স্পোর্টস ডেস্ক :
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত আগামী চার মাসের জন্য (বিসিবি নির্বাচনের আগ পর্যন্ত) বিসিবির নতুন সভাপতি হলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
বুলবুল যে বিসিবি সভাপতি হতে যাচ্ছেন, সেটি আগেই জানা গিয়েছিল। বাকি ছিল আনুষ্ঠানিকতা। শুক্রবার (৩০ মে) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) থেকে বিসিবির পরিচালক হিসেবে অনুমোদন পান তিনি। বিকেলে বিসিবির পরিচালকদের ভোটে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বুলবুল। এ ছাড়া সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছেন আরেক পরিচালক ফাহিম সিনহা।
সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর বিসিবির কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেছেন বুলবুল। সেখানে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, এই অল্প সময়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে কী উন্নয়ন করে যেতে চান? জবাবে তিনি বলেন, টেস্ট পাঁচ দিনের খেলা, ওয়ানডে হয় সাত ঘণ্টা। আমি একটা টি-টোয়েন্টি ইনিংস খেলতে চাই।
তবে নির্দিষ্ট করে তার মেয়াদ জানতে চাইলে এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। নির্ধারিত সময় নিয়ে বুলবুল বলেন, আমি বিসিবির নির্বাচিত সভাপতি। কোনো নির্দিষ্ট টাইমফ্রেম নিয়ে এখানে আসিনি।
সাবেক ক্রিকেটার ফারুক আহমেদ বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ৯ মাসও কাটেনি, এর মধ্যেই হারিয়েছেন পরিচালকদের আস্থা। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ২৯ মে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ফারুকের বিসিবি পরিচালক পদে থাকা নিয়োগ বাতিল করে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, পরিচালক পদ হারানোর সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হয় তার সভাপতির পদটিও, কারণ বিসিবি সভাপতির পদে থাকতে হলে পরিচালক হওয়া আবশ্যক।
ফারুকের অপসারণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় নতুন বিকল্প হিসেবে যোগাযোগ করে আরেক সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলে (আইসিসি) কর্মরত থাকলেও মন্ত্রণালয়ের ইঙ্গিত পাওয়ার পর সেই পদ ছেড়ে দেন বুলবুল।
২৯ মে, যেদিন ফারুকের পরিচালক পদ বাতিল হয়, সেদিনই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বুলবুলকে কাউন্সিলর হিসেবে মনোনীত করে। এরপর ৩০ মে, এনএসসির নিয়মানুযায়ী বুলবুলকে বিসিবির পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং পরবর্তী ধাপে তিনি বোর্ডের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন।
উল্লেখ্য, এনএসসির ক্ষমতাবলে বিসিবিতে ৫ জন কাউন্সিলর এবং ২ জন পরিচালক মনোনীত হতে পারেন। এর আগেও এই কোটায় বোর্ড পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি ও জালাল ইউনুস। তবে গত আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর জালাল ইউনুস পদত্যাগ করেন এবং ববিকে অপসারণ করা হয়।
১৯৮৮ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ১৪ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। যার ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক ১৯৮৮ সালে। ৩৯টি ওয়ানডে খেলে তিন হাফ সেঞ্চুরিতে তার রান ৭৯৪। টেস্টও খেলেছেন ১৩টি।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান বুলবুল। ২০০২ সালে শেষ টেস্ট খেলার আগে ২৬ ইনিংসে করেছেন ৫৩০ রান। একটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি আছে দুটি হাফ সেঞ্চুরিও। ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি ওয়ানডে দলকেও নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে ১৬ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জিতেছে দুটি ম্যাচ।