Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিমানের টিকিটের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে কিছু দুষ্টু লোক সবসময় লেগে আছে : আসিফ নজরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিমানের টিকিটের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে কিছু দুষ্টু লোক সবসময় লেগে আছে বলে মন্তব্য করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, সরকার বিমানের টিকিটের দাম কমিয়েছিল। কিন্তু এরপর আবারও দাম বেড়ে গেছে।

বুধবার (২ জুলাই) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাপানের শ্রম বাজার: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে বিমানের টিকিট ও এর দাম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন আসিফ নজরুল।

প্রবাসী উপদেষ্টা বলেন, তিনি ওমরা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে হঠাৎ একজন ভিডিও করতে করতে বললেন, বিমানের টিকিটের এত দাম, আবার উনি (উপদেষ্টা) এসেছেন ওমরা করতে।

তিনি বলেন, বিমানের টিকিট তার মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারে পড়ে না। তবুও দেশে ফিরে তিনি বিষয়টা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান। পরদিনই প্রধান উপদেষ্টা মিটিং ডেকে বিমানের টিকিটের দাম কমানোর ব্যবস্থা করেন।

উপদেষ্টা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দেন, সর্বোচ্চ তিন দিন বুক রাখা যাবে টিকিট। এরমধ্যে না কিনলে বুকিং বাতিল হয়ে যাবে। বুকিং দিতেই পাসপোর্টের কপি লাগবে। এমন নির্দেশনার পর দাম কমে যায়। পরে আবারও অসাধু চক্র দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

কিছু মানুষ অযথা অপপ্রচার ছড়াচ্ছে জানিয়ে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে তিনি বলেন, এক বছরে ৩০ থেকে ৪০ হাজার লোক নেবে মালয়েশিয়া। তবে, বিদেশে পাঠানোর নামে লোক না ঠকানোর আহ্বান জানান তিনি।

বিদেশে কিছু প্রবাসীর আচরণ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপদেষ্টা। বলেন বাহরাইনে একজন প্রতিষ্ঠান মালিকের গলা কেটে ফেলেছে প্রবাসীরা। ঘোষণা দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সিলেট-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মারামারি করে দেশের বদনাম ছড়াচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে আগের সরকার চুক্তি করে রেখেছে যে, তোমরা রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা দিবা আমরা নির্ধারণ করবো। এটা দুই পক্ষের আনুষ্ঠানিক চুক্তি। যেটাকে আমরা সিন্ডিকেট বলি। এখন আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি তখন আমাদের সবাই বলছে সিন্ডিকেট করা যাবে না। আর সিন্ডিকেট না করতে হলে চুক্তি পরিবর্তন করতে হবে। সেটা তো আমরা করতে পারবো না। এখন তার সঙ্গে আমার সমঝোতা করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, যদি সে চুক্তি পরিবর্তন না করে তাহলে আমার সামনে দুইটা পথ খোলা আছে। এক হচ্ছে তার কথা অনুযায়ী ২৫, ৫০ বা ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে পাঠানো, আরেকটি হচ্ছে তাদেরকে বলা যে আমরা লোকই পাঠাবো না। এখন আমি যদি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লোক পাঠাই তাহলে সবাই বলবে আমি সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। আবার যদি কর্মী না পাঠাই তাহলে আমার ৪০ হাজার কর্মী যেতে পারবে না। এটা মালয়েশিয়া মনে রাখবে। এর ফলে পরবর্তী সময় আমার এক থেকে দুই লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

জাপানের শ্রমবাজার বিষয় উপদেষ্টা বলেন, জাপানে কর্মীর চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সেই চাহিদা পূরণের সক্ষমতা কি আমাদের রয়েছে। কারণ আমাদের অদক্ষ শ্রমিক আছে। ভাষা শিখছে কিন্তু সে দক্ষ হতে পারছে না। এখন আমাদের সমাধান একটাই, আমাদেরকে জাপানে কর্মীর চাহিদা অনুযায়ী কর্মীকে দক্ষ করতে হবে। আমরা জাপান সেল করেছি। সেখানে একটা ডেডিকেটেড ওয়েবসাইট করা হবে। জাপানের ক্ষেত্রে আমরা আমাদের দিক থেকে কোন প্রক্রিয়া রাখবো না। এর পাশাপাশি কর্মীদের দক্ষ করার জন্য আমরা প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপের কথা ভাবছি।

মন্ত্রণালয়ের নতুন পদক্ষেপ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে আমরা বিভিন্ন পার্টনারশিপে যাওয়ার চিন্তা করছি। আমাদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের লোন দিচ্ছে। স্টুডেন্টদের দিচ্ছে না। যারা স্টুডেন্ট ভিসায় যাবে, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো তাদের জন্য যেন ঋণের ব্যবস্থা করা হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

