Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন সম্ভব : তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আগামী ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন দেওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা মনে করি প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে, যদি তাদের ইনটেশন সঠিক থাকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেবেন।

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, এই সরকার ১০ মাসেও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ দেয়নি। ফলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। দেশে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ হচ্ছে না। ব্যাবসায়িক সংগঠনগুলো বলছে, শত শত কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধের উপক্রম এমন অনেক। তারা সরকারে কাছে তা তুলের ধরার সুযোগ পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে শ’ শ’ শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আরো অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিভিন্ন সেক্টরে এ ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। জনগণ তাদের সমস্যার কথা সরকারের কাছে তুলে ধরার কোনো সুযোগ পাচ্ছে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের সাথে স্বাভাবিকভাবেই জনগণের কোনো যোগাযোগ নেই। জনগণের দুঃখ-দুর্দশা সমস্যার ব্যাপারে অনেক উপদেষ্টা ওয়াকিবহাল নয়। তারা অফিসে বসে ফাইল-পত্র দেখে, সমস্যা চিহ্নিত করে হয়তো সমাধান করার চেষ্টা করছে। জনগণের সাথে সরাসরি যোগাযোগ ছাড়া, প্রশাসন নির্ভর, ফাইল ওয়ার্ক দিয়ে সকল সমস্যার সমাধান যদি করা যেতই তাহলে নিশ্চয়ই রাজনৈতিক দল ও রাজনীতির দরকার হতো না।

তিনি আরো বলেন, দেশের জনগণ সরাসরি নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে প্রস্তুত। কিন্তু সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে। সকল রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে লিখিত সংস্কার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সংস্কারের ব্যাপারে কোনো রাজনৈতিক দলেরই তেমন কোনো আপত্তি নেই। তবে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে সরকারের অযথাই কালক্ষেপণে আপত্তি রয়েছে। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, বিভিন্ন সংগঠনও এ ব্যাপারে আপত্তির কথা জানিয়েছে। আমরা মনে করি, প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে তাদের ইনটেনশন যদি ভালো থাকে, গণতন্ত্রের পক্ষে থাকে, আমরা দাবি করেছি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে। তবে বিভিন্ন বিষয়ে বিবেচনা করে আমি এটাও মনে করি ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন করা সম্ভব। সরকারের কাছে আবারো আহ্বান জানাই, জনগণের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করুন, ডিসেম্বরের মধ্যেই সুনির্দিষ্ট করে নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করুন। এখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জয় বা পরাজয়ের কোনো কিছু নেয়। বরং স্বাধীনতা প্রিয় জনগণকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়ে গণতন্ত্রকে বিজয়ী করুন।

তারেক রহমান বলেন, শহীদ জিয়ার রাষ্ট্রচিন্তা থেকে প্রত্যেকটি রাজনীতিবিদের জন্য একটি বার্তা রয়েছে-রাষ্ট্র পরিচালনায় সফল হতে হলে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে হবে। দেশ ও জনগণের স্বার্থকে আগে বিবেচনা করতে হবে। স্বাধীনতার ঘোষকের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চাইলে শহীদ জিয়ার প্রতিটি সৈনিক, খালেদা জিয়ার প্রত্যেকটি কর্মীকে আমি আহ্বান জানাই-আপনারা জনগণের সাথে থাকুন, জনগণকে অবশ্যই সাথে রাখুন।

সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তি নেই। কিন্তু সময়ক্ষেপণ নিয়ে রাজনৈতিক দলসহ সবার আপত্তি আছে। যদি সংস্কার শেষে সরকার ইতিবাচক হয়, তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া যেতে পারে। বিএনপি সেই দাবি জানিয়েছে। তবে সংস্কার বিষয়ে যদি সবাই একমত হয়, তাহলে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।

তিনি বলেন, এখানে সরকারের জেতা বা হারার কোনো বিষয় নয়। এটা জনগণের অধিকার। তাই আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ও দিনক্ষণ ঘোষণা করুন।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দেশে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ হচ্ছে না। ব্যাবসায়িক সংগঠনগুলো বলছে, শত শত কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধের উপক্রম এমন অনেক। তারা সরকারের কাছে তা তুলের ধরার সুযোগ পাচ্ছে না।

অন্তর্বর্তী সরকারের জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ নেই অভিযোগ করে তারেক রহমান বলেন, জনগণের সঙ্গে সারাসরি যোগাযোগ ছাড়া প্রশাসন ও ফাইল দিয়ে সব সমস্যার সমাধান যদি করা যেত, তবে রাজনীতির প্রয়োজন হতো না।

ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল মাহমুদ টুকু, মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন সম্ভব : তারেক রহমান

