Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কি না, সেটি বিএনপির বিষয় নয় : মঈন খান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। তবে, সরকার ও নির্বাচন কমিশন চাইলে দলটিকে নিষিদ্ধ করতে পারে। বিএনপির হিসেবে আমরা এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক নই। এ সিদ্ধান্তের মালিক জনগণ। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে- কে নির্বাচন করতে পারবে, কে পারবে না।

শুক্রবার (৯ মে) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে এনসিপির অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।

মঈন খান বলেন, এটা নিয়ে আমাদের দলের মহাসচিব বলেছেন, এটা জনগণের সিদ্ধান্তের বিষয়। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কারা নির্বাচন করবে আর কারা করবে না।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, আমি যদি বলি এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগকে কেন জিজ্ঞেস করছেন না? তারা কি আসলেই নির্বাচন করতে চায়, তারা কি আসলেই গণতন্ত্র চায়? সেটাতো আওয়ামী লীগকে বলতে হবে। আজকে ৯ মাস হয়ে গেছে একজন আওয়ামী লীগারকে আজকে পর্যন্ত দেখাতে পারবেন কি তারা বলেছেন দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট কায়দায় যে মানুষের ওপর জুলুম করেছে, এ দেশকে তছনছ করে দিয়েছে, লুটপাট করে নিয়েছে, তারা ভুল করেছে, তারা ক্ষমা স্বীকার করছে বাংলাদেশের মানুষের কাছে, তারা আজকে জনগণের মতামতকে নিয়ে নির্বাচন করতে চায়। আওয়ামী লীগের একটি লোকও কি তা বলেছে? বলেনি। সুতরাং প্রশ্নটি আমাকে জিজ্ঞেস করার কোনো প্রয়োজন নাই, এর উত্তর বাংলাদেশের জনগণ দিবে।

এর আগে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র দ্য কার্টার সেন্টার নামে একটি সংগঠনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক হয়।

বৈঠকে আলোচনা বিষয়বস্তু সম্পর্কে মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একইসঙ্গে তারা হয়ত বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতেও আসতে পারে।

মঈন খান বলেন, এরশাদের পতনের পর এখনকার অন্তর্বর্তী সরকারের মতো একটি সরকার গঠন করা হয়েছিল। সেই সময়কার সরকার তিন মাসের মধ্যে দেশবাসীকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়েছিল। আজকে সেই নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো সমালোচনা করে না। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে গেলে তার জন্য অনির্দিষ্ট সময় পিছিয়ে নিতে হবে তার কোনো যুক্তিযুক্ততা নেই।

তিনি বলেন, নির্দিষ্টভাবে তারা (কার্টার সেন্টারের প্রতিনিধি দল) যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছেন, সেটা হচ্ছে নির্বাচনে তারা হয়তো মনিটরিং করতে আসতে পারেন। যদি সেটা হয়, তবে কীভাবে সম্ভব হতে পারে এবং সেটা কখন, মূলত এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মঈন খান বলেন, দেখুন আমি কারো সমালোচনা করতে চাই না। একটা ছোট উদাহরণ দিচ্ছি, বাংলাদেশের ইতিহাসে যেটি হয়েছে, আমি তাদেরকেও বলেছি, আমরা এরশাদের পতনের সময় দেখেছিলাম একটি কেয়ারটেকার সরকার এবং সেটাও একটি অন্তর্বর্তী সরকার। তারাও ৯০ দিনের মাথায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষকে উপহার দিয়েছিল এবং আজকে পর্যন্ত বাংলাদেশের কেউ সেটার সমালোচনা করে না। কাজেই এটা বুঝতে হবে যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে গেলে যে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সূচি নিতে হবে তার কোনো যৌক্তিকতা নেই। নির্বাচন ৯০ দিনের মধ্যে করা সম্ভব, এখন তো এরই মধ্যে নয় মাস হয়ে গেছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে মানুষের আলোচনায় আসবে আমরা যদি নাও করি মানুষ চুপ করে থাকবে না। আলোচনা হয়েছে কত দ্রুত এটা করা যায় এবং বিএনপি কখন এ নির্বাচনটি প্রত্যাশা করছে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের দলের বক্তব্য স্পষ্ট- যেটা এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন, আমরা বলেছি যে এ বছরের শেষ নাগাদ যদি নির্বাচন হয় তাহলে এটা জনগণের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা বিশ্বাস করি অহেতুক যদি বিলম্ব হয় যে সমস্যাটি আপনারা দেখতে পারছেন আজকে বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক যে পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি সেটা আজকে থেকে নয় মাস আগে ৫ আগস্টের যে পরিস্থিতি ছিল, তার থেকে ভালো নয়। কাজেই যদি দেশের স্থিতিশীলতা কোনো কারণে বিঘ্নিত হয় তাহলে এটা ১৮ কোটি মানুষের জন্য সুখকর হবে না। সেজন্য একটি কথা আমরা জোর দিয়ে বলেছি যে জনগণের সত্যিকার প্রতিনিধি, সেই সত্যিকার প্রতিনিধি যেটা নির্ধারিত হতে পারে একমাত্র একটা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সেই নির্বাচনটি যত শিগগিরই হয় তাহলে আমরা বিশ্বাস করি সেটা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে, সেই কথাটি আমরা তাদের বলেছি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

