Dhaka মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুপাশে নেই সংযোগ সড়ক কাজে আসছে না ৮ কোটি টাকার সেতু

দাগনভূঞা (ফেনী) প্রতিনিধি : 

আট কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ৬০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির। তবে এর দুপাশে নেই সংযোগ সড়ক। সেতুর এক পাশে ফসলি জমি তো, অন্য পাশে বসতঘর। এর দরূণ সেতুটি ব্যবহার করতে পারে না স্থানীয়রা। বাধ্য হয়ে নৌকা অথবা কাঠের ব্রিজ ব্যবহার করে নদী পার হতে হয় তাদের। ঘটনাটি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের ছোট ফেনী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাতুভূঞা ইউনিয়নের আশ্রাফপুর-মোমারিজপুর দুগ্রামের সংযোগ সৃষ্টির জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ছোট ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। টেন্ডারের মাধ্যমে সেতু নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ছালেহ আহম্মদ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করে তারা। কিন্তু এর একপাশে কৃষিজমি ও অন্যপাশেও ঘরবাড়ি থাকায় ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যাচ্ছে না। এছাড়া প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার সেতুটির সড়ক সংযোগ করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, লুটপাট করতেই ২০ ফুট উচ্চতার সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। দায়সারা কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দের সম্পূর্ণ টাকা নিয়ে চলে গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক বছর আগে নির্মাণ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি ব্যবহার করতে পারছে না তারা। বাধ্য হয়ে ব্রিজের অদূরে কাঠের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ওই কাঠের সেতু দিয়ে চলাচল করে দুই গ্রামের বাসিন্দারা।

স্থানীয় কৃষক রঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, সেতু নির্মাণ হওয়ার খবরে আমরা অনেক খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও এর দুপাশে রাস্তা নির্মাণ হয়নি। এতে সেতুটি আমাদের কোনো কাজে লাগছে না। পাশের কাঠের সেতু দিয়ে চলাচলের সময় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে।

আবদুল আলী নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, উন্নয়ন করতে গিয়ে আমাদের আরও ক্ষতি হয়েছে। এরই মধ্যে নদী ভাঙনে আমাদের অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। এরপরও যদি সেতুর দুপাশে সংযোগ সড়ক থাকতো তাহলে পায়ে হেঁটে চলাচল করা যেত। কিন্তু রাস্তা নির্মাণ না হওয়ায় এখন আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

মাতুভূঞা ইউনিয়নের সাবেক সদস্য হারিছ আহমদ পেয়ার বলেন, আমরা জানি না কীভাবে প্রকৌশলী এত উঁচু ও রাস্তার সংযোগ না দিয়ে সেতুর অনুমোদন করলেন। বর্ষার আগে দুপাশের রাস্তা নির্মাণ না হলে মাতুভূঞা ও বেকের বাজারগামী লোকজন ব্যাপক অসুবিধার সম্মুখীন হবেন।

সেতুর বিষয়ে মন্তব্য নিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ছালেহ আহমদের মালিককে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাছুম বিল্লাহ বলেন, পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার কারণে সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যায়নি। জায়গার মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তা নির্মাণের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স. ম. আজহারুল ইসলাম বলেন, রাস্তা না থাকলে সেতুটি জনগণের কোনো উপকারে আসবে না। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

দুপাশে নেই সংযোগ সড়ক কাজে আসছে না ৮ কোটি টাকার সেতু

প্রকাশের সময় : ১২:২২:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

দাগনভূঞা (ফেনী) প্রতিনিধি : 

আট কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ৬০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির। তবে এর দুপাশে নেই সংযোগ সড়ক। সেতুর এক পাশে ফসলি জমি তো, অন্য পাশে বসতঘর। এর দরূণ সেতুটি ব্যবহার করতে পারে না স্থানীয়রা। বাধ্য হয়ে নৌকা অথবা কাঠের ব্রিজ ব্যবহার করে নদী পার হতে হয় তাদের। ঘটনাটি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের ছোট ফেনী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাতুভূঞা ইউনিয়নের আশ্রাফপুর-মোমারিজপুর দুগ্রামের সংযোগ সৃষ্টির জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ছোট ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। টেন্ডারের মাধ্যমে সেতু নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ছালেহ আহম্মদ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করে তারা। কিন্তু এর একপাশে কৃষিজমি ও অন্যপাশেও ঘরবাড়ি থাকায় ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যাচ্ছে না। এছাড়া প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার সেতুটির সড়ক সংযোগ করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, লুটপাট করতেই ২০ ফুট উচ্চতার সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। দায়সারা কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দের সম্পূর্ণ টাকা নিয়ে চলে গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক বছর আগে নির্মাণ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি ব্যবহার করতে পারছে না তারা। বাধ্য হয়ে ব্রিজের অদূরে কাঠের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ওই কাঠের সেতু দিয়ে চলাচল করে দুই গ্রামের বাসিন্দারা।

স্থানীয় কৃষক রঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, সেতু নির্মাণ হওয়ার খবরে আমরা অনেক খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও এর দুপাশে রাস্তা নির্মাণ হয়নি। এতে সেতুটি আমাদের কোনো কাজে লাগছে না। পাশের কাঠের সেতু দিয়ে চলাচলের সময় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে।

আবদুল আলী নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, উন্নয়ন করতে গিয়ে আমাদের আরও ক্ষতি হয়েছে। এরই মধ্যে নদী ভাঙনে আমাদের অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। এরপরও যদি সেতুর দুপাশে সংযোগ সড়ক থাকতো তাহলে পায়ে হেঁটে চলাচল করা যেত। কিন্তু রাস্তা নির্মাণ না হওয়ায় এখন আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

মাতুভূঞা ইউনিয়নের সাবেক সদস্য হারিছ আহমদ পেয়ার বলেন, আমরা জানি না কীভাবে প্রকৌশলী এত উঁচু ও রাস্তার সংযোগ না দিয়ে সেতুর অনুমোদন করলেন। বর্ষার আগে দুপাশের রাস্তা নির্মাণ না হলে মাতুভূঞা ও বেকের বাজারগামী লোকজন ব্যাপক অসুবিধার সম্মুখীন হবেন।

সেতুর বিষয়ে মন্তব্য নিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ছালেহ আহমদের মালিককে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাছুম বিল্লাহ বলেন, পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার কারণে সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যায়নি। জায়গার মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তা নির্মাণের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স. ম. আজহারুল ইসলাম বলেন, রাস্তা না থাকলে সেতুটি জনগণের কোনো উপকারে আসবে না। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।