প্রকাশের সময় : ১০:৫৬:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আগামী ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন দেওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা মনে করি প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে, যদি তাদের ইনটেশন সঠিক থাকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেবেন।

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, এই সরকার ১০ মাসেও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ দেয়নি। ফলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। দেশে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ হচ্ছে না। ব্যাবসায়িক সংগঠনগুলো বলছে, শত শত কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধের উপক্রম এমন অনেক। তারা সরকারে কাছে তা তুলের ধরার সুযোগ পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে শ’ শ’ শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আরো অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিভিন্ন সেক্টরে এ ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। জনগণ তাদের সমস্যার কথা সরকারের কাছে তুলে ধরার কোনো সুযোগ পাচ্ছে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের সাথে স্বাভাবিকভাবেই জনগণের কোনো যোগাযোগ নেই। জনগণের দুঃখ-দুর্দশা সমস্যার ব্যাপারে অনেক উপদেষ্টা ওয়াকিবহাল নয়। তারা অফিসে বসে ফাইল-পত্র দেখে, সমস্যা চিহ্নিত করে হয়তো সমাধান করার চেষ্টা করছে। জনগণের সাথে সরাসরি যোগাযোগ ছাড়া, প্রশাসন নির্ভর, ফাইল ওয়ার্ক দিয়ে সকল সমস্যার সমাধান যদি করা যেতই তাহলে নিশ্চয়ই রাজনৈতিক দল ও রাজনীতির দরকার হতো না।

তিনি আরো বলেন, দেশের জনগণ সরাসরি নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে প্রস্তুত। কিন্তু সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে। সকল রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে লিখিত সংস্কার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সংস্কারের ব্যাপারে কোনো রাজনৈতিক দলেরই তেমন কোনো আপত্তি নেই। তবে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে সরকারের অযথাই কালক্ষেপণে আপত্তি রয়েছে। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, বিভিন্ন সংগঠনও এ ব্যাপারে আপত্তির কথা জানিয়েছে। আমরা মনে করি, প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে তাদের ইনটেনশন যদি ভালো থাকে, গণতন্ত্রের পক্ষে থাকে, আমরা দাবি করেছি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে। তবে বিভিন্ন বিষয়ে বিবেচনা করে আমি এটাও মনে করি ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন করা সম্ভব। সরকারের কাছে আবারো আহ্বান জানাই, জনগণের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করুন, ডিসেম্বরের মধ্যেই সুনির্দিষ্ট করে নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করুন। এখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জয় বা পরাজয়ের কোনো কিছু নেয়। বরং স্বাধীনতা প্রিয় জনগণকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়ে গণতন্ত্রকে বিজয়ী করুন।

তারেক রহমান বলেন, শহীদ জিয়ার রাষ্ট্রচিন্তা থেকে প্রত্যেকটি রাজনীতিবিদের জন্য একটি বার্তা রয়েছে-রাষ্ট্র পরিচালনায় সফল হতে হলে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে হবে। দেশ ও জনগণের স্বার্থকে আগে বিবেচনা করতে হবে। স্বাধীনতার ঘোষকের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চাইলে শহীদ জিয়ার প্রতিটি সৈনিক, খালেদা জিয়ার প্রত্যেকটি কর্মীকে আমি আহ্বান জানাই-আপনারা জনগণের সাথে থাকুন, জনগণকে অবশ্যই সাথে রাখুন।

সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তি নেই। কিন্তু সময়ক্ষেপণ নিয়ে রাজনৈতিক দলসহ সবার আপত্তি আছে। যদি সংস্কার শেষে সরকার ইতিবাচক হয়, তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া যেতে পারে। বিএনপি সেই দাবি জানিয়েছে। তবে সংস্কার বিষয়ে যদি সবাই একমত হয়, তাহলে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।

তিনি বলেন, এখানে সরকারের জেতা বা হারার কোনো বিষয় নয়। এটা জনগণের অধিকার। তাই আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ও দিনক্ষণ ঘোষণা করুন।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দেশে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ হচ্ছে না। ব্যাবসায়িক সংগঠনগুলো বলছে, শত শত কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধের উপক্রম এমন অনেক। তারা সরকারের কাছে তা তুলের ধরার সুযোগ পাচ্ছে না।

অন্তর্বর্তী সরকারের জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ নেই অভিযোগ করে তারেক রহমান বলেন, জনগণের সঙ্গে সারাসরি যোগাযোগ ছাড়া প্রশাসন ও ফাইল দিয়ে সব সমস্যার সমাধান যদি করা যেত, তবে রাজনীতির প্রয়োজন হতো না।

ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল মাহমুদ টুকু, মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।