নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঈদকে সামনে রেখে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবাহ বাড়ছে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি মার্চের ২২ দিনে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ২৪৩ কোটি ৭৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ২৯ হাজার ৭৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ১১ কোটি ৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
রোববার (২৩ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, মার্চের প্রথম ২২ দিনে দেশে এসেছে ২৪৩ কোটি ৭৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারির একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল যথাক্রমে ১৯২ কোটি ৯৯ লাখ ডলার ও ১৪৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এ হিসাবে মার্চে প্রচুর বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
মার্চের প্রথম ২২ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫২ কোটি ৭৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯ কোটি ৯২ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৭০ কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, মার্চের ১৬ থেকে ২২ তারিখ প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৭৮ কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। ৯ থেকে ১৫ মার্চ দেশে এসেছে ৮৪ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। ২ থেকে ৮ মার্চ দেশে এসেছে ৭৮ কোটি ৪২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। আর ১ মার্চ রেমিট্যান্স এসেছে ৩ কোটি ৮০ হাজার ডলার।
তবে এ সময়ে রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৭টি। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংক। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৮ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার। অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম ৮ মাসে এক হাজার ৪৯৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে। সে হিসেবে গত অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ৩৫৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স বেশি এসেছে।
এর আগে গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে। আর এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা ৭ মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
একক মাস হিসেবে আগে কখনোই এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। এর আগে করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। সেই রেকর্ড ভেঙেছে ২০২৪ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে। ২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুলাই মাস বাদে বাকি ১১ মাসেই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।