Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রধান উপদেষ্টার বেঁধে দেয়া সময় এর মধ্যে ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন দেয়া হবে : সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, স্বচ্ছ ভোটার লিস্ট তৈরি করে আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য প্রধান উপদেষ্টার বেঁধে দেয়া সময় এর মধ্যে ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন দেয়া।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ে ইটিআই ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ‘রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি)’র নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক ও বিদায়ী কমিটির বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

সিইসি বলেন, আমরা জোরেশোরে প্রস্তুতি শুরু করেছি। এক্ষেত্রে সরকার থেকে ডিসেম্বর বা আগামী বছরের মধ্যে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। জুনে তো করা যাবে না। করলে হয়তো এপ্রিলে করতে হবে। তবে আমরা মিনিমাম সময় ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।

তিনি বলেন, সরকার ঐকমত্য কমিশন করেছে, যার মেয়াদ ছয় মাস। তাহলে মিনিমাম সংস্কার যদি হয়, তবে ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে হবে। আর ডিসেম্বরে করতে হলে অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। এখন ভোটার তালিকাসহ অন্যান্য প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ভোটার তালিকা যদি সুষ্ঠুভাবে না হয়, তাহলে তো আগের মতোই কবর থেকেই এসে ভোট দিয়ে যাবে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৭ লাখ মৃত ভোটারকে তালিকা থেকে কর্তন করা হয়েছে। এরাই কবর থেকে এসে ভোট দিয়েছে, গণমাধ্যমে যে খবর আসতো। এই সংখ্যা আরও বাড়বে।

রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, অনেক নাগরিক রিলিফের (ত্রাণ) আশায় ইচ্ছাকৃতভাবে রোহিঙ্গা হচ্ছেন। কাজেই এটি এক জটিল পরিস্থিতি।

তিনি বলেন, ভোটার তালিকার পাশাপাশি অন্যান্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তনে অনেক আবেদন এসেছে। আমরা এরইমধ্যে সরকারকে আইনটি সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছি। এখন সংস্কার কমিশন না হলেও তো আমাদের মিনিমাম হলেও সংস্কার করতে হতো। সেটা রাজনৈতিক দল নিবন্ধন হোক, আর সীমানা নির্ধারণ হোক, সেটা আমরা চেষ্টা করছি। আমরা সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি।

সিইসি বলেন, আগে পত্রপত্রিকায় ভালো ছাড়া খারাপ খবর আসত না। এখনো তো প্রকৃত খবর আসে। সোশ্যাল মিডিয়ার আচরণবিধি করবেন এমন বিষয় আসছে। এরইমধ্যে অনেকেই প্রচার শুরু করেছেন। তফসিলের আগে থেকেই কিন্তু হবে। চরিত্র হননও কিন্তু চলতে থাকবে। এটি যাতে না হয়, কীভাবে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা যায়, গণমাধ্যম এতে ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্য সাহায্য চাই। একটা গুজব রটিয়ে দিল, ভোট সেন্টারে যে, দুষ্টুমিকে মারামারি বা একজন আরেকজনের কলার ধরল, এটা মারা গেছে বলে চালিয়ে দিল। কাজেই এতে গণমাধ্যমের পরামর্শ ও সহায়তা চাই।

তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশন নির্বাচনের তারিখ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাবে এটি আমরা মনে করি না। একটি রাজনৈতিক ঐকমত্য হতে পারে। সুষ্ঠু নির্বাচন সবাই চায়। এই একটি পয়েন্টে পুরো জাতিই এক। সব দলের নিজস্ব দৃষ্টি আছে। এটি গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।

তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র মানে হলো ভিন্নমত, ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি, ভিন্ন চাহিদা থাকবে। যাই হোক আমাদের প্রস্তুতি থেমে থাকবে না। আগে একেক কমিশনার একেক রকম লিখতেন। আমাদের সবার চিন্তা, মানসিকতা এক। আমাদের ব্যক্তিগত এজেন্ডা নেই। অন্যের এজেন্ডাও নেই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যাওয়ার জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য কাজ করছি।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে সিইসি বলেন, প্রায় ১৭ লাখ মৃত ভোটারকে বাদ না দিলে এবং যারা ভোটার হননি তাদের বাদ দিলে স্থানীয় নির্বাচন আগে করা সম্ভব। এখন আমাদের ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হবে জুন মাসের শেষে। এখন সুষ্ঠু ভোটার করার জন্য বাড়িবাড়ি যাচ্ছি। এখন ডাটা এন্ট্রির কাজ চলছে। আমরা যথাসম্ভব ব্যবস্থা রাখছি। যাতে ভুলটা মিনিমাম হয়।

তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ সবার সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যাব। স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন তাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে জুনের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলেছে। যখন স্বচ্ছ ভোটার লিস্ট করতে পারব, তখন আমরা বলতে পারবো নির্বাচনের কথা। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী, আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিচ্ছি। রাজনৈতিক বিতর্কে আমরা জড়াতে চাই না।

রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি-আরএফইডি আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, ইটিআই মহাপরিচালকসহ আয়োজ সংগঠনের নেতারা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

