Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএসএফের বিরুদ্ধে বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তে ভারতীয় সিমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র বিরুদ্ধে এক বাংলাদেশি নাগরিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম মো. মুরাদ মিয়া ওরফে মুন্না (৪০)।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের সেজামুড়া সীমান্তের জিরো পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে।

মুরাদ মিয়াকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মুরাদ মিয়া ওই এলাকার মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে।

নিহত মুরাদ মিয়ার স্ত্রী রত্না বেগম অভিযোগ করে বলেন, সীমান্তের কাছে আমাদের জমি আছে, যেখানে আমরা সবজি চাষ করি। সকালে আমি ওই সবজিখেতে গিয়েছিলাম। বিকেলে আমার স্বামী লিচুগাছে পানি দেওয়ার পর বললেন, তিনি জমি দেখে আসছেন। বিকেল ৫টার দিকে তাঁকে খুঁজতে গিয়ে কোথাও পাইনি। পরে একজন ফোনে জানান, বিএসএফ তাঁকে ধরে নিয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় জানানো হলেও মাগরিবের নামাজের পরও তাঁর সন্ধান পাইনি। এ সময় একটি বাচ্চা এসে জানায়, সীমান্তে তাঁকে মারধর করে ফেলে রেখেছে। পরে আহত মুরাদ তাঁর স্ত্রীকে জানান, বিএসএফ তাঁকে ডেকে নিয়ে মারধর করেছে। আহত অবস্থায় তাঁকে বিজিবি ধানখেতে রেখে দেয়।

মুরাদ মিয়ার বড় বোন আমেনা খাতুন বলেন, সন্ধ্যায় বিজিবি খবর দিলে ধানখেত থেকে আমার ভাইকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করি। পরে তাঁকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তিনি মারা যান। সীমান্ত পিলার থেকে আমাদের বাড়ি ১৫০ গজ দূরে। আমার ভাই সীমান্তে জমিতে চাষ করেন। বাজারে তাঁর ব্যবসাও ছিল। বিএসএফ আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে মারধর করে হত্যা করেছে। এ ঘটনার বিচার চাই।

২৫০ শয্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সফিউল্লাহ আরাফাত বলেন, জরুরি বিভাগে নিয়ে আসার পর আমরা সঙ্গে সঙ্গে ইসিজি করি। ইসিজি অনুযায়ী তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

তবে বিজিবি ২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, বিএসএফের জিরো লাইন অতিক্রম করার কথা নয়। তবে মুরাদ কী কারণে সীমান্তে গিয়েছিলেন বা কে তাঁকে ধরে নিয়ে মেরেছে, তা এখনো জানা যায়নি। তিনি এসে একটি গাছের নিচে বসে ছিলেন। তখন আমাদের টহল টিম তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানিয়েছিলেন, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ফিরে এসেছেন। এরপর একজনের মাধ্যমে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাকি বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করছি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

বিএসএফের বিরুদ্ধে বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ০১:১৭:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তে ভারতীয় সিমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র বিরুদ্ধে এক বাংলাদেশি নাগরিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম মো. মুরাদ মিয়া ওরফে মুন্না (৪০)।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের সেজামুড়া সীমান্তের জিরো পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে।

মুরাদ মিয়াকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মুরাদ মিয়া ওই এলাকার মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে।

নিহত মুরাদ মিয়ার স্ত্রী রত্না বেগম অভিযোগ করে বলেন, সীমান্তের কাছে আমাদের জমি আছে, যেখানে আমরা সবজি চাষ করি। সকালে আমি ওই সবজিখেতে গিয়েছিলাম। বিকেলে আমার স্বামী লিচুগাছে পানি দেওয়ার পর বললেন, তিনি জমি দেখে আসছেন। বিকেল ৫টার দিকে তাঁকে খুঁজতে গিয়ে কোথাও পাইনি। পরে একজন ফোনে জানান, বিএসএফ তাঁকে ধরে নিয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় জানানো হলেও মাগরিবের নামাজের পরও তাঁর সন্ধান পাইনি। এ সময় একটি বাচ্চা এসে জানায়, সীমান্তে তাঁকে মারধর করে ফেলে রেখেছে। পরে আহত মুরাদ তাঁর স্ত্রীকে জানান, বিএসএফ তাঁকে ডেকে নিয়ে মারধর করেছে। আহত অবস্থায় তাঁকে বিজিবি ধানখেতে রেখে দেয়।

মুরাদ মিয়ার বড় বোন আমেনা খাতুন বলেন, সন্ধ্যায় বিজিবি খবর দিলে ধানখেত থেকে আমার ভাইকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করি। পরে তাঁকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তিনি মারা যান। সীমান্ত পিলার থেকে আমাদের বাড়ি ১৫০ গজ দূরে। আমার ভাই সীমান্তে জমিতে চাষ করেন। বাজারে তাঁর ব্যবসাও ছিল। বিএসএফ আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে মারধর করে হত্যা করেছে। এ ঘটনার বিচার চাই।

২৫০ শয্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সফিউল্লাহ আরাফাত বলেন, জরুরি বিভাগে নিয়ে আসার পর আমরা সঙ্গে সঙ্গে ইসিজি করি। ইসিজি অনুযায়ী তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

তবে বিজিবি ২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, বিএসএফের জিরো লাইন অতিক্রম করার কথা নয়। তবে মুরাদ কী কারণে সীমান্তে গিয়েছিলেন বা কে তাঁকে ধরে নিয়ে মেরেছে, তা এখনো জানা যায়নি। তিনি এসে একটি গাছের নিচে বসে ছিলেন। তখন আমাদের টহল টিম তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানিয়েছিলেন, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ফিরে এসেছেন। এরপর একজনের মাধ্যমে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাকি বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করছি।