বিমানের টিকিটের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে কিছু দুষ্টু লোক সবসময় লেগে আছে : আসিফ নজরুল

প্রকাশের সময় : ০৩:১০:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিমানের টিকিটের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে কিছু দুষ্টু লোক সবসময় লেগে আছে বলে মন্তব্য করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, সরকার বিমানের টিকিটের দাম কমিয়েছিল। কিন্তু এরপর আবারও দাম বেড়ে গেছে।

বুধবার (২ জুলাই) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাপানের শ্রম বাজার: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে বিমানের টিকিট ও এর দাম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন আসিফ নজরুল।

প্রবাসী উপদেষ্টা বলেন, তিনি ওমরা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে হঠাৎ একজন ভিডিও করতে করতে বললেন, বিমানের টিকিটের এত দাম, আবার উনি (উপদেষ্টা) এসেছেন ওমরা করতে।

তিনি বলেন, বিমানের টিকিট তার মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারে পড়ে না। তবুও দেশে ফিরে তিনি বিষয়টা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান। পরদিনই প্রধান উপদেষ্টা মিটিং ডেকে বিমানের টিকিটের দাম কমানোর ব্যবস্থা করেন।

উপদেষ্টা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দেন, সর্বোচ্চ তিন দিন বুক রাখা যাবে টিকিট। এরমধ্যে না কিনলে বুকিং বাতিল হয়ে যাবে। বুকিং দিতেই পাসপোর্টের কপি লাগবে। এমন নির্দেশনার পর দাম কমে যায়। পরে আবারও অসাধু চক্র দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

কিছু মানুষ অযথা অপপ্রচার ছড়াচ্ছে জানিয়ে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে তিনি বলেন, এক বছরে ৩০ থেকে ৪০ হাজার লোক নেবে মালয়েশিয়া। তবে, বিদেশে পাঠানোর নামে লোক না ঠকানোর আহ্বান জানান তিনি।

বিদেশে কিছু প্রবাসীর আচরণ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপদেষ্টা। বলেন বাহরাইনে একজন প্রতিষ্ঠান মালিকের গলা কেটে ফেলেছে প্রবাসীরা। ঘোষণা দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সিলেট-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মারামারি করে দেশের বদনাম ছড়াচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে আগের সরকার চুক্তি করে রেখেছে যে, তোমরা রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা দিবা আমরা নির্ধারণ করবো। এটা দুই পক্ষের আনুষ্ঠানিক চুক্তি। যেটাকে আমরা সিন্ডিকেট বলি। এখন আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি তখন আমাদের সবাই বলছে সিন্ডিকেট করা যাবে না। আর সিন্ডিকেট না করতে হলে চুক্তি পরিবর্তন করতে হবে। সেটা তো আমরা করতে পারবো না। এখন তার সঙ্গে আমার সমঝোতা করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, যদি সে চুক্তি পরিবর্তন না করে তাহলে আমার সামনে দুইটা পথ খোলা আছে। এক হচ্ছে তার কথা অনুযায়ী ২৫, ৫০ বা ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে পাঠানো, আরেকটি হচ্ছে তাদেরকে বলা যে আমরা লোকই পাঠাবো না। এখন আমি যদি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লোক পাঠাই তাহলে সবাই বলবে আমি সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। আবার যদি কর্মী না পাঠাই তাহলে আমার ৪০ হাজার কর্মী যেতে পারবে না। এটা মালয়েশিয়া মনে রাখবে। এর ফলে পরবর্তী সময় আমার এক থেকে দুই লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

জাপানের শ্রমবাজার বিষয় উপদেষ্টা বলেন, জাপানে কর্মীর চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সেই চাহিদা পূরণের সক্ষমতা কি আমাদের রয়েছে। কারণ আমাদের অদক্ষ শ্রমিক আছে। ভাষা শিখছে কিন্তু সে দক্ষ হতে পারছে না। এখন আমাদের সমাধান একটাই, আমাদেরকে জাপানে কর্মীর চাহিদা অনুযায়ী কর্মীকে দক্ষ করতে হবে। আমরা জাপান সেল করেছি। সেখানে একটা ডেডিকেটেড ওয়েবসাইট করা হবে। জাপানের ক্ষেত্রে আমরা আমাদের দিক থেকে কোন প্রক্রিয়া রাখবো না। এর পাশাপাশি কর্মীদের দক্ষ করার জন্য আমরা প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপের কথা ভাবছি।

মন্ত্রণালয়ের নতুন পদক্ষেপ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে আমরা বিভিন্ন পার্টনারশিপে যাওয়ার চিন্তা করছি। আমাদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের লোন দিচ্ছে। স্টুডেন্টদের দিচ্ছে না। যারা স্টুডেন্ট ভিসায় যাবে, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো তাদের জন্য যেন ঋণের ব্যবস্থা করা হয়।