প্রধান উপদেষ্টার বেঁধে দেয়া সময় এর মধ্যে ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন দেয়া হবে : সিইসি

প্রকাশের সময় : ০৩:২২:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, স্বচ্ছ ভোটার লিস্ট তৈরি করে আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য প্রধান উপদেষ্টার বেঁধে দেয়া সময় এর মধ্যে ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন দেয়া।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ে ইটিআই ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ‘রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি)’র নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক ও বিদায়ী কমিটির বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

সিইসি বলেন, আমরা জোরেশোরে প্রস্তুতি শুরু করেছি। এক্ষেত্রে সরকার থেকে ডিসেম্বর বা আগামী বছরের মধ্যে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। জুনে তো করা যাবে না। করলে হয়তো এপ্রিলে করতে হবে। তবে আমরা মিনিমাম সময় ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।

তিনি বলেন, সরকার ঐকমত্য কমিশন করেছে, যার মেয়াদ ছয় মাস। তাহলে মিনিমাম সংস্কার যদি হয়, তবে ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে হবে। আর ডিসেম্বরে করতে হলে অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। এখন ভোটার তালিকাসহ অন্যান্য প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ভোটার তালিকা যদি সুষ্ঠুভাবে না হয়, তাহলে তো আগের মতোই কবর থেকেই এসে ভোট দিয়ে যাবে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৭ লাখ মৃত ভোটারকে তালিকা থেকে কর্তন করা হয়েছে। এরাই কবর থেকে এসে ভোট দিয়েছে, গণমাধ্যমে যে খবর আসতো। এই সংখ্যা আরও বাড়বে।

রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, অনেক নাগরিক রিলিফের (ত্রাণ) আশায় ইচ্ছাকৃতভাবে রোহিঙ্গা হচ্ছেন। কাজেই এটি এক জটিল পরিস্থিতি।

তিনি বলেন, ভোটার তালিকার পাশাপাশি অন্যান্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তনে অনেক আবেদন এসেছে। আমরা এরইমধ্যে সরকারকে আইনটি সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছি। এখন সংস্কার কমিশন না হলেও তো আমাদের মিনিমাম হলেও সংস্কার করতে হতো। সেটা রাজনৈতিক দল নিবন্ধন হোক, আর সীমানা নির্ধারণ হোক, সেটা আমরা চেষ্টা করছি। আমরা সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি।

সিইসি বলেন, আগে পত্রপত্রিকায় ভালো ছাড়া খারাপ খবর আসত না। এখনো তো প্রকৃত খবর আসে। সোশ্যাল মিডিয়ার আচরণবিধি করবেন এমন বিষয় আসছে। এরইমধ্যে অনেকেই প্রচার শুরু করেছেন। তফসিলের আগে থেকেই কিন্তু হবে। চরিত্র হননও কিন্তু চলতে থাকবে। এটি যাতে না হয়, কীভাবে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা যায়, গণমাধ্যম এতে ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্য সাহায্য চাই। একটা গুজব রটিয়ে দিল, ভোট সেন্টারে যে, দুষ্টুমিকে মারামারি বা একজন আরেকজনের কলার ধরল, এটা মারা গেছে বলে চালিয়ে দিল। কাজেই এতে গণমাধ্যমের পরামর্শ ও সহায়তা চাই।

তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশন নির্বাচনের তারিখ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাবে এটি আমরা মনে করি না। একটি রাজনৈতিক ঐকমত্য হতে পারে। সুষ্ঠু নির্বাচন সবাই চায়। এই একটি পয়েন্টে পুরো জাতিই এক। সব দলের নিজস্ব দৃষ্টি আছে। এটি গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।

তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র মানে হলো ভিন্নমত, ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি, ভিন্ন চাহিদা থাকবে। যাই হোক আমাদের প্রস্তুতি থেমে থাকবে না। আগে একেক কমিশনার একেক রকম লিখতেন। আমাদের সবার চিন্তা, মানসিকতা এক। আমাদের ব্যক্তিগত এজেন্ডা নেই। অন্যের এজেন্ডাও নেই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যাওয়ার জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য কাজ করছি।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে সিইসি বলেন, প্রায় ১৭ লাখ মৃত ভোটারকে বাদ না দিলে এবং যারা ভোটার হননি তাদের বাদ দিলে স্থানীয় নির্বাচন আগে করা সম্ভব। এখন আমাদের ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হবে জুন মাসের শেষে। এখন সুষ্ঠু ভোটার করার জন্য বাড়িবাড়ি যাচ্ছি। এখন ডাটা এন্ট্রির কাজ চলছে। আমরা যথাসম্ভব ব্যবস্থা রাখছি। যাতে ভুলটা মিনিমাম হয়।

তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ সবার সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যাব। স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন তাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে জুনের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলেছে। যখন স্বচ্ছ ভোটার লিস্ট করতে পারব, তখন আমরা বলতে পারবো নির্বাচনের কথা। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী, আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিচ্ছি। রাজনৈতিক বিতর্কে আমরা জড়াতে চাই না।

রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি-আরএফইডি আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, ইটিআই মহাপরিচালকসহ আয়োজ সংগঠনের নেতারা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।