Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণতন্ত্রের লড়াকুরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে : রিজভী

মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

গণতন্ত্রের জন্য যারা লড়াকু সৈনিক, রাজনৈতিক নেতা, শিল্পী, কলাকৌশলী তারা নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরের দিকে মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার চান্দহর এলাকায় চারুশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের আগুনে পুড়ে যাওয়া বসতবাড়ি পরিদর্শন শেষ তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, চারুশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ এক জন মেধাবী ছেলে, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে পড়ালেখা শেষ করেছেন। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার কথা কিন্তু ফ্যাসিস্টরা তাকেই তারা টার্গেট করেছে কারণ সে আন্দোলনের পক্ষে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে।

তিনি বলেন, মানবেন্দ্র ঘোষকে কিনতে পারেনি ফ্যাসিস্টরা, মানবেন্দ্র তার সকল প্রতিভা দিয়ে পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফ তৈরি করেন।আন্দোলনের সময় মুগ্ধ পানি দিচ্ছে, তার সেই পানির বোতল তৈরি করেছে শিল্পীরা আর এই কারণে ফ্যাসিস্টরা টার্গেট করেছে মানবেন্দ্র ঘোষকে এবং তার বাড়িতে আগুনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের দোসররা সমাজের নানা জায়গায় ঘাপটি মেরে আছে। ওদের কাছে পেট্রোল কিনে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া ও মানুষকে হত্যা করার জন্য যে অস্ত্র প্রয়োজন তার অর্থ তাদের কাছে আছে। সেটাকে দমন করতে আপনারা কী করবেন সেটা জনগণের কাছে খোলাসা করুন, যেহেতু প্রশাসন আপনাদের হাতে। দোসরদের অনেকেই পার্শ্ববর্তী দেশসহ অনেক জায়গায় পালিয়ে গেছে। কিন্তু যারা নৈরাজ্য ছড়াচ্ছে তারা প্রশ্রয় পাচ্ছে কার দ্বারা? প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গের তো এটা জানার কথা। যারা ১৫ বছর যাবত শেখ হাসিনাকে পাহারা দিয়েছে, ব্যাংক লুট করেছে, অন্যের সম্পদ লুট করেছে, টাকা পাচার করেছে তারা আজ এই জনসমুদ্রের ভেতর কোথায় লুকিয়ে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি খুঁজে বের করতে না পারে তাহলে তো এই সরকারকে মানুষ ব্যর্থ সরকার বলবে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষ আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু আইনগতভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ভিত্তি নেই। যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে তারা প্রত্যেকেই আপনাদের সমর্থন করেছে, সে অনুযায়ী আপনারা দেশ চালাচ্ছেন। এখন আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে সেই দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের। কারণ প্রশাসন আপনাদের হাতে, অন্য সব স্টেট মেশিনারিও আপনাদের হাতে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে আপনারা কী করবেন সেটা আপনাদেরই ঠিক করতে হবে।

তিনি বলেন, এই সরকার নির্বাচন নিয়ে কী তালবাহানা করছে তা আমরা দেখছি। এই সরকার তো গণতন্ত্র সংগ্রামের ফসল। তার তো প্রতিটি ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে যে মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন লাগলো কী করে। তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তার চিত্রকর্ম দিয়ে, শৈল্পিক চেতনা দিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। মানবেন্দ্র ঘোষের মতো আরও কত লোক যে সামনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যারা গণতন্ত্রের কথা বলেছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলেছে, যারা লড়াই করেছে, গুলির সামনে বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়েছে, এখনো যারা ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে তারা প্রত্যেকেই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসরদের টার্গেটে পরিণত হয়ে আছে। তারা একেক করে তাদের ওপর আক্রমণ করবে।

এ সময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আজাদ খান, গোলাম আবেদীন কায়সার, জেলা কৃষক দলের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সাইদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বাদল, বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া হাবু, জেলা যুবদলের সদস্যসচিব তুহিনুর রহমান তুহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিন্নাহ খান, ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল খালেক শুভ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান সজীবসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

