মাগুরা জেলা প্রতিনিধি :
মাগুরায় ধর্ষণ ও নির্যাতনে মারা যাওয়া আট বছরের শিশুটির মরদেহ দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বাদ এশা শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী গ্রাম সোনাইকুন্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সোনাকুন্ডী সম্মিলিত ঈদগা ও গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে তার মরদেহ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে মাগুরায় পৌঁছায়। এদিকে শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
শিশুটির প্রথম নামাজে জানাজা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম জানাজায় বক্তব্য দেন- জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, হেফাজত নেতা মামুনুল হক, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন ও মাগুরা জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম। এ সময় শিশু আছিয়ার জানাজায় অংশ নিতে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হন।
তার গ্রামের বাড়ি মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আসিয়ার মৃত্যুর খবরে শোকের মাতম দেখা যায়। এ সময় বাড়িতে প্রতিবেশী গ্রামবাসীসহ আত্মীয়-স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এদিকে শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। জানাজার পরপরই মাগুরার নিজনান্দুয়ালী মাঠপাড়ায় অবস্থিত তার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এসময় অভিযুক্তের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুব্ধরা।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী জানান, আসামিদের রিমান্ড চলছে। আসামিরা শিশুটির বড় বোনের শ্বশুর মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামের হিটু শেখ (৪২), দুলাভাই সজীব শেখ (২২), তার বড় ভাই রাতুল শেখ ও রাতুলের মা জায়েদা খাতুন এখন পুলিশ হেফাজতে।
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামের তৃতীয় শ্রেণীর ওই শিশু কয়েক দিন আগে আপন বোনের বাড়ি সদর উপজেলার নিজনান্দুয়ালি মাঠপাড়া গ্রামে বেড়াতে আসে। আসার পর থেকেই বোনের শ্বশুর হিটু শেখের কুনজরে পড়ে শিশুটি। বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটি ঘুমিয়ে পড়লে ভোররাতে কোনো এক সময় শিশুটির গলা চেপে ধর্ষণ করে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয় বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর- আইএসপিআর জানিয়েছে।
এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আসামিদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।