Dhaka শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউআইইউর ভিসি-ডিনসহ ১১ কর্মকর্তার পদত্যাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া পদত্যাগ করেছেন। তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টির সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকরাও পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা। রাত সোয়া ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়।

ফেসবুক পোস্টে উপাচার্যের পদত্যাগপত্র এবং ১০ জন ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও পরিচালকের সই সম্বলিত পদত্যাগপত্রের ছবি শেয়ার করা হয়েছে।

তাছাড়া রাত ১০টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম মিয়া জাগো নিউজকে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান বরাবর পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমি এ চিঠি লিখছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী অগ্রহণযোগ্য ও অসম্মানজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় আমি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি আপনি আমার পদত্যাগপত্র সদয়ভাবে গ্রহণ করবেন।

অন্যদিকে উপাচার্য বরাবর পদত্যাগপত্র দিয়েছেন ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও পরিচালকসহ যে ১০ কর্মকর্তা। পদত্যাগপত্রে তারা লিখেছেন, কিছু শিক্ষার্থীর অন্যায় দাবি-দাওয়ার প্রতিবাদে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীরা ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রশাসনের বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করছি।

এতে সই করেছেন মো. রেজওয়ান খান, এসওএসই অনুষদের ডিন ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসান সারওয়ার, মোহাম্মদ ওমর ফারুক, খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. কে মাসুকুর রহমান, ড. তাহমিনা ফয়েজ, ড. সুমন আহমেদ, ড. জান্নাতুন নুর মুক্তা, ড. এস এম রফিকুল ইসলাম, ডিরেক্টর (কো-অর্ডিনেশন) অধ্যাপক এ এস এম সালাহউদ্দিন।

যেসব কারণে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

তিন দফা দাবিতে মূলত ইউআইইউ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। পরে দাবি আদায়ে তারা আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন।

তিন দফা দাবিগুলো হলো-

১. শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ, ইউআইইউ রিফর্ম ১.০ ও জুলাই বিপ্লবে বাধা দেওয়া, এক ছাত্রীর বাবা মারা যাওয়ার পর তার কাছে কাউন্সিলর থেকে ডেড সার্টিফিকেট চাওয়া, আইসিইউ ফেরত শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানানো, বিশ্ববিদ্যালয়ে একক সিন্ডিকেট তৈরির অভিযোগে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল হুদার পদত্যাগ।
২. মিডটার্ম পরীক্ষার সময় ১৫ মিনিট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটি পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

৩. ইউআইইউ রিফর্ম ১.০-এ যেসব দাবি মানা হয়েছিল, সব দাবি অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশেষভাবে ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষার ফি মিডটার্মে কোর্সপ্রতি দুই হাজার টাকা ও ফাইনাল পরীক্ষায় তিন হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্ট দাবি না মেনে পদত্যাগের মাধ্যমে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, একজন শিক্ষকের পদত্যাগ ও খুবই ছোট কয়েকটি দাবি না মেনে উপাচার্যসহ ১১ শিক্ষক-কর্মকর্তার পদত্যাগ করাটা সাজানো নাটক। তারা তিন দফা দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বৈরী আবহাওয়ার কারণে আগৈলঝাড়ায় ছাতার কারিগরদের ব্যাপক কদর

ইউআইইউর ভিসি-ডিনসহ ১১ কর্মকর্তার পদত্যাগ

প্রকাশের সময় : ১১:৪৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া পদত্যাগ করেছেন। তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টির সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকরাও পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা। রাত সোয়া ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়।

ফেসবুক পোস্টে উপাচার্যের পদত্যাগপত্র এবং ১০ জন ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও পরিচালকের সই সম্বলিত পদত্যাগপত্রের ছবি শেয়ার করা হয়েছে।

তাছাড়া রাত ১০টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম মিয়া জাগো নিউজকে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান বরাবর পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমি এ চিঠি লিখছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী অগ্রহণযোগ্য ও অসম্মানজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় আমি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি আপনি আমার পদত্যাগপত্র সদয়ভাবে গ্রহণ করবেন।

অন্যদিকে উপাচার্য বরাবর পদত্যাগপত্র দিয়েছেন ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও পরিচালকসহ যে ১০ কর্মকর্তা। পদত্যাগপত্রে তারা লিখেছেন, কিছু শিক্ষার্থীর অন্যায় দাবি-দাওয়ার প্রতিবাদে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীরা ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রশাসনের বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করছি।

এতে সই করেছেন মো. রেজওয়ান খান, এসওএসই অনুষদের ডিন ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসান সারওয়ার, মোহাম্মদ ওমর ফারুক, খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. কে মাসুকুর রহমান, ড. তাহমিনা ফয়েজ, ড. সুমন আহমেদ, ড. জান্নাতুন নুর মুক্তা, ড. এস এম রফিকুল ইসলাম, ডিরেক্টর (কো-অর্ডিনেশন) অধ্যাপক এ এস এম সালাহউদ্দিন।

যেসব কারণে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

তিন দফা দাবিতে মূলত ইউআইইউ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। পরে দাবি আদায়ে তারা আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন।

তিন দফা দাবিগুলো হলো-

১. শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ, ইউআইইউ রিফর্ম ১.০ ও জুলাই বিপ্লবে বাধা দেওয়া, এক ছাত্রীর বাবা মারা যাওয়ার পর তার কাছে কাউন্সিলর থেকে ডেড সার্টিফিকেট চাওয়া, আইসিইউ ফেরত শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানানো, বিশ্ববিদ্যালয়ে একক সিন্ডিকেট তৈরির অভিযোগে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল হুদার পদত্যাগ।
২. মিডটার্ম পরীক্ষার সময় ১৫ মিনিট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটি পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

৩. ইউআইইউ রিফর্ম ১.০-এ যেসব দাবি মানা হয়েছিল, সব দাবি অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশেষভাবে ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষার ফি মিডটার্মে কোর্সপ্রতি দুই হাজার টাকা ও ফাইনাল পরীক্ষায় তিন হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্ট দাবি না মেনে পদত্যাগের মাধ্যমে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, একজন শিক্ষকের পদত্যাগ ও খুবই ছোট কয়েকটি দাবি না মেনে উপাচার্যসহ ১১ শিক্ষক-কর্মকর্তার পদত্যাগ করাটা সাজানো নাটক। তারা তিন দফা দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন।