Dhaka মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাইস ঝড়ে ঝড়ে রিয়ালকে গুঁড়িয়ে দিলো আর্সেনাল

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০১:০৫:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
  • ২০২ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

প্রথমার্ধে লড়াই হয়েছিল অনেকটা সমানে-সমানেই। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে যেন খুঁজেই পাওয়া গেল না রেয়াল মাদ্রিদকে। ডেকলান রাইসের দুর্দান্ত দুই ফ্রি কিক গোলে এলোমেলো হয়ে যাওয়া ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা হারল বড় ব্যবধানে।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে বিবর্ণ রিয়ালকে ৩-০ গোলে গুঁড়িয়ে দিয়েছে মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা।

প্রায় ৫৪ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ১২টি শট নেয় আর্সেনাল, বিস্ময়করভাবে এর ১১টিই ছিল লক্ষ্যে। অন্য দিকে রিয়াল ৯ শটের কেবল তিনটি লক্ষ্যে রাখতে পারে। যোগ করা সময়ের শেষ দিকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠে ছাড়েন রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথম মিনিটেই আচমকা শটে চেষ্টা করেন কিলিয়ান এমবাপে। ৩০ গজ দূর থেকে শট লক্ষ্েযই রাখেন তিনি কিন্তু অনায়াসেই ফেরান আর্সেনাল গোলরক্ষক দাভিদ রায়া।

ষষ্ঠ মিনিটে বুকায়ো সাকার ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে উল্টো বিপদ ডেকে আনছিলেন আন্টোনিও রুডিগার। তার শট কামাভিঙ্গার গায়ে লেগে পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়! পরের মিনিটে কর্নারে গোল হজম থেকে একটুর জন্য বেঁচে যায় রিয়াল। সাকার চমৎকার ইন সুইঙ্গারে টমাস পার্টির হেড গোললাইন থেকে ফেরে আর্সেনাল সতীর্থ উইলিয়াম সালিবার মাথায় লেগে!

ত্রয়োদশ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে পার্টির গতিময় শট ঠিক মতো ধরতে পারেননি কোর্তোয়া। তবে রেয়াল গোলরক্ষকের ভাগ্য ভালো, সামনেই থাকা ডিফেন্ডার রাউল আসেন্সিওর পায়ে লেগে ফিরে আসে তার কাছেই। ২১তম মিনিটে ডি বক্সের ভেতর থেকে বাঁকানো শট একটুর জন্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ভিনিসিউস জুনিয়র।

দশ মিনিট পর দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন এমবাপে। জুড বেলিংহ্যামের রক্ষণ চেরা পাসে গোলরক্ষক রায়াকে একা পেয়েও অনেকটা তার বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। ৩৭তম মিনিটে সাকার দারুণ ক্রসে পা ছোঁয়াতে পারেননি রাইস। হাতছাড়া হয় গোলের দারুণ সুযোগ। সাত মিনিট পর দারুণ রিফ্লেক্সে ডাবল সেভে জাল অক্ষত রাখেন কোর্তোয়া। রাইসের হেড ঝাঁপিয়ে এক হাতে ঠেকিয়ে দেন মাদ্রিদ গোলরক্ষক, ফিরতি বলে গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির শট দাঁড়িয়ে ব্যর্থ করে দেন তিনি।

প্রায় ৫৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে প্রথমার্ধে গোলের জন্য পাঁচটি শট নেয় আর্সেনাল, এর চারটি ছিল লক্ষ্যে। অন্য দিকে ছয় শটের কেবল দুটি লক্ষ্েয রাখতে পারে রেয়াল।

দ্বিতীয়ার্ধে রাইসের নৈপুণ্েয এগিয়ে যায় আর্সেনাল। ৫৮তম মিনিটে দুর্দান্ত ফ্রি কিকে কাছের পোস্ট ঘেঁষে জাল খুজে নেন ইংলিশ মিডফিল্ডার। ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি বেলজিয়ান গোলরক্ষক। নয় মিনিট পর কোর্তোয়ার ডাবল সেভের মাঝে গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি আলাবা। পরের মিনিটে গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে দেন বেলিংহ্যাম, ফের গোল হজম থেকে বেঁচে যায় রেয়াল!

