স্পোর্টস ডেস্ক :
দুর্বার রাজশাহীর দূর্ভাগ্য যেন পিছুই ছাড়ছে না। অধিনায়ক বদলেও ভাগ্য বদলালো না রাজশাহীর। চিটাগং কিংসের কাছে ১১১ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে তাসকিন আহমেদের দল।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) আগে ব্যাট করতে নেমে রাজশাহীকে ১৯২ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল চিটাগং কিংস। ৪ বল হাতে থাকতেই ৮০ রানে অলআউট হয় রাজশাহী। এতে ১১১ রানের বড় জয় পায় চিটাগং।
১৯২ রানের লক্ষ্যে মোহাম্মদ হারিস ও জিসান আলমের ব্যাট থেকে ঝোড়ো শুরুর প্রত্যাশায় থাকা রাজশাহীর সমর্থকরা প্রথম ওভারেই হতাশ হয়েছেন। চিটাগংয়ের শ্রীলঙ্কান পেসার বিনুরা ফার্নান্দোর প্রথম ওভারের শেষ বলে মাত্র ৪ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জিসান আলম।
প্রথম ওভারেই দুবার জীবন পাওয়া মোহাম্মদ হারিস দ্বিতীয় ওভারে ফিরেছেন আরাফাত সানির স্পিনে। বাঁহাতি এই স্পিনারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৩০ গজের ভেতরেই উসমান খানের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ হারিস।
দলীয় ১৩ রানে ২ উইকেট হারানো রাজশাহী যেন প্রতি ওভারে আসা-যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছিল। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে শরীফুল ইসলামের বলে রাজশাহীর ফর্মে থাকা ইয়াসির রাব্বি বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মাত্র ৫ রান করে।
৩ ওভারের ভেতর ২০ রানে ৩ উইকেট হারানো রাজশাহী তখনই ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিল। এরপর মাঝ ওভারে সদ্য সাবেক অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় চেষ্টা করেছেন আকবর আলীকে নিয়ে ‘চাপ’ কাটিয়ে ওঠার, কিন্তু পারেননি।
পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৮ রান তোলা রাজশাহী ইনিংসের সপ্তম ওভারেই আরও এক উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে। ক্রিজে নামার পর থেকেই ধুঁকতে থাকা আকবর আলী ১৩ বলে ১০ রান করে শরীফুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন।
দলীয় ৪০ রানে ৪ উইকেট হারানো রাজশাহীর হার যেন সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল। মরার ওপর খাঁড়ার ঘা, রাজশাহীর মিডল অর্ডার ও ডেথ ওভারের স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান রায়ান বার্ল ফিল্ডিংয়ের সময় চোটে পড়ায় আর ব্যাট করতে নামেননি।
নবম ওভারে এনামুল হক বিজয় ২১ রান করে ফিরে গেলে রাজশাহী পুরো ২০ ওভার খেলার আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে। ধারবাহিক বিরতিতে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসা রাজশাহী দশম ওভারে তাঁদের শেষ ব্যাটসম্যান মার্ক দায়ালকেও হারায়। ৬৬ রানে ৬ উইকেট হারানো রাজশাহী এরপর হারের ব্যবধান তেমন কমিয়ে আনতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ১৫তম ওভারে মাত্র ৮০ রানে নবম উইকেট হারানোর মাধ্যমে থেমে যায় দুর্বার রাজশাহীর ইনিংস।
চিটাগং কিংসের হয়ে শরিফুল ইসলাম ও নাঈম ইসলাম দুটি করে উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়াও ফার্নান্দো, আরাফাত সানি, খালেদ আহমেদ, রাহাতুল ফেরদাউস ও শামীম হোসেন একটি উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগকিতদের। ৪ বলে ৭ রান করে শুরুতেই আউট হন উসমান খান। তবে গ্রাহাম ক্লার্ককে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন আরেক ওপেনার নাঈম ইসলাম।
দুজনের ব্যাটে ভর করে পাওয়ার প্লেতে ৪৩ রান তুলতে পারে চিটাগং। ২৮ বলে ৪৫ রান করে গ্রাহাম আউট হলেও ৩৬ বলে ফিফটি তুলে নেন নাঈম। এর পর পিচে থাকতে পারেননি তিনি। ৪১ বলে ৫৬ রান করেন এই ডান হাতি ওপেনার।
এরপর পিচে এসে ব্যাট চালাতে থাকেন মিথুন। তবে ২০ বলে ৩২ রান করে চিটাগং অধিনায়ক আউট হলে ছন্দ হারায় দল। এরপর শামীম (৫) রান এবং ৮ বলে ১৬ রান করেন রাহাতুল ফেরদৌস।
তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে রান তুলতে থাকেন হায়দার আলী। এই পাকিস্তানি ব্যাটারের ১৪ বলের ২৫ রানে ভর করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৯১ রানের বড় পুঁজি পেয়েছিল চিটাগং কিংস।
তাসকিন আহমেদ ২৩ রানে নেন ২টি উইকেট। মোহর শেখ ২ উইকেট পেলেও খরচ করে ফেলেন ৪৬ রান।