মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের খৈয়ামুড়ি-নলগোলা এলাকায় নুরানীগঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত একটি সেতু রেলিং ছাড়াই উদ্বোধন করা হয়েছে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী। একই সঙ্গে ঘন পিলার ও নিম্ন উচ্চতার কারণে ব্যাহত হচ্ছে নৌ চলাচল।
স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট প্রস্থের ইস্পাতের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটি নদীর দুই পাড়ে থাকা মসজিদ, মাদ্রাসা, বাজার, স্কুল-কলেজ, কমিউনিটি ক্লিনিক ও কবরস্থানে যাতায়াতকারী বহু মানুষের একমাত্র ভরসা।
তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, সেতুটির দুই পাশে কোনো রেলিং না থাকায় প্রতিদিনই শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ, কৃষকসহ সাধারণ মানুষ প্রাণহানির ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষার্থী ইশান আলী বলেন, সেতুতে উঠলে ভয় লাগে। অন্য রাস্তা দিয়ে গেলে দুই কিলোমিটার ঘুরতে হয়। তাই ঝুঁকি নিয়েই এই পথ ধরতে হয়।
সাবেক ইউপি সদস্য আলী আহমেদ বলেন, রেলিং ছাড়া, পাতলা ও নিম্নমানের ইস্পাতে তৈরি দুর্বল সেতুটি আমরা চাইনি। বর্ষার স্রোতে যে কোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ময়নাল হোসেন জানান, একাধিকবার প্রকৌশল বিভাগে জানিয়েছি, কিন্তু কেউ পদক্ষেপ নেয়নি।
বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য যানবাহন চলতে না পারায় কৃষকদের উৎপাদিত ফসল ও খড়-ঘাস মাথায় করে সেতু পাড়ি দিতে হয়। বর্ষায় কাঁচা সংযোগ সড়কে কাদা জমে পিচ্ছিল হয়ে যাওয়ায় বিপদ আরও বেড়ে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুর উচ্চতা কম এবং ঘন ঘন পিলার বসানো হয়েছে, ফলে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ এ নদী দিয়েই এক সময় নিয়মিত নৌযান চলত।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, এই সেতুটি কেবল পায়ে হাঁটার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। অল্প বাজেট থাকায় রেলিং দেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন শিক্ষার্থী ও কৃষকদের কথা বিবেচনায় নিয়ে রেলিং বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। আশা করছি, শিগগির কাজ শুরু হবে।
তিনি আরও দাবি করেন, ইস্পাতের পাত ৩ মিলিমিটার দেওয়ার কথা থাকলেও আমরা ৫ মিলিমিটার দিয়েছি। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সুযোগ নেই। নৌ চলাচলেও তেমন বাধা সৃষ্টি হবে না।