তবে প্রবলভাবে চেপে ধরা আর্সেনাল ৭০তম মিনিটে ঠিকই ব্যবধান বাড়ায়। আরেকটি দুর্দান্ত ফ্রি কিকে জাল খুঁজে নেন রাইস! পোস্ট ঘেঁষে যাওয়া তীব্র গতির শট ফেরানোর কোনো সুযোগই ছিল না কোর্তোয়ার।

বিপজ্জনক জায়গায় আর্সেনাল দুটি ফ্রি কিক-ই পায় সাকাকে ফাউল করায়। প্রথমবার তাকে ফাউল করেন আলাবা, পরেরবার কামাভিঙ্গা।

পাঁচ মিনিট পর রেয়ালকে একরকম স্তব্ধ করে দেন মেরিনো। ডি বক্সের মাথায় মাইলস লুইস স্কেলির কাছ থেকে বল পেয়ে পোস্ট ঘেঁষে জাল খুঁজে নেন এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। বাকি সময়ে গোলের তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারে কোনো দলই।

যোগ করা সময়ের শেষ দিকে হতাশা প্রকাশ করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন কামাভিঙ্গা। প্রথম হলুদ কার্ডের জন্য এমনিতেও আগামী ১৬ এপ্রিল সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে দ্বিতীয় লেগে খেলা হতো না তার।

২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে পৌঁছানোর কাছাকাছি চলে গেল আর্সেনাল। ১৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে রিয়ালের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে দল দুটি। কথায় আছে- বার্নাব্যুতে ৯০ মিনিট অনেক লম্বা। কার্লো আনচেলত্তির দল কি চিরন্তন পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া সেই বাক্যটা আরেকবার প্রমাণ করতে পারবে? উত্তরটা সময়ের কাছে তোলা আছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রাইস ঝড়ে ঝড়ে রিয়ালকে গুঁড়িয়ে দিলো আর্সেনাল

প্রকাশের সময় : ০১:০৫:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

প্রথমার্ধে লড়াই হয়েছিল অনেকটা সমানে-সমানেই। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে যেন খুঁজেই পাওয়া গেল না রেয়াল মাদ্রিদকে। ডেকলান রাইসের দুর্দান্ত দুই ফ্রি কিক গোলে এলোমেলো হয়ে যাওয়া ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা হারল বড় ব্যবধানে।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে বিবর্ণ রিয়ালকে ৩-০ গোলে গুঁড়িয়ে দিয়েছে মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা।

প্রায় ৫৪ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ১২টি শট নেয় আর্সেনাল, বিস্ময়করভাবে এর ১১টিই ছিল লক্ষ্যে। অন্য দিকে রিয়াল ৯ শটের কেবল তিনটি লক্ষ্যে রাখতে পারে। যোগ করা সময়ের শেষ দিকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠে ছাড়েন রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথম মিনিটেই আচমকা শটে চেষ্টা করেন কিলিয়ান এমবাপে। ৩০ গজ দূর থেকে শট লক্ষ্েযই রাখেন তিনি কিন্তু অনায়াসেই ফেরান আর্সেনাল গোলরক্ষক দাভিদ রায়া।

ষষ্ঠ মিনিটে বুকায়ো সাকার ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে উল্টো বিপদ ডেকে আনছিলেন আন্টোনিও রুডিগার। তার শট কামাভিঙ্গার গায়ে লেগে পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়! পরের মিনিটে কর্নারে গোল হজম থেকে একটুর জন্য বেঁচে যায় রিয়াল। সাকার চমৎকার ইন সুইঙ্গারে টমাস পার্টির হেড গোললাইন থেকে ফেরে আর্সেনাল সতীর্থ উইলিয়াম সালিবার মাথায় লেগে!

