নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য বানানো ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ আগুনে পুরোপুরি পুড়ে গেছে। এছাড়া আংশিক পুড়েছে আরেকটি মোটিফ ‘শান্তির পায়রা’।
শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনে ফ্যাসিবাদের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাকৃতি পুরোপুরি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এছাড়া ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফটিও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশ-কাঠ দিয়ে একটি প্রতিকৃতির রূপ দেওয়া হয়েছিল। যেটি দেখতে সাবেক ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার মুখায়ভবের মতো বলে অনেক মত দিয়েছেন। মুখায়ভবটির মুখে দুটি বড় দাঁত রাখা হয়েছে। মাথায় দুটি শিং রাখা হয়েছে। এই মোটিফটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এবং ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফটিও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চারুকলা অনুষদে দেখা যায়, অনুষদের যেখানে মোটিফ তৈরির কাজ চলছিল সেখানে আগুন লেগে এগুলো পুড়ে গেছে। আগুনে হাসিনার দানবীয় ফ্যাসিবাদী মুখাকৃতির মোটিফটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। শান্তির পায়রা মোটিফটিও আংশিক পুড়ে গেছে।
আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি। তবে এটি পরিকল্পিত হতে পারে বলে ধারণা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিম চারুকলায় নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল। ভোর সাড়ে চারটার দিকে মোবাইল টিম ফজরের নামাজ পড়তে বের হয়। তখন সেখানে শুধু পুলিশ উপস্থিত ছিল। এর কিছু সময় পরেই যে জায়গাতে শেখ হাসিনার মোটিফটি ছিল, সেখানে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন নেভানো হলেও শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট মোটিফটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এটা একেবারে পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সহকারী প্রক্টর আরও বলেন, ঘটনাটি ঘটার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, পুলিশের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত হন। কীভাবে আগুন লেগেছে তা দেখতে সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে।
চারুকলার এক শিক্ষার্থী বলেন, এটি নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছিল। আজকের মধ্যে এটির কাজ শেষ হয়ে যেত। এটা নিঃসন্দেহে ষড়যন্ত্র। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি কেউ ইচ্ছা করেই আগুন লাগিয়েছে। প্রশাসনের লোকজনও এর পেছনে জড়িত কি না খুঁজে বের করতে হবে। কারণ রাতে এখানে পুলিশের লোকজনও উপস্থিত ছিল।
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে সামনে রেখে এবার নববর্ষের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারকার প্রধান মোটিফ ছিল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি।’ এটির উচ্চতা ২০ ফুট। এই মোটিফে বাঁশ ও বেত দিয়ে দাঁতাল মুখের এক নারীর মুখাবয়ব বানানো হয়। মাথায় খাঁড়া চারটি শিং, হাঁ করা মুখ, বিশালাকৃতির নাক ও ভয়ার্ত দুটি চোখ।