Dhaka বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুসলিম ‘গণহত্যা’র জন্য ক্ষমা চাইলেন সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

মুসলিমদের ওপর গণহত্যা চালানোর ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে দুই দশক আগে সেনাবাহিনীর ট্রাকে শ্বাসরোধে বহু মুসলিম বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি ও সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, “তক বাই গণহত্যা” নামে পরিচিত এই ঘটনার জন্য সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা এবারই সর্বপ্রথম জনসমক্ষে ক্ষমাপ্রার্থনা করলেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেই ঘটনায় সাত সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ বাদ দেওয়ার প্রায় চার মাস পরে এই ক্ষমাপ্রার্থনা সামনে এলো।

ভয়ঙ্কর এই গণহত্যাটি থাইল্যান্ডের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণতম প্রদেশে রাষ্ট্রীয় দায়মুক্তির প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশ থেকে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয়ভাবে বেশ আলাদা এই অঞ্চলের জন্য বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের জন্য সরকারি বাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘাত চলছে।

গণহত্যার সময় থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন থাকসিন সিনাওয়াত্রা। তিনি বলেছেন, তিনি এমন যে কোনও কাজের জন্য ক্ষমা চান যা মানুষকে “অস্বস্তি বোধ করতে পারে”। “ডিপ সাউথ” নামে পরিচিত এই থাইল্যান্ডের এই এলাকায় গত ১৯ বছরের মধ্যে প্রথম সফরের সময় গণহত্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলাম, তখন স্থানীয় মানুষের দিখে খেয়াল রাখাই ছিল আমার দৃঢ় উদ্দেশ্য।

তিনি আরও বলেন, যদি আমার দ্বারা কোনও ভুল বা কোনও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়ে থাকে, তাহলে আমি ক্ষমা চাইতে চাই।

থাই রাইটস গ্রুপ দুয়ে জাই-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা আঞ্চনা হেইমিনা বলেন, থাকসিন সিনাওয়াত্রা এটাই প্রথমবারের মতো ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, তিনি যদি আন্তরিক হন (ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারে), তবে তার উচিত (ক্ষমা চাওয়া ছাড়াও) পরিবারগুলোর কাছে দুঃখপ্রকাশ করা… সামনাসামনি।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২৫ অক্টোবর থাইল্যান্ডের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর তাক বাই শহরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেসময় নিরাপত্তা বাহিনী মালয়েশিয়ার সীমান্তের কাছে নারাথিওয়াত প্রদেশের তাক বাই শহরে একটি থানার বাইরে বিক্ষোভরত জনতার ওপর গুলি চালায়, এতে সাতজন নিহত হয়।

পরবর্তীতে আটককৃত ৭৮ জনকে হাত-পা বেঁধে সামরিক ট্রাকের পেছনে ঠাসাঠাসি করে নেওয়ার সময় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়। সেসময় এটি ‘তাক বাই গণহত্যা’ নামে পরিচিত হয় এবং এতে তৎকালীন সময়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মুসলিম ‘গণহত্যা’র জন্য ক্ষমা চাইলেন সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০২:৩০:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

মুসলিমদের ওপর গণহত্যা চালানোর ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে দুই দশক আগে সেনাবাহিনীর ট্রাকে শ্বাসরোধে বহু মুসলিম বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি ও সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, “তক বাই গণহত্যা” নামে পরিচিত এই ঘটনার জন্য সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা এবারই সর্বপ্রথম জনসমক্ষে ক্ষমাপ্রার্থনা করলেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেই ঘটনায় সাত সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ বাদ দেওয়ার প্রায় চার মাস পরে এই ক্ষমাপ্রার্থনা সামনে এলো।

ভয়ঙ্কর এই গণহত্যাটি থাইল্যান্ডের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণতম প্রদেশে রাষ্ট্রীয় দায়মুক্তির প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশ থেকে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয়ভাবে বেশ আলাদা এই অঞ্চলের জন্য বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের জন্য সরকারি বাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘাত চলছে।

গণহত্যার সময় থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন থাকসিন সিনাওয়াত্রা। তিনি বলেছেন, তিনি এমন যে কোনও কাজের জন্য ক্ষমা চান যা মানুষকে “অস্বস্তি বোধ করতে পারে”। “ডিপ সাউথ” নামে পরিচিত এই থাইল্যান্ডের এই এলাকায় গত ১৯ বছরের মধ্যে প্রথম সফরের সময় গণহত্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলাম, তখন স্থানীয় মানুষের দিখে খেয়াল রাখাই ছিল আমার দৃঢ় উদ্দেশ্য।

তিনি আরও বলেন, যদি আমার দ্বারা কোনও ভুল বা কোনও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়ে থাকে, তাহলে আমি ক্ষমা চাইতে চাই।

থাই রাইটস গ্রুপ দুয়ে জাই-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা আঞ্চনা হেইমিনা বলেন, থাকসিন সিনাওয়াত্রা এটাই প্রথমবারের মতো ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, তিনি যদি আন্তরিক হন (ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারে), তবে তার উচিত (ক্ষমা চাওয়া ছাড়াও) পরিবারগুলোর কাছে দুঃখপ্রকাশ করা… সামনাসামনি।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২৫ অক্টোবর থাইল্যান্ডের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর তাক বাই শহরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেসময় নিরাপত্তা বাহিনী মালয়েশিয়ার সীমান্তের কাছে নারাথিওয়াত প্রদেশের তাক বাই শহরে একটি থানার বাইরে বিক্ষোভরত জনতার ওপর গুলি চালায়, এতে সাতজন নিহত হয়।

পরবর্তীতে আটককৃত ৭৮ জনকে হাত-পা বেঁধে সামরিক ট্রাকের পেছনে ঠাসাঠাসি করে নেওয়ার সময় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়। সেসময় এটি ‘তাক বাই গণহত্যা’ নামে পরিচিত হয় এবং এতে তৎকালীন সময়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।