Dhaka সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হৃদয়কে দেওয়া নতুন শাস্তিকে ‘হাস্যকর’ বললেন তামিম

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৩১:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • ২২৫ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তাওহিদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ঘিরে তৈরি হওয়া নাটক থামছেই না! দিন যত গড়াচ্ছে, তত বিভিন্ন দিকে মোড় নিচ্ছে সেটা। এবার সেই নাটকের নতুন পর্বে যুক্ত হলেন তামিম ইকবালসহ বাংলাদেশের আরও অনেক ক্রিকেটার। এই ইস্যুসহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করলেন তারা। সেখানে নেতৃত্ব দেওয়া তামিম পরে সাংবাদিকদের কাছে বললেন, হৃদয়ের আবার নিষিদ্ধ হওয়াটা হাস্যকর।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে মিরপুরের একাডেমি ভবনে প্রথমে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন ক্রিকেটাররা। এরপর তামিমের নেতৃত্বে তারা বিসিবি কার্যালয়ে আলোচনায় বসেন বোর্ড প্রধান ফারুকের সঙ্গে। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিবির দুই পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম ও ইফতেখার রহমান মিঠু।
দীর্ঘ সভা শেষে তামিম ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘তার যে শাস্তিটা ছিল, সেটা কিন্তু সে ভোগ করেছে। এখন দুটি ম্যাচ খেলার পর কাল শুনলাম, তাকে আবার বহিষ্কার করেছে। এটা কোন আইনে, কীভাবে করেছে, এটা আমার জানা নেই। এটা খুবই হাস্যকর, কোনোভাবেই সে আবার বহিষ্কার হতে পারে না। যাকে বিসিবি দুই ম্যাচ খেলতে দিয়েছে, তাকে আবার কীভাবে বহিষ্কার করে?’

তামিম ইকবাল আরও বলেন, ‘তাওহিদ হৃদয়কে যখন দুই ম্যাচের জন্য বহিষ্কার করে, তখন কিন্তু কোনো খেলোয়াড় বা কেউ এটা নিয়ে কোনো কথা বলেনি। ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করতে পারি যে সিদ্ধান্তটা বেশি কঠোর হয়ে গেছে। কিন্তু এটা নিয়ে আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি। তার কিছুদিন পর দেখলাম যে নিষেধাজ্ঞা দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ করা হলো। এটা বিসিবি করেছে। তখনো আমরা কোনো কথা বলিনি।’

মোহামেডানের চাপে বিসিবি হৃদয়কে এক ম্যাচ শাস্তি ভোগ করার পর খেলতে দিয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তামিম বলেন, ‘মোহামেডান চাপ দিয়েছে কি না, এটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। যেহেতু বিসিবি তাকে খেলতে অনুমতি দিয়েছে, তার মানে সে তার শাস্তি ভোগ করেছে। একই ঘটনায় এখন আবার শাস্তি হয় কীভাবে? এটা হাস্যকর।’

তামিমের কথার সুর শুনে মনে হয়েছে, হৃদয়ের শাস্তি নিয়ে নাটকের আরও একটি পর্ব শিগগিরই দেখা হতে পারে। সেটি হলো কাল রাতে নেওয়া টেকনিক্যাল কমিটির তাঁকে আরও এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সিদ্ধান্ত। তামিম বলেছেন, ‘আমরা বোর্ড সভাপতিকে আমাদের পয়েন্ট বলেছি, এগুলো নিয়ে আমরা আপসেট। বলেছি দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন, কাল খেলা। আপনারা হয়তো দ্রুতই কোনো সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন, আমরাও জানতে পারব।’