গণতন্ত্রের লড়াকুরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০২:৩৪:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

গণতন্ত্রের জন্য যারা লড়াকু সৈনিক, রাজনৈতিক নেতা, শিল্পী, কলাকৌশলী তারা নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরের দিকে মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার চান্দহর এলাকায় চারুশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের আগুনে পুড়ে যাওয়া বসতবাড়ি পরিদর্শন শেষ তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, চারুশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ এক জন মেধাবী ছেলে, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে পড়ালেখা শেষ করেছেন। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার কথা কিন্তু ফ্যাসিস্টরা তাকেই তারা টার্গেট করেছে কারণ সে আন্দোলনের পক্ষে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে।

তিনি বলেন, মানবেন্দ্র ঘোষকে কিনতে পারেনি ফ্যাসিস্টরা, মানবেন্দ্র তার সকল প্রতিভা দিয়ে পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফ তৈরি করেন।আন্দোলনের সময় মুগ্ধ পানি দিচ্ছে, তার সেই পানির বোতল তৈরি করেছে শিল্পীরা আর এই কারণে ফ্যাসিস্টরা টার্গেট করেছে মানবেন্দ্র ঘোষকে এবং তার বাড়িতে আগুনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের দোসররা সমাজের নানা জায়গায় ঘাপটি মেরে আছে। ওদের কাছে পেট্রোল কিনে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া ও মানুষকে হত্যা করার জন্য যে অস্ত্র প্রয়োজন তার অর্থ তাদের কাছে আছে। সেটাকে দমন করতে আপনারা কী করবেন সেটা জনগণের কাছে খোলাসা করুন, যেহেতু প্রশাসন আপনাদের হাতে। দোসরদের অনেকেই পার্শ্ববর্তী দেশসহ অনেক জায়গায় পালিয়ে গেছে। কিন্তু যারা নৈরাজ্য ছড়াচ্ছে তারা প্রশ্রয় পাচ্ছে কার দ্বারা? প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গের তো এটা জানার কথা। যারা ১৫ বছর যাবত শেখ হাসিনাকে পাহারা দিয়েছে, ব্যাংক লুট করেছে, অন্যের সম্পদ লুট করেছে, টাকা পাচার করেছে তারা আজ এই জনসমুদ্রের ভেতর কোথায় লুকিয়ে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি খুঁজে বের করতে না পারে তাহলে তো এই সরকারকে মানুষ ব্যর্থ সরকার বলবে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষ আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু আইনগতভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ভিত্তি নেই। যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে তারা প্রত্যেকেই আপনাদের সমর্থন করেছে, সে অনুযায়ী আপনারা দেশ চালাচ্ছেন। এখন আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে সেই দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের। কারণ প্রশাসন আপনাদের হাতে, অন্য সব স্টেট মেশিনারিও আপনাদের হাতে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে আপনারা কী করবেন সেটা আপনাদেরই ঠিক করতে হবে।

তিনি বলেন, এই সরকার নির্বাচন নিয়ে কী তালবাহানা করছে তা আমরা দেখছি। এই সরকার তো গণতন্ত্র সংগ্রামের ফসল। তার তো প্রতিটি ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে যে মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন লাগলো কী করে। তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তার চিত্রকর্ম দিয়ে, শৈল্পিক চেতনা দিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। মানবেন্দ্র ঘোষের মতো আরও কত লোক যে সামনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যারা গণতন্ত্রের কথা বলেছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলেছে, যারা লড়াই করেছে, গুলির সামনে বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়েছে, এখনো যারা ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে তারা প্রত্যেকেই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসরদের টার্গেটে পরিণত হয়ে আছে। তারা একেক করে তাদের ওপর আক্রমণ করবে।

এ সময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আজাদ খান, গোলাম আবেদীন কায়সার, জেলা কৃষক দলের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সাইদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বাদল, বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া হাবু, জেলা যুবদলের সদস্যসচিব তুহিনুর রহমান তুহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিন্নাহ খান, ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল খালেক শুভ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান সজীবসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।