Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশ হাসিনামুক্ত হয়েছে কিন্তু গণতন্ত্র ফেরেনি : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশ হাসিনামুক্ত হয়েছে কিন্তু গণতন্ত্র ফেরেনি। শেখ হাসিনা যে জঞ্জাল তৈরি করেছে তা সংস্কার করে নির্বাচন দেবে অন্তর্বর্তী সরকার, জনগণের তাই প্রত্যাশা, জনগণ যাকে খুশি তাকে নির্বাচিত করবে।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উত্তরা ১৩ নাম্বার সেক্টর খেলার মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে ‘দুস্থদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তার যে দুষ্টামি, মানুষকে ক্ষতি করা তা তিনি ছাড়েননি। দিল্লিতে বসে দলীয় কর্মীদের তিনি বলছেন: তোমরা তৈরি হও টুপ করে চলে আসব।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, পদ্মা সেতু থেকে বেগম জিয়াকে টুপ করে ফেলে দিতে চেয়েছিল, ঠিক সেভাবে টুপ করে চলে আসতে চান শেখ হাসিনা। একটা কথা মনে রাখতে হবে তাকে, মানুষ ভুলবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, কেমন মহিলা (হাসিনা), তার মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই, এতগুলো মানুষ হত্যা করল। কতটা ভয়াবহভাবে তিনি জাতির ওপর চেপে বসেছিলেন।

তিনি বলেন, ১৫ বছর ধরে আমরা লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি। এই ১৫ বছরে আমাদের বহু লোক মারা গেছে। জুলাই আন্দোলনে আমাদের ৪২৬ জন ছাত্র, নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। আমরা আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) কাছে যেটা চাই, নিরপেক্ষ থাকবেন। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকবেন। নির্বাচন এই দেশে অবশ্যই হবে, এই নির্বাচনটি হতে হবে সবসময় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে। আমরা চাইবো, অন্তর্র্বতী সরকার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থেকে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন।

ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করতে চায়, আমাদের এতটুকু আপত্তি নাই বরং আনন্দিত মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্ররা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবে, রাজনীতিতে আসবে আমরা তাদের স্বাগত জানাবো। তারা তাদের নতুন চিন্তাভাবনা দিয়ে মানুষের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করবে কিন্তু সরকারে থেকে যদি দল গঠন করেন এই দেশের মানুষ সেটা মেনে নেবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা দল করবেন, দল করেন, আমরা আপনাদের স্বাগত জানাবো, সহযোগীতা করবো, আপনাদের কাধে কাধ মিলিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য কাজ করে যাবো। শুধু আপনাদের এই অনুরোধটুকু জানাবো, আপনারা অযথা সংঘাতমূলক কোন কথাবার্তা রাজনীতির মধ্যে না আনাই ভাল হবে, আমরা এটা আশা করি।

শেখ হাসিনা আমাদের বুকে পাথরের মত বসে ছিলো উল্লেখ করে তিনি বলন, আজকে সে গেছে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কথা বলতে পারছি। আজকে আমরা হাসিনা মুক্ত হয়েছি, কিন্তু আমাদের যে লক্ষ একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে যাওয়া, এখন পর্যন্ত কিন্তু আমরা সে গণতন্ত্রে ফিরে যেতে পারি নাই।

অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা সরকার একটি দিয়েছি, সে সরকার হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার, তাদেরকে দায়িত্ব সুস্পষ্ট করে বলা আছে, এইযে এত জঞ্জাল সৃষ্টি করেছে হাসিনা, দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে, প্রশাসনকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে, এইগুলোকে ন্যুনতম ঠিক করে, সংস্কার করে নির্বাচন দিবে তারা। সে নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে, জনগণ যাদের চাইবে তাদের ক্ষমতায় নিয়ে আসবে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ থাকার অনুরোধ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ড. ইউনূসের সরকারকে নির্বাচন দিতে হবে, যেন জনগণ তার অধিকার ফিরে পেতে পারে। নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীন। সরকার নিরপেক্ষ থাকবে বলেই প্রত্যাশা করি।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে, বিদ্যুতের দাম বেড়েছে, এর জন্য শুধু ব্যবসায়ীরা দায়ী তা না, বিগত সরকারের দুর্নীতিও দায়ী।

বিএনপি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) যৌথবাহিনীর হাতে নির্যাতনে যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, বিএনপি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখতে চায় না। বিএনপি বাংলাদেশে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার দেখতে চায়।

 

আবহাওয়া

বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ৮ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