তামিম জানান বিসিবি সভাপতির সঙ্গে আরও দুটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তাঁরা। প্রিমিয়ার লিগে গুলশান-শাইনপুকুর ম্যাচে সন্দেহজনক আউটের তদন্ত করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট দুই ক্রিকেটারকে একাডেমি মাঠে ডেকে এনে প্রকাশ্যে ম্যাচের ওই সময়কার ঘটনা পুনঃমঞ্চস্থ করেছিল বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগ। বোর্ড সভাপতি ফারুকের কাছে এ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রিকেটাররা। তামিম বলেন, ‘গুলশান-শাইনপুকুর ম্যাচে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। কেউ অনিয়ম করে থাকলে আমরাও চাই তার শাস্তি হোক। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাদের ডেকে এনে অভিনয় করাতে হবে। বিশ্বের কোথাও কোনো দুর্নীতি দমন বিভাগে এ রকম নিয়ম নেই। এটা ক্রিকেটারদের জন্য অপমানজনক।’

এ ছাড়া সর্বশেষ বিপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ের জড়িত সন্দেহে কিছু ক্রিকেটারের নাম প্রকাশ্যে চলে আসে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগে এভাবে প্রকাশ্যে নাম ফাঁস করে দেওয়াটাও ক্রিকেটারদের জন্য অপমানজনক বলে মনে করেন তামিম। এ নিয়েও বিসিবি সভাপতির কাছে নালিশ জানিয়েছেন ক্রিকেটাররা। তামিম জানান, এসব ঘটনা নিয়ে গত দুই তিন মাস ধরে ক্রিকেটাররা হতাশ। সে জন্যই সবাই একসঙ্গে সভাপতির সঙ্গে দেখা করেছেন।

তামিমের প্রেস ব্রিফিং চলার সময়ই বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম ত্যাগ করেন।

উল্লেখ্য, ১২ এপ্রিল ডিপিএলে রাউন্ড রবিন লীগের শেষ ম্যাচে আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকতের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় পড়েন হৃদয়। তার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের তরফে আপিলও করা হয়েছিল। এরপর হৃদয়ের শাস্তি এক ম্যাচে কমিয়ে এনেছিল লিগ কর্তৃপক্ষ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

হৃদয়কে দেওয়া নতুন শাস্তিকে ‘হাস্যকর’ বললেন তামিম

প্রকাশের সময় : ০৭:৩১:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তাওহিদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ঘিরে তৈরি হওয়া নাটক থামছেই না! দিন যত গড়াচ্ছে, তত বিভিন্ন দিকে মোড় নিচ্ছে সেটা। এবার সেই নাটকের নতুন পর্বে যুক্ত হলেন তামিম ইকবালসহ বাংলাদেশের আরও অনেক ক্রিকেটার। এই ইস্যুসহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করলেন তারা। সেখানে নেতৃত্ব দেওয়া তামিম পরে সাংবাদিকদের কাছে বললেন, হৃদয়ের আবার নিষিদ্ধ হওয়াটা হাস্যকর।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে মিরপুরের একাডেমি ভবনে প্রথমে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন ক্রিকেটাররা। এরপর তামিমের নেতৃত্বে তারা বিসিবি কার্যালয়ে আলোচনায় বসেন বোর্ড প্রধান ফারুকের সঙ্গে। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিবির দুই পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম ও ইফতেখার রহমান মিঠু।
দীর্ঘ সভা শেষে তামিম ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘তার যে শাস্তিটা ছিল, সেটা কিন্তু সে ভোগ করেছে। এখন দুটি ম্যাচ খেলার পর কাল শুনলাম, তাকে আবার বহিষ্কার করেছে। এটা কোন আইনে, কীভাবে করেছে, এটা আমার জানা নেই। এটা খুবই হাস্যকর, কোনোভাবেই সে আবার বহিষ্কার হতে পারে না। যাকে বিসিবি দুই ম্যাচ খেলতে দিয়েছে, তাকে আবার কীভাবে বহিষ্কার করে?’

তামিম ইকবাল আরও বলেন, ‘তাওহিদ হৃদয়কে যখন দুই ম্যাচের জন্য বহিষ্কার করে, তখন কিন্তু কোনো খেলোয়াড় বা কেউ এটা নিয়ে কোনো কথা বলেনি। ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করতে পারি যে সিদ্ধান্তটা বেশি কঠোর হয়ে গেছে। কিন্তু এটা নিয়ে আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি। তার কিছুদিন পর দেখলাম যে নিষেধাজ্ঞা দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ করা হলো। এটা বিসিবি করেছে। তখনো আমরা কোনো কথা বলিনি।’

মোহামেডানের চাপে বিসিবি হৃদয়কে এক ম্যাচ শাস্তি ভোগ করার পর খেলতে দিয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তামিম বলেন, ‘মোহামেডান চাপ দিয়েছে কি না, এটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। যেহেতু বিসিবি তাকে খেলতে অনুমতি দিয়েছে, তার মানে সে তার শাস্তি ভোগ করেছে। একই ঘটনায় এখন আবার শাস্তি হয় কীভাবে? এটা হাস্যকর।’

তামিমের কথার সুর শুনে মনে হয়েছে, হৃদয়ের শাস্তি নিয়ে নাটকের আরও একটি পর্ব শিগগিরই দেখা হতে পারে। সেটি হলো কাল রাতে নেওয়া টেকনিক্যাল কমিটির তাঁকে আরও এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সিদ্ধান্ত। তামিম বলেছেন, ‘আমরা বোর্ড সভাপতিকে আমাদের পয়েন্ট বলেছি, এগুলো নিয়ে আমরা আপসেট। বলেছি দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন, কাল খেলা। আপনারা হয়তো দ্রুতই কোনো সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন, আমরাও জানতে পারব।’

তামিম জানান বিসিবি সভাপতির সঙ্গে আরও দুটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তাঁরা। প্রিমিয়ার লিগে গুলশান-শাইনপুকুর ম্যাচে সন্দেহজনক আউটের তদন্ত করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট দুই ক্রিকেটারকে একাডেমি মাঠে ডেকে এনে প্রকাশ্যে ম্যাচের ওই সময়কার ঘটনা পুনঃমঞ্চস্থ করেছিল বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগ। বোর্ড সভাপতি ফারুকের কাছে এ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রিকেটাররা। তামিম বলেন, ‘গুলশান-শাইনপুকুর ম্যাচে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। কেউ অনিয়ম করে থাকলে আমরাও চাই তার শাস্তি হোক। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাদের ডেকে এনে অভিনয় করাতে হবে। বিশ্বের কোথাও কোনো দুর্নীতি দমন বিভাগে এ রকম নিয়ম নেই। এটা ক্রিকেটারদের জন্য অপমানজনক।’

এ ছাড়া সর্বশেষ বিপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ের জড়িত সন্দেহে কিছু ক্রিকেটারের নাম প্রকাশ্যে চলে আসে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগে এভাবে প্রকাশ্যে নাম ফাঁস করে দেওয়াটাও ক্রিকেটারদের জন্য অপমানজনক বলে মনে করেন তামিম। এ নিয়েও বিসিবি সভাপতির কাছে নালিশ জানিয়েছেন ক্রিকেটাররা। তামিম জানান, এসব ঘটনা নিয়ে গত দুই তিন মাস ধরে ক্রিকেটাররা হতাশ। সে জন্যই সবাই একসঙ্গে সভাপতির সঙ্গে দেখা করেছেন।

তামিমের প্রেস ব্রিফিং চলার সময়ই বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম ত্যাগ করেন।

উল্লেখ্য, ১২ এপ্রিল ডিপিএলে রাউন্ড রবিন লীগের শেষ ম্যাচে আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকতের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় পড়েন হৃদয়। তার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের তরফে আপিলও করা হয়েছিল। এরপর হৃদয়ের শাস্তি এক ম্যাচে কমিয়ে এনেছিল লিগ কর্তৃপক্ষ।