Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগামী একমাসের মধ্যে গুম বিষয়ক আইন করা হবে : আইন উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী একমাসের মধ্যে গুম বিষয়ক আইন করা হবে- এ কথা জানিয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এ আইনের অধীনেই গুম সম্পর্কিত একটি স্থায়ী কমিশন গঠিত হবে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে যারা গুমের স্বীকার হয়েছেন তাদেরকে মিসিং সার্টিফিকেট দেয়ার বিষয়টি আইনে যুক্ত করা যায় কিনা চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

সোমবার (১৬ জুন) সচিবালয়ে জাতিসংঘের বলপ্রয়োগে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে গুম সম্পর্কিত কার্যনির্বাহী দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, গুমবিষয়ক আইনের আওতায় একটি শক্ত গুম কমিশন হবে। সেখানে টেকনোলজিক্যাল সাপোর্টসহ বুদ্ধিবৃত্তিক সহায়তা করবে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক কমিশন। তবে, অবশ্যই আর্থিক সহায়তা নেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, এই সরকারের কমিটমেন্টই হচ্ছে গুমের বিচার, গুমের তদন্ত করা। গুমবিষয়ক আন্তর্জাতিক পুরো চুক্তিটাই বাংলাদেশ মেনে নিয়েছে। বাংলাদেশ আনকন্ডিশনালি এটার সদস্য রাষ্ট্র হয়েছে।

জাতিসংঘের গুম সংক্রান্ত কমিটি এ বিষয়ে প্রশংসা করেছেন বলেও জানান আইন উপদেষ্টা।

আসিফ নজরুল বলেন, গুম হওয়া পরিবারের জন্য নিখোঁজ সনদ দেবে সরকার। এর আওতায় গুম হওয়া পরিবার তাদের অভিযোগ জানানোসহ যেকোনো তথ্য জানাতে পারবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, গুম হওয়া পরিবারগুলোর সাথে আলোচনা করার তাগিদ দিয়েছেন জাতিসংঘের গুম সংক্রান্ত কমিটি। গুম কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোর কথাও জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, সরকার, রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ এবং ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি ট্রুথ কমিশন গঠন করবে সরকার। এই সরকারের মেয়াদেই সেটা করে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে।

আইন করলে পরবর্তী সরকার আইনটি বাতিল করবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি বা যে সরকারই আসুক তারা সবাই গুমের শিকার। তারা সবাই সোচ্চার ছিলেন।
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এর আগে কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ পর্যালোচনা করে সুপারিশ দিতে আইন উপদেষ্টার নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে সরকার। ঈদের ছুটি শেষে সোমবার অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে ফের আন্দোলনে নেমেছেন কর্মচারীরা।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইন উপদেষ্টা বলেন, সরকারি যে চাকরি আইন রয়েছে সেটার বিষয়ে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানসহ আমাদের একাধিক উপদেষ্টা বলেছেন, এখানে অবশ্যই পুনর্বিবেচনার অবকাশ রয়েছে। আমি বিদেশে ছিলাম আইনটি প্রণয়নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না। পরবর্তী সময়ে যখন আমি আইনটি দেখেছি, দেখার পর আমার কাছে মনে হয়েছে এটা অবশ্যই পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, শুধু একটা বিষয় আমি বলতে পারি- সরকার কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে আইনটি করেনি। অসৎ উদ্দেশ্য আইন করা না হলেও কোনো কোনো আইনের মধ্যে এমন বিধান থাকতে পারে, এই আইনের যারা সাবজেক্ট তাদের কাছে মনে হতে পারে তারা বিড়ম্বনা বা হয়রানির শিকার হতে পারেন। আমরা স্বীকার করি- এ রকম সম্ভাবনা এই আইনের মধ্যে থাকতে পারে। এটি মূলত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আইন, আমরা শুধু গেজেট নোটিফিকেশন করেছি।

আসিফ নজরুল বলেন, সোমবার (১৬ জুন) আমরা বিকেল ৪টার দিকে প্রথম মিটিংয়ে বসবো। সরকারি কর্মচারী ভাইয়েরা যে দাবিগুলো দিয়েছিলেন সেই কাগজগুলো আমার কাছে আছে। সেগুলো আমরা কীভাবে বিবেচনা করবো, কী বিবেচনা করবো- সেগুলো ঠিক করব। ঠিক করার পর ইনশা আল্লাহ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা একটা রিপোর্ট উপদেষ্টা পরিষদের মিটিংয়ে তুলবো। আমরা রিপোর্ট বা প্রস্তাব দেব, সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক না।

কমিটি রিপোর্ট দেওয়া পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন না করারও আহ্বান জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিমানের ফ্লাইটে ফের ত্রুটি, শারজাহ না গিয়ে ফিরে এলো ঢাকায়

আগামী একমাসের মধ্যে গুম বিষয়ক আইন করা হবে : আইন উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ১২:১৩:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী একমাসের মধ্যে গুম বিষয়ক আইন করা হবে- এ কথা জানিয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এ আইনের অধীনেই গুম সম্পর্কিত একটি স্থায়ী কমিশন গঠিত হবে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে যারা গুমের স্বীকার হয়েছেন তাদেরকে মিসিং সার্টিফিকেট দেয়ার বিষয়টি আইনে যুক্ত করা যায় কিনা চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

সোমবার (১৬ জুন) সচিবালয়ে জাতিসংঘের বলপ্রয়োগে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে গুম সম্পর্কিত কার্যনির্বাহী দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, গুমবিষয়ক আইনের আওতায় একটি শক্ত গুম কমিশন হবে। সেখানে টেকনোলজিক্যাল সাপোর্টসহ বুদ্ধিবৃত্তিক সহায়তা করবে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক কমিশন। তবে, অবশ্যই আর্থিক সহায়তা নেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, এই সরকারের কমিটমেন্টই হচ্ছে গুমের বিচার, গুমের তদন্ত করা। গুমবিষয়ক আন্তর্জাতিক পুরো চুক্তিটাই বাংলাদেশ মেনে নিয়েছে। বাংলাদেশ আনকন্ডিশনালি এটার সদস্য রাষ্ট্র হয়েছে।

জাতিসংঘের গুম সংক্রান্ত কমিটি এ বিষয়ে প্রশংসা করেছেন বলেও জানান আইন উপদেষ্টা।

আসিফ নজরুল বলেন, গুম হওয়া পরিবারের জন্য নিখোঁজ সনদ দেবে সরকার। এর আওতায় গুম হওয়া পরিবার তাদের অভিযোগ জানানোসহ যেকোনো তথ্য জানাতে পারবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, গুম হওয়া পরিবারগুলোর সাথে আলোচনা করার তাগিদ দিয়েছেন জাতিসংঘের গুম সংক্রান্ত কমিটি। গুম কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোর কথাও জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, সরকার, রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ এবং ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি ট্রুথ কমিশন গঠন করবে সরকার। এই সরকারের মেয়াদেই সেটা করে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে।

আইন করলে পরবর্তী সরকার আইনটি বাতিল করবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি বা যে সরকারই আসুক তারা সবাই গুমের শিকার। তারা সবাই সোচ্চার ছিলেন।
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এর আগে কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ পর্যালোচনা করে সুপারিশ দিতে আইন উপদেষ্টার নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে সরকার। ঈদের ছুটি শেষে সোমবার অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে ফের আন্দোলনে নেমেছেন কর্মচারীরা।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইন উপদেষ্টা বলেন, সরকারি যে চাকরি আইন রয়েছে সেটার বিষয়ে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানসহ আমাদের একাধিক উপদেষ্টা বলেছেন, এখানে অবশ্যই পুনর্বিবেচনার অবকাশ রয়েছে। আমি বিদেশে ছিলাম আইনটি প্রণয়নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না। পরবর্তী সময়ে যখন আমি আইনটি দেখেছি, দেখার পর আমার কাছে মনে হয়েছে এটা অবশ্যই পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, শুধু একটা বিষয় আমি বলতে পারি- সরকার কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে আইনটি করেনি। অসৎ উদ্দেশ্য আইন করা না হলেও কোনো কোনো আইনের মধ্যে এমন বিধান থাকতে পারে, এই আইনের যারা সাবজেক্ট তাদের কাছে মনে হতে পারে তারা বিড়ম্বনা বা হয়রানির শিকার হতে পারেন। আমরা স্বীকার করি- এ রকম সম্ভাবনা এই আইনের মধ্যে থাকতে পারে। এটি মূলত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আইন, আমরা শুধু গেজেট নোটিফিকেশন করেছি।

আসিফ নজরুল বলেন, সোমবার (১৬ জুন) আমরা বিকেল ৪টার দিকে প্রথম মিটিংয়ে বসবো। সরকারি কর্মচারী ভাইয়েরা যে দাবিগুলো দিয়েছিলেন সেই কাগজগুলো আমার কাছে আছে। সেগুলো আমরা কীভাবে বিবেচনা করবো, কী বিবেচনা করবো- সেগুলো ঠিক করব। ঠিক করার পর ইনশা আল্লাহ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা একটা রিপোর্ট উপদেষ্টা পরিষদের মিটিংয়ে তুলবো। আমরা রিপোর্ট বা প্রস্তাব দেব, সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক না।

কমিটি রিপোর্ট দেওয়া পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন না করারও আহ্বান জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা।