Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৮ এর নির্বাচনের সময় দায়িত্বে থাকা ৩৩ ডিসি ওএসডি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন ৩৩ জন কর্মকর্তা বুধবার ওএসডি হলেন। একই কারণে ১২ জন কর্মকর্তা ইতোপূর্বে ওএসডি হয়েছেন।

ওএসডি হওয়া ৩৩ কর্মকর্তা হলেন—বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মাহমুদুল আলম, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের পরিচালক (যুগ্মসচিব) হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঈনউল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এস এম আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্মসচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কাজী আবু তাহের, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মিজানুর রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মাহমুদুল কবীর মুরাদ।

এ তালিকায় আরও রয়েছেন—দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন, মিনিস্টার স্থানীয় (যুগ্ম-সচিব) কাজী এমদাদুল ইসলাম এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত যুগ্ম-সচিব এস এম মোস্তফা কামালকে ওএসডি করা হয়েছে।

এছাড়া ওএসডি হয়েছেন- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব অঞ্জন চন্দ্র পাল, পরিকল্পনা বিভাগের যুগ্ম-প্রধান (সংযুক্ত) মোছা. সুলতানা পারভীন, একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের নির্বাহী সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. শহিদুল ইসলাম, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. আলী আকবর।

আরও রয়েছেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. দাউদুল ইসলাম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. মাজেদুর রহমান খান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোপাল চন্দ্র দাশ।

মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত এসব কর্মকর্তা ২০১৮ সালে উপসচিব ছিলেন। তারা ওই বছর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় ডিসি হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৪ সালের দশম ও ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-জামায়াত ও সমমনারা বর্জন করে। তবে ২০১৮ সালে তারা ভোটে এলেও আগের রাতেই সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ী হওয়ার অভিযোগ ওঠে।

সরকারের পালাবদলের প্রেক্ষাপটে গত ৯ ডিসেম্বর দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তিনটি নির্বাচনে নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে ৩০ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ডেকেছিল নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।

তখন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছিলেন, “উনারা (কর্মকর্তারা) ওনাদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেছেন। উনারা বলেছেন উনাদের তেমন কিছু করার ছিল না। ‘কলকাঠি’ অন্য জায়গা থেকে নাড়ানো হয়েছে। এক অর্থে বলতে গেলে উনারা অসহায় ছিলেন। তবে যারা নিচের কর্মকর্তা, তারা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন। তারা মূল কথা বলেছেন আমাদের দেশ একটি ‘পুলিশি রাষ্ট্র’ হয়ে গিয়েছিল।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

১৮ এর নির্বাচনের সময় দায়িত্বে থাকা ৩৩ ডিসি ওএসডি

প্রকাশের সময় : ০৯:৩০:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন ৩৩ জন কর্মকর্তা বুধবার ওএসডি হলেন। একই কারণে ১২ জন কর্মকর্তা ইতোপূর্বে ওএসডি হয়েছেন।

ওএসডি হওয়া ৩৩ কর্মকর্তা হলেন—বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মাহমুদুল আলম, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের পরিচালক (যুগ্মসচিব) হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঈনউল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এস এম আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্মসচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কাজী আবু তাহের, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মিজানুর রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মাহমুদুল কবীর মুরাদ।

এ তালিকায় আরও রয়েছেন—দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন, মিনিস্টার স্থানীয় (যুগ্ম-সচিব) কাজী এমদাদুল ইসলাম এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত যুগ্ম-সচিব এস এম মোস্তফা কামালকে ওএসডি করা হয়েছে।

এছাড়া ওএসডি হয়েছেন- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব অঞ্জন চন্দ্র পাল, পরিকল্পনা বিভাগের যুগ্ম-প্রধান (সংযুক্ত) মোছা. সুলতানা পারভীন, একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের নির্বাহী সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. শহিদুল ইসলাম, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. আলী আকবর।

আরও রয়েছেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. দাউদুল ইসলাম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. মাজেদুর রহমান খান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোপাল চন্দ্র দাশ।

মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত এসব কর্মকর্তা ২০১৮ সালে উপসচিব ছিলেন। তারা ওই বছর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় ডিসি হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৪ সালের দশম ও ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-জামায়াত ও সমমনারা বর্জন করে। তবে ২০১৮ সালে তারা ভোটে এলেও আগের রাতেই সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ী হওয়ার অভিযোগ ওঠে।

সরকারের পালাবদলের প্রেক্ষাপটে গত ৯ ডিসেম্বর দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তিনটি নির্বাচনে নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে ৩০ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ডেকেছিল নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।

তখন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছিলেন, “উনারা (কর্মকর্তারা) ওনাদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেছেন। উনারা বলেছেন উনাদের তেমন কিছু করার ছিল না। ‘কলকাঠি’ অন্য জায়গা থেকে নাড়ানো হয়েছে। এক অর্থে বলতে গেলে উনারা অসহায় ছিলেন। তবে যারা নিচের কর্মকর্তা, তারা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন। তারা মূল কথা বলেছেন আমাদের দেশ একটি ‘পুলিশি রাষ্ট্র’ হয়ে গিয়েছিল।