Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ভারতের সঙ্গে বিন্দুমাত্র আপস নয় : সারজিস আলম

লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি : 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে ভারতের সঙ্গে বিন্দুমাত্র কোনো আপস নয়। সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইনের মাধ্যমে এজেন্ট ঢুকিয়ে দিয়ে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে ভারত। তাই দেশের সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে লিফলেট বিতরণ শেষে পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি ।

সারজিস আলম বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে এখন পর্যন্ত ভারতের যে আচরণ তা সন্তোষজনক নয়। এই আচরণ দিয়ে যদি ভারত মনে করে বাংলাদেশের কাছে প্রতিবেশীর মতো সম্পর্ক তারা পাবে সেটা তারা কখনো পাবে না।

তিনি বলেন, ২৪ এর অভ্যুথানে রক্তাক্ত করা হয়েছে যার নির্দেশে সেই খুনি হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। যতদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রিত থাকবে ততদিন বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না। সম্পর্ক স্বাভাবিক যদি করতে চায় তাহলে প্রতিবেশীর মতো অতটুকু শ্রদ্ধা ও সম্মানের সম্পর্ক হতে হবে, সমতার সম্পর্ক হতে হবে। আগের মতো ওইরকম দাসত্বের সম্পর্ক আর বাংলাদেশের মানুষ মানবে না।

এনসিপির এই নেতা বলেন, আমাদের বিজিবি অকুতোভয় সীমান্তরক্ষী। তাদেরকে আওয়ামীলীগ জিম্মি করে রেখেছিলো। তাদের যতটুকু শক্তিমত্তা সেইটুকু প্রকাশ করতে দেয়নি। তাদেরকে বিএসএফের কাছে ছোটো করে রেখেছিলো। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের বিজিবির সেই রকম সক্ষমতা আছে পৃথিবীর যে কোনো সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সাথে টেক্কা দেওয়ার।

সক্ষমতা মানে শুধুমাত্র অস্ত্রের সক্ষমতা নয়, কলিজার সক্ষমতা থাকতে হবে। কলিজার সক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষের মাঝে ছিলো বলে ৭১ এ তাদের অস্ত্র না থাকার পরেও স্বাধীনতা অর্জন করে এনেছিলো। আমরা সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও আপনাদের বলছি, আমাদেরকে আমাদের জায়গা থেকে সচেতন থাকতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করে তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র আপস নয়। যেকোনো ধরনের পুশিং, এজেন্ট পাঠানো এগুলো আমাদের এগুলো আমাদের দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত মনে করি। এগুলোর বিরুদ্ধে সরকার,প্রশাসন ও জনগনকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি তাহলে এটার কোনো সুযোগ থাকবে না বলে আমরা বিশ্বাস করি।

সারজিস আলম বলেন, পুরো বাংলাদেশ না কি বিদ্যুতে স্বয়ং সম্পূর্ণ। আগামীতে না কি পরিকল্পনা হচ্ছিলো বাহিরে বিদ্যুৎ পাঠাবে। কিন্তু প্রকল্পের নামে বাংলাদেশ থেকে টাকা লুটপাট করা হয়েছে আর ভারতের আদানির পকেট ভারী করা হয়েছে।

দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি কেউ সেবা দেয়ার আগে ঘুষের টাকার জন্য হাত বের করে দেয়। সেই হাতে আপনারা থুথু দিবেন। কোন থানায় ঘুষখোর পুলিশ থাকবে না। ভাল পুলিশকে সম্মান করবেন। কোন ধরনের দুর্নীতি অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। পাটগ্রামে পাথর উত্তোলন করে কেউ কেউ টাকা কামাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো কোন একদিন হঠাৎ পাটগ্রাম ডুবে যাবে।

সারজিস আলম বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাজারো মানুষের খুনি শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। যতদিন খুনি হাসিনা ভারতে আশ্রয়ে থাকবে, ততদিন ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক কখনোই স্বাভাবিক হবে না।

তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও বুড়িমারী থেকে ঢাকা সরাসরি ট্রেন চালু করতে হবে। পাটগ্রামে বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন ও বুড়িমারী স্থলবন্দরে চাঁদাবাজি হচ্ছে। এসব বন্ধ করে মানুষকে মুক্তি দিতে হবে।

বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের স্বপ্নকে বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে হাজারের বেশি মানুষ জীবন দিয়েছে। যারা জীবন দিয়েছে, তাদের অর্ধেকের বেশি ১৮ বছরের নিচে।

পথসভায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ন মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা বিনা, কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) রাসেল আহমেদ, এনসিপি লালমনিরহাট জেলা কমিটির সমন্বয়ক রকিবুল হাসান প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ভারতের সঙ্গে বিন্দুমাত্র আপস নয় : সারজিস আলম

