ বাংলাদেশির সম্পর্কে তথ্য জানতে চাইলে এখনো উত্তর পাওয়া যায়নি বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, আমি একটি কথা বলতে চাই। মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীদের বিভিন্ন কারণে যে সাফারিং, সেটা দূর করার জন্য চেষ্টা করেছি। সবই যে করতে পেরেছি, তা নয়। ওমানে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি কর্মীদের পাসপোর্ট দিতে, যেন রাস্তায় রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে না হয়। বাকি মিশনগুলোকেও এই ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে না পারার জন্য কোনো আক্ষেপ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আক্ষেপ তো একটা নোটেড টার্ম। কার কতটুকু আক্ষেপ আমি জানি না। আমি এটাকে দেখি এভাবে, আমরা ফেরত আনার জন্য চিঠি দিয়েছি, প্রয়োজনে সেটা ফলোআপ করা হবে। এইটুকুই।

গত এক বছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কতটুকু সংস্কার হয়েছে, এই সংস্কার নিয়ে আপনারা সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার নিয়ে কখনো হ্যাপি হওয়া উচিত নয়। কেননা হ্যাপি হলে আর কিছু করার নেই। আমরা চেষ্টা করছি এটাকে (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) যতটুকু জনবান্ধব করা যায়।

শিগগিরই নির্বাচন করার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন কিনা, প্রশ্ন রাখা হয় উপদেষ্টার কাছে। জবাবে তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করেননি। তিনি বলেন, দু’পক্ষের কথা হচ্ছিল আন্তরিক পরিবেশে। তার মধ্যে এ কথাগুলো উঠে এসেছে। নির্বাচন সম্পর্কে তারা জানতে চেয়েছে এবং সংস্কার কার্যক্রমের ব্যাপারে সমর্থনের কথা বলেছে। তখন তাদের জানানো হয়েছে, যথা শিগগিরই সম্ভব নির্বাচন করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আলোচনা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আজকে ওয়াশিংটনে বৈঠক হবে। বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখানে গেছেন। আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সেখানে আছেন। কাজেই আমরা আশা করব যে একটি সমাধানে আমরা দুপক্ষ পৌঁছাতে পারব এবং বাণিজ্যে তেমন প্রভাব পড়বে না।

মানবিক করিডর নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা— জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, না, এ ধরণের কোনো কথা হয়নি।