দেশ হাসিনামুক্ত হয়েছে কিন্তু গণতন্ত্র ফেরেনি : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৬:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশ হাসিনামুক্ত হয়েছে কিন্তু গণতন্ত্র ফেরেনি। শেখ হাসিনা যে জঞ্জাল তৈরি করেছে তা সংস্কার করে নির্বাচন দেবে অন্তর্বর্তী সরকার, জনগণের তাই প্রত্যাশা, জনগণ যাকে খুশি তাকে নির্বাচিত করবে।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উত্তরা ১৩ নাম্বার সেক্টর খেলার মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে ‘দুস্থদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তার যে দুষ্টামি, মানুষকে ক্ষতি করা তা তিনি ছাড়েননি। দিল্লিতে বসে দলীয় কর্মীদের তিনি বলছেন: তোমরা তৈরি হও টুপ করে চলে আসব।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, পদ্মা সেতু থেকে বেগম জিয়াকে টুপ করে ফেলে দিতে চেয়েছিল, ঠিক সেভাবে টুপ করে চলে আসতে চান শেখ হাসিনা। একটা কথা মনে রাখতে হবে তাকে, মানুষ ভুলবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, কেমন মহিলা (হাসিনা), তার মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই, এতগুলো মানুষ হত্যা করল। কতটা ভয়াবহভাবে তিনি জাতির ওপর চেপে বসেছিলেন।

তিনি বলেন, ১৫ বছর ধরে আমরা লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি। এই ১৫ বছরে আমাদের বহু লোক মারা গেছে। জুলাই আন্দোলনে আমাদের ৪২৬ জন ছাত্র, নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। আমরা আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) কাছে যেটা চাই, নিরপেক্ষ থাকবেন। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকবেন। নির্বাচন এই দেশে অবশ্যই হবে, এই নির্বাচনটি হতে হবে সবসময় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে। আমরা চাইবো, অন্তর্র্বতী সরকার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থেকে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন।

ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করতে চায়, আমাদের এতটুকু আপত্তি নাই বরং আনন্দিত মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্ররা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবে, রাজনীতিতে আসবে আমরা তাদের স্বাগত জানাবো। তারা তাদের নতুন চিন্তাভাবনা দিয়ে মানুষের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করবে কিন্তু সরকারে থেকে যদি দল গঠন করেন এই দেশের মানুষ সেটা মেনে নেবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা দল করবেন, দল করেন, আমরা আপনাদের স্বাগত জানাবো, সহযোগীতা করবো, আপনাদের কাধে কাধ মিলিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য কাজ করে যাবো। শুধু আপনাদের এই অনুরোধটুকু জানাবো, আপনারা অযথা সংঘাতমূলক কোন কথাবার্তা রাজনীতির মধ্যে না আনাই ভাল হবে, আমরা এটা আশা করি।

শেখ হাসিনা আমাদের বুকে পাথরের মত বসে ছিলো উল্লেখ করে তিনি বলন, আজকে সে গেছে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কথা বলতে পারছি। আজকে আমরা হাসিনা মুক্ত হয়েছি, কিন্তু আমাদের যে লক্ষ একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে যাওয়া, এখন পর্যন্ত কিন্তু আমরা সে গণতন্ত্রে ফিরে যেতে পারি নাই।

অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা সরকার একটি দিয়েছি, সে সরকার হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার, তাদেরকে দায়িত্ব সুস্পষ্ট করে বলা আছে, এইযে এত জঞ্জাল সৃষ্টি করেছে হাসিনা, দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে, প্রশাসনকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে, এইগুলোকে ন্যুনতম ঠিক করে, সংস্কার করে নির্বাচন দিবে তারা। সে নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে, জনগণ যাদের চাইবে তাদের ক্ষমতায় নিয়ে আসবে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ থাকার অনুরোধ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ড. ইউনূসের সরকারকে নির্বাচন দিতে হবে, যেন জনগণ তার অধিকার ফিরে পেতে পারে। নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীন। সরকার নিরপেক্ষ থাকবে বলেই প্রত্যাশা করি।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে, বিদ্যুতের দাম বেড়েছে, এর জন্য শুধু ব্যবসায়ীরা দায়ী তা না, বিগত সরকারের দুর্নীতিও দায়ী।

বিএনপি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) যৌথবাহিনীর হাতে নির্যাতনে যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, বিএনপি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখতে চায় না। বিএনপি বাংলাদেশে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার দেখতে চায়।