প্রকাশের সময় : ০৪:১০:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি : 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে ভারতের সঙ্গে বিন্দুমাত্র কোনো আপস নয়। সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইনের মাধ্যমে এজেন্ট ঢুকিয়ে দিয়ে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে ভারত। তাই দেশের সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে লিফলেট বিতরণ শেষে পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি ।

সারজিস আলম বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে এখন পর্যন্ত ভারতের যে আচরণ তা সন্তোষজনক নয়। এই আচরণ দিয়ে যদি ভারত মনে করে বাংলাদেশের কাছে প্রতিবেশীর মতো সম্পর্ক তারা পাবে সেটা তারা কখনো পাবে না।

তিনি বলেন, ২৪ এর অভ্যুথানে রক্তাক্ত করা হয়েছে যার নির্দেশে সেই খুনি হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। যতদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রিত থাকবে ততদিন বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না। সম্পর্ক স্বাভাবিক যদি করতে চায় তাহলে প্রতিবেশীর মতো অতটুকু শ্রদ্ধা ও সম্মানের সম্পর্ক হতে হবে, সমতার সম্পর্ক হতে হবে। আগের মতো ওইরকম দাসত্বের সম্পর্ক আর বাংলাদেশের মানুষ মানবে না।

এনসিপির এই নেতা বলেন, আমাদের বিজিবি অকুতোভয় সীমান্তরক্ষী। তাদেরকে আওয়ামীলীগ জিম্মি করে রেখেছিলো। তাদের যতটুকু শক্তিমত্তা সেইটুকু প্রকাশ করতে দেয়নি। তাদেরকে বিএসএফের কাছে ছোটো করে রেখেছিলো। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের বিজিবির সেই রকম সক্ষমতা আছে পৃথিবীর যে কোনো সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সাথে টেক্কা দেওয়ার।

সক্ষমতা মানে শুধুমাত্র অস্ত্রের সক্ষমতা নয়, কলিজার সক্ষমতা থাকতে হবে। কলিজার সক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষের মাঝে ছিলো বলে ৭১ এ তাদের অস্ত্র না থাকার পরেও স্বাধীনতা অর্জন করে এনেছিলো। আমরা সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও আপনাদের বলছি, আমাদেরকে আমাদের জায়গা থেকে সচেতন থাকতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করে তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র আপস নয়। যেকোনো ধরনের পুশিং, এজেন্ট পাঠানো এগুলো আমাদের এগুলো আমাদের দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত মনে করি। এগুলোর বিরুদ্ধে সরকার,প্রশাসন ও জনগনকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি তাহলে এটার কোনো সুযোগ থাকবে না বলে আমরা বিশ্বাস করি।

সারজিস আলম বলেন, পুরো বাংলাদেশ না কি বিদ্যুতে স্বয়ং সম্পূর্ণ। আগামীতে না কি পরিকল্পনা হচ্ছিলো বাহিরে বিদ্যুৎ পাঠাবে। কিন্তু প্রকল্পের নামে বাংলাদেশ থেকে টাকা লুটপাট করা হয়েছে আর ভারতের আদানির পকেট ভারী করা হয়েছে।

দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি কেউ সেবা দেয়ার আগে ঘুষের টাকার জন্য হাত বের করে দেয়। সেই হাতে আপনারা থুথু দিবেন। কোন থানায় ঘুষখোর পুলিশ থাকবে না। ভাল পুলিশকে সম্মান করবেন। কোন ধরনের দুর্নীতি অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। পাটগ্রামে পাথর উত্তোলন করে কেউ কেউ টাকা কামাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো কোন একদিন হঠাৎ পাটগ্রাম ডুবে যাবে।

সারজিস আলম বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাজারো মানুষের খুনি শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। যতদিন খুনি হাসিনা ভারতে আশ্রয়ে থাকবে, ততদিন ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক কখনোই স্বাভাবিক হবে না।

তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও বুড়িমারী থেকে ঢাকা সরাসরি ট্রেন চালু করতে হবে। পাটগ্রামে বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন ও বুড়িমারী স্থলবন্দরে চাঁদাবাজি হচ্ছে। এসব বন্ধ করে মানুষকে মুক্তি দিতে হবে।

বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের স্বপ্নকে বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে হাজারের বেশি মানুষ জীবন দিয়েছে। যারা জীবন দিয়েছে, তাদের অর্ধেকের বেশি ১৮ বছরের নিচে।

পথসভায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ন মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা বিনা, কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) রাসেল আহমেদ, এনসিপি লালমনিরহাট জেলা কমিটির সমন্বয়ক রকিবুল হাসান প্রমুখ।