যুক্তরাষ্ট্র গেলেন শাকিব খান

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কি না, সেটি বিএনপির বিষয় নয় : মঈন খান

প্রকাশের সময় : ০৩:২২:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। তবে, সরকার ও নির্বাচন কমিশন চাইলে দলটিকে নিষিদ্ধ করতে পারে। বিএনপির হিসেবে আমরা এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক নই। এ সিদ্ধান্তের মালিক জনগণ। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে- কে নির্বাচন করতে পারবে, কে পারবে না।

শুক্রবার (৯ মে) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে এনসিপির অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।

মঈন খান বলেন, এটা নিয়ে আমাদের দলের মহাসচিব বলেছেন, এটা জনগণের সিদ্ধান্তের বিষয়। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কারা নির্বাচন করবে আর কারা করবে না।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, আমি যদি বলি এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগকে কেন জিজ্ঞেস করছেন না? তারা কি আসলেই নির্বাচন করতে চায়, তারা কি আসলেই গণতন্ত্র চায়? সেটাতো আওয়ামী লীগকে বলতে হবে। আজকে ৯ মাস হয়ে গেছে একজন আওয়ামী লীগারকে আজকে পর্যন্ত দেখাতে পারবেন কি তারা বলেছেন দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট কায়দায় যে মানুষের ওপর জুলুম করেছে, এ দেশকে তছনছ করে দিয়েছে, লুটপাট করে নিয়েছে, তারা ভুল করেছে, তারা ক্ষমা স্বীকার করছে বাংলাদেশের মানুষের কাছে, তারা আজকে জনগণের মতামতকে নিয়ে নির্বাচন করতে চায়। আওয়ামী লীগের একটি লোকও কি তা বলেছে? বলেনি। সুতরাং প্রশ্নটি আমাকে জিজ্ঞেস করার কোনো প্রয়োজন নাই, এর উত্তর বাংলাদেশের জনগণ দিবে।

এর আগে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র দ্য কার্টার সেন্টার নামে একটি সংগঠনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক হয়।

বৈঠকে আলোচনা বিষয়বস্তু সম্পর্কে মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একইসঙ্গে তারা হয়ত বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতেও আসতে পারে।

মঈন খান বলেন, এরশাদের পতনের পর এখনকার অন্তর্বর্তী সরকারের মতো একটি সরকার গঠন করা হয়েছিল। সেই সময়কার সরকার তিন মাসের মধ্যে দেশবাসীকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়েছিল। আজকে সেই নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো সমালোচনা করে না। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে গেলে তার জন্য অনির্দিষ্ট সময় পিছিয়ে নিতে হবে তার কোনো যুক্তিযুক্ততা নেই।

তিনি বলেন, নির্দিষ্টভাবে তারা (কার্টার সেন্টারের প্রতিনিধি দল) যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছেন, সেটা হচ্ছে নির্বাচনে তারা হয়তো মনিটরিং করতে আসতে পারেন। যদি সেটা হয়, তবে কীভাবে সম্ভব হতে পারে এবং সেটা কখন, মূলত এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মঈন খান বলেন, দেখুন আমি কারো সমালোচনা করতে চাই না। একটা ছোট উদাহরণ দিচ্ছি, বাংলাদেশের ইতিহাসে যেটি হয়েছে, আমি তাদেরকেও বলেছি, আমরা এরশাদের পতনের সময় দেখেছিলাম একটি কেয়ারটেকার সরকার এবং সেটাও একটি অন্তর্বর্তী সরকার। তারাও ৯০ দিনের মাথায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষকে উপহার দিয়েছিল এবং আজকে পর্যন্ত বাংলাদেশের কেউ সেটার সমালোচনা করে না। কাজেই এটা বুঝতে হবে যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে গেলে যে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সূচি নিতে হবে তার কোনো যৌক্তিকতা নেই। নির্বাচন ৯০ দিনের মধ্যে করা সম্ভব, এখন তো এরই মধ্যে নয় মাস হয়ে গেছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে মানুষের আলোচনায় আসবে আমরা যদি নাও করি মানুষ চুপ করে থাকবে না। আলোচনা হয়েছে কত দ্রুত এটা করা যায় এবং বিএনপি কখন এ নির্বাচনটি প্রত্যাশা করছে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের দলের বক্তব্য স্পষ্ট- যেটা এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন, আমরা বলেছি যে এ বছরের শেষ নাগাদ যদি নির্বাচন হয় তাহলে এটা জনগণের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা বিশ্বাস করি অহেতুক যদি বিলম্ব হয় যে সমস্যাটি আপনারা দেখতে পারছেন আজকে বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক যে পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি সেটা আজকে থেকে নয় মাস আগে ৫ আগস্টের যে পরিস্থিতি ছিল, তার থেকে ভালো নয়। কাজেই যদি দেশের স্থিতিশীলতা কোনো কারণে বিঘ্নিত হয় তাহলে এটা ১৮ কোটি মানুষের জন্য সুখকর হবে না। সেজন্য একটি কথা আমরা জোর দিয়ে বলেছি যে জনগণের সত্যিকার প্রতিনিধি, সেই সত্যিকার প্রতিনিধি যেটা নির্ধারিত হতে পারে একমাত্র একটা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সেই নির্বাচনটি যত শিগগিরই হয় তাহলে আমরা বিশ্বাস করি সেটা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে, সেই কথাটি আমরা তাদের বলেছি।