ত্রয়োদশ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে পার্টির গতিময় শট ঠিক মতো ধরতে পারেননি কোর্তোয়া। তবে রেয়াল গোলরক্ষকের ভাগ্য ভালো, সামনেই থাকা ডিফেন্ডার রাউল আসেন্সিওর পায়ে লেগে ফিরে আসে তার কাছেই। ২১তম মিনিটে ডি বক্সের ভেতর থেকে বাঁকানো শট একটুর জন্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ভিনিসিউস জুনিয়র।

দশ মিনিট পর দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন এমবাপে। জুড বেলিংহ্যামের রক্ষণ চেরা পাসে গোলরক্ষক রায়াকে একা পেয়েও অনেকটা তার বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। ৩৭তম মিনিটে সাকার দারুণ ক্রসে পা ছোঁয়াতে পারেননি রাইস। হাতছাড়া হয় গোলের দারুণ সুযোগ। সাত মিনিট পর দারুণ রিফ্লেক্সে ডাবল সেভে জাল অক্ষত রাখেন কোর্তোয়া। রাইসের হেড ঝাঁপিয়ে এক হাতে ঠেকিয়ে দেন মাদ্রিদ গোলরক্ষক, ফিরতি বলে গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির শট দাঁড়িয়ে ব্যর্থ করে দেন তিনি।

প্রায় ৫৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে প্রথমার্ধে গোলের জন্য পাঁচটি শট নেয় আর্সেনাল, এর চারটি ছিল লক্ষ্যে। অন্য দিকে ছয় শটের কেবল দুটি লক্ষ্েয রাখতে পারে রেয়াল।

দ্বিতীয়ার্ধে রাইসের নৈপুণ্েয এগিয়ে যায় আর্সেনাল। ৫৮তম মিনিটে দুর্দান্ত ফ্রি কিকে কাছের পোস্ট ঘেঁষে জাল খুজে নেন ইংলিশ মিডফিল্ডার। ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি বেলজিয়ান গোলরক্ষক। নয় মিনিট পর কোর্তোয়ার ডাবল সেভের মাঝে গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি আলাবা। পরের মিনিটে গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে দেন বেলিংহ্যাম, ফের গোল হজম থেকে বেঁচে যায় রেয়াল!

তবে প্রবলভাবে চেপে ধরা আর্সেনাল ৭০তম মিনিটে ঠিকই ব্যবধান বাড়ায়। আরেকটি দুর্দান্ত ফ্রি কিকে জাল খুঁজে নেন রাইস! পোস্ট ঘেঁষে যাওয়া তীব্র গতির শট ফেরানোর কোনো সুযোগই ছিল না কোর্তোয়ার।

বিপজ্জনক জায়গায় আর্সেনাল দুটি ফ্রি কিক-ই পায় সাকাকে ফাউল করায়। প্রথমবার তাকে ফাউল করেন আলাবা, পরেরবার কামাভিঙ্গা।

পাঁচ মিনিট পর রেয়ালকে একরকম স্তব্ধ করে দেন মেরিনো। ডি বক্সের মাথায় মাইলস লুইস স্কেলির কাছ থেকে বল পেয়ে পোস্ট ঘেঁষে জাল খুঁজে নেন এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। বাকি সময়ে গোলের তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারে কোনো দলই।

যোগ করা সময়ের শেষ দিকে হতাশা প্রকাশ করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন কামাভিঙ্গা। প্রথম হলুদ কার্ডের জন্য এমনিতেও আগামী ১৬ এপ্রিল সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে দ্বিতীয় লেগে খেলা হতো না তার।

২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে পৌঁছানোর কাছাকাছি চলে গেল আর্সেনাল। ১৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে রিয়ালের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে দল দুটি। কথায় আছে- বার্নাব্যুতে ৯০ মিনিট অনেক লম্বা। কার্লো আনচেলত্তির দল কি চিরন্তন পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া সেই বাক্যটা আরেকবার প্রমাণ করতে পারবে? উত্তরটা সময়ের কাছে